চুনারুঘাট আমুরোড হাইস্কুল এন্ড কলেজে পিঠা উৎসব

    0
    286

    চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি: কথায় বলে পৌষপার্বণের পিঠা উৎসব। এ উৎসব একান্তভাবেই বাঙালির উৎসব। শীত-গ্রীষ্মের সকালগুলো মুখর ও আনন্দময় হয়ে ওঠে নানা রকম পিঠার অনন্য স্বাদে। কিন্তু বর্তমানে নানা ধরণের ফাস্ট ফুডের জোয়ারে আমরা গ্রাম বাংলার পিঠার কথা ভুলতেই বসেছি। সে বিস্মৃতপ্রায় ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে দেশে এখন নানা ধরনের পিঠা উৎসব হয়। এরই অংশ হিসেবে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠা আমুরোড হাই স্কুল এন্ড কলেজে হয়ে গেল শীতের পিঠা উৎসব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। (৩১ জানুয়ারী) বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত পিঠা উৎসবে ছিল দর্শকদের উপচে পড়া ভীড়।

    শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের যৌথ উদ্যোগে এই জমকালো অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের সভাপতি, স্কুল এন্ড কলেজ গভার্ণিং বডির সভাপতি ও আহম্মদাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবেদ হাসনাত চৌধুরী সনজু। স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আলাউদ্দিন এর পরিচালনায় অনুষ্টিত পিঠা উৎসবের পিতা কেটে শুভ উদ্বোধনী ঘোষনা করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মঈন উদ্দিন ইকবাল। পরে স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গনে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মাসুদ রানা, উপজেলা আওয়ামীলীগ তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ হাছন আলী, উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুজিবুর রহমান ও পিঠা উৎসব উপ কমিটির সভাপতি, সহকারী প্রধান শিক্ষক আবু মোঃ জাকারিয়া প্রমূখ।

    পিঠা উৎসবে প্রাক্তন ও নবাগত ছাত্র-ছাত্রীদের মিলনমেলার এক অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। ছোট বেলার পিঠাপুলির কথা স্মরণ করেন শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীসহ অনেকে। মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় দুপুর ২টায়। পুরো বিদ্যালয় জুড়ে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছিল। স্টলগুলো সাজানো হয়েছিল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী অরেক রকমের পুষ্প দিয়ে। স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে দর্শকদের ছিল উপচে পড়া ভীড়। স্টলে স্টলে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিগন, বিচারক ও অভিভাবকবৃন্দরা ঘুরে ঘুরে দেখেন নানা রকম পিঠার কারু কাজ। বিদ্যালয়ে ১৮টি স্টল বসেছিল এ পিঠা উৎসব মেলায়। পরে প্রধান অতিথি সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দরা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের নাম ঘোষণা করেন ও বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

    প্রথম স্থান অধিকারী বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর (গ-শাখার) ১১নং স্টল “বঙ্গবন্ধু পিঠা ঘর”, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ৯ম শ্রেণীর (ক শাখার) ১০নং স্টল “জাতির পিতা স্পেশাল পিঠা ঘর” ও তৃতীয় স্থান অধিকারী একাদশ শ্রেণীর ২নং স্টল “শেখ হাসিনা স্টল)। অতিথি ও বিচারকরা এই পিঠা উৎসবের নানা দিক নিয়ে প্রশ্ন করেন। জানতে চান পিঠার নাম, তৈরির রেসিপি।

    উল্লেখযোগ্য পিঠার মধ্যে ছিল দুধপুলি পিঠা, পুলি পিঠা, পাঠি সাপটা, জামাই পিঠা, বেনি পিঠা, পাকান পিঠা, ভাপা পিঠা, কমলা সুন্দরী, তালের বড়া, নকঁশী পিঠা, সেমাই পুলি পিঠা, রস পিঠা, সবজি পাকান, শামুক পিঠা, ডিম পিঠা, ক্ষীর পুলি পিঠা, দুধ চিতই পিঠা, সুজি পিঠা, ডিমসুন্দরী পিঠা, ঝাল পিঠা ডাল পিঠা, নারিকেল পুলি পিঠাসহ নাম না জানা ২৫ থেকে ৩০ রকমের পিঠার আয়োজন করে শিক্ষার্থীরা।