নড়াইলে ডাঃ জি.এম নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ভুল অস্ত্রোপচারে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

0
45
নড়াইলে ডাঃ জি.এম নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ভুল অস্ত্রোপচারে প্রসূতির মৃত্যুর অভিউযোগ

নড়াইল প্রতিনিধি: cনড়াইলে ভুল অস্ত্রোপচারে আসমা খানম (২০) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে সদর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাঃ জি.এম নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। অনাকাংখিত এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে নড়াইল শহরের পপুলার সার্জারী এন্ড নার্সিং হাসপাতালে। এদিকে এ ডাক্তরের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর হাসপাতালের যে কোন সার্জারীর রোগীদের তার পছন্দের ক্লিনিকে পাঠিয়ে দিয়ে সেই ক্লিনিকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সার্জরী করারও অভিযোগ রয়েছে।
নিহত আসমা খানম কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ি ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের আলাল শেখের মেয়ে।

জানা গেছে, আসমা খানম গত ২৮মে (মঙ্গলবার) সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য নড়াইল শহরের পপুলার সার্জারী এন্ড নার্সিং হাসপাতালে ভর্তি হন। ঐ দিন দুপরে নড়াইল সদর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাঃ জি.এম নুরুজ্জামান তাকে সিজারিয়ান অপারেশন করে পূত্র সন্তনের জন্ম দেন। কিন্তু বেডে দেওয়ার আধা ঘন্টা পর থেকে ব্লিডিং শুরু হয়। এর এক ঘন্টা পর ডাক্তার নুরুজ্জমান আবারও রোগীর অপারেশন করেন। তারপর রোগীকে বেডে দেয়া হলেও রোগীর ব্লিডিং বন্ধ না হয়ে। আস্তে আস্তে আরও বেড়ে যায়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বজনরা ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা আইসিইতে ভর্তির পরামর্শ দিলেও আইসিইউ ফাঁকা না থাকায় ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল,কাকরাইল শাখায় ভর্তি করা হয় এবং পরদিন সকাল থেকে তাকে লাইফ সার্পোটে নেয়া হয়। রোগীর পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় শনিবার (১লা জুন) রোগীকে মুগদা হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে। আসমার ২০ মাস বয়সের একটি ছেলে সন্তান আছে। এটি ছিলো তার দ্বিতীয় বাচ্চার সিজার। ভুল অস্ত্রোপচারে আসমার মৃত্যু। স্বজনদের হাহাকার এখন এই বাচ্চাদের কিভাবে লালন-পালন করবে?

নিহত আসমার বোন হুসনা খানম বলেন, ‘নড়াইলের সদর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাঃ জি.এম নুরুজ্জামান আমার বোনের দ্বিতীয় বার অপারেশন করলেও প্রথমে আমাদের কিছুই জানাননি। পরে ডাক্তার জানিয়েছেন,রোগির জরায়ুতে টিউমার ছিল। তাই ব্লিডিং বন্ধ করতে অপারেশন করেছেন। রোগীর মাংসের ভিতর দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ দিয়ে রক্ত ছেড়ে দিচ্ছিল। ঢাকার চিকিৎসকরা বলেছেন ‘আপনারাতো রোগিকে মেরেই নিয়ে এসেছেন।’

আসমার বাবা আলাল শেখ বলেন, তার মেয়েকে নড়াইল থেকে ৪ ব্যাগ এবং ঢাকায় ৩০ ব্যাগ রক্ত দেয়া লেগেছে। আমরা অত্যন্ত গরীব মানুষ, কৃষি কাজ করি। ধার দেনা করে প্রায় ৫ লাখ টাকা খরচ করেও মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না। ডাঃ জি.এম নুরুজ্জামানের ভুল অপারেশনে আমার মেয়ের মত এভাবে যেন আর কোন মেয়ে মারা না যায়। কেউ যাতে এভাবে আর ভোগান্তিতে না পড়ে।

ভুল অস্ত্রোপচারে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সদর হাসপাতালের (সার্জারি বিশেষজ্ঞ) ডাঃ জি.এম নুরুজ্জামান বলেন,‘প্রসূতির অপারেশনে কোথাও ভুল ছিল না। রোগির অবস্থা একেবারে খারাপ ছিল না। সে হেটে চলে ফিরে বেড়াচ্ছিল। রোগির স্বজনরাই জোর করে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে নিয়ে গেছে বলে জানান।’

এ বিষয়ে নড়াইলের সিভিল সার্জন ডাঃ সাজেদা বেগম পলিন বলেন,বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।