আমার সিলেট ডেস্ক: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।বৃহস্পতিবার) রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে ওসমান হাদির ভাই ওমর হাদি এ তথ্য সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে লেখা হয়েছে, “ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।” এছাড়া ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার ভেরিফায়েড পেজে লিখেছেন, “আমাদের ভাই হাদী রওনা দিয়েছেন অনন্তের পথে। আবরার, আবু সাঈদদের মতো হাদি না থেকেও আরো বেশি করে থাকবেন বাংলাদেশের বুকে।”
অপরদিকে এ ঘটনায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং একদিনের
রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন।না তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা জানান, আগামী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে।
হাদির মৃত্যুর ঘটনায় সবাইকে ধৈর্য ও সংযমের আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ওসমান হাদির স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের দায়িত্বে নেবে রাষ্ট্র।
এর আগে গতকাল বুধবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছিল, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। সেই ঘোষণার পর থেকে তাঁর জীবন নিয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কা বাড়তে থাকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসংখ্য মানুষ তার জন্য দোয়া ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পর হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে একটি অপারেশন করা হয়। এরপর নেওয়া হয় এভারকেয়ার হাসপাতালে। সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার নেওয়া হয় সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে।
ঢাকা-৮ আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার এক মাস আগেই হত্যার হুমকি পাওয়ার কথা প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন। গত নভেম্বরে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছিলেন, দেশি-বিদেশি অন্তত ৩০টি নম্বর থেকে তাঁকে ফোন ও মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই পোস্টে তিনি লেখেন, আওয়ামী লীগের ‘খুনি’ সমর্থকেরা তাঁকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখছে। তবে জীবননাশের আশঙ্কা সত্ত্বেও ‘ইনসাফের লড়াই’ থেকে পিছিয়ে যাবেন না।
উল্লেখ্য আগামীকাল তার মৃতদেহ বাংলাদেশে নিয়ে আসবেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
