আমার সিলেট ডেস্ক: জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া ও চীন আমেরিকার উত্থাপিত একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যেখানে গাজা উপত্যকার ওপর ইসরাইলের চলমান গণহত্যাকে ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার’ বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
গাজার নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদিবাদীদের গত ১৯ দিনের গণহত্যায় কম করে ৬,৫০০ মানুষ নিহত হয়েছে যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে স্থানীয় সময় গতকাল (বুধবার) ওই প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এতে সংযুক্ত আরব আমিরাতও প্রস্তাবটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১০ দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দেয় এবং ব্রাজিল ও মোজাম্বিক ভোটদানে বিরত থাকে।
ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরাইলের পাশবিক অত্যাচার, জবরদখল, নির্বিচার হত্যাকাণ্ডকে পশ্চিমা দেশগুলোর সরকার ও গণমাধ্যমগুলো ইসরাইলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ বলে প্রচার চালিয়ে আসছে। এবার মার্কিন সরকার সেই দাবিকে আইনি বৈধতা দিতে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব তুলেছিল যা রাশিয়া ও চীনের কারণে আপাতত ব্যর্থ হয়ে গেল।
এদিকে বুধবারই গাজায় মানবিক ত্রাণ পাঠানোর জন্য যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এবং গাজাবাসীকে জোর করে স্থানচ্যুত করার ইসরাইলি নির্দেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেয়ার দাবি জানিয়ে রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল। কিন্তু প্রস্তাবটি আমেরিকা ও ব্রিটেনের ভেটোর কারণে পাস হতে পারেনি। রাশিয়া, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও গ্যাবন প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছিল এবং নয়টি দেশ ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি।
নিরাপত্তা পরিষদে যেকোনো প্রস্তাব পাস হওয়ার জন্য এর পক্ষে নয়টি ভোট পড়তে হয়; সেইসঙ্গে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া কিংবা চীনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবটি ভেটোমুক্ত থাকতে হয়।
অন্যদিকে বুধবারই রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা পশ্চিমা দেশগুলোর তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, গাজা উপত্যকার কয়েক হাজার শিশু নিহত হওয়ার পরও সেখানে একটি যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার পক্ষে পশ্চিমা দেশগুলো ভোট দেয়নি যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আর কতো শিশুর রক্ত ঝরলে পাশ্চাত্য গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় রাজি হবে- এমন প্রশ্নও তোলেন জাখারোভা।
গাজা উপত্যকায় গত ৭ অক্টোবর থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের চালানো নিরবচ্ছিন্ন ও পাশবিক বিমান হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৬,৫৪৬ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন যাদের মধ্যে ২,৭০৪টি শিশু রয়েছে।পার্সটুডে