একনাম কীর্ত্তনীয়ার অতুল প্রসাদ’র বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

    0
    289
    বিশেষ প্রতিবেদক: বাংলাদেশ শ্রীশ্রী হরিনাম কীর্ত্তনীয়া সোসাইটির চট্টগ্রাম জোনাল অফিসের অন্তর্ভুক্তি একনাম কীর্ত্তনীয়া দল জয় রাম সম্প্রদায় নাসিরপুর, নাসিরনগর, বি-বাড়িয়া জেলার মালিক অতুল প্রসাদ সাহার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
    পাওয়া তথ্য মতে, একনাম কীর্ত্তনীয়া দলগুলি ৮ মাসের জন্য সিজন কন্টাক্ট শিল্পী ঠিক করে মালিকগণ ১১ জন শিল্পী নিয়ে কার্ত্তিক মাস থেকে শুরু করে জ্যেষ্ঠ মাসের শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন স্হানে কীর্ত্তন পরিবেশন করেন ধর্মীয় মন্দিরগুলোতে। জয় রাম সম্প্রদায় মালিক অতুল প্রসাদ সাহা ৮ মাস কীর্ত্তনের সিজন কন্টাক্ট শিল্পী ঠিক করার আগ মুহুর্তে শিল্পীদের আত্মার আত্মীয় হয়ে উঠেন। মায়াবী চলনার ভালবাসা দেখিয়ে সিজন ভূক্ত শিল্পী ঠিক করে সিজনের ৩-৪ মাস পরেই জয় রাম সম্প্রদায় মালিক অতুল প্রসাদ সাহা আসল রূপ বেড়িয়ে আসে।
    অসহায় শিল্পীরা পরিশ্রমের টাকা চাইলে মায়াবী কথা বলে আজ নতুবা কাল, কাল নতুবা পরশু, এমনকি শিল্পীরা পরিশ্রমের টাকার জন্য চাপ দিলে বা ছুটি চাইলে অশালীন আচারণ, অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে থাকেন। কোন শিল্পীরা ছুটি ও পরিশ্রমের টাকা না চাইলেই শিল্পীরা ভাল। বাংলাদেশ শ্রীশ্রী হরিনাম কীর্ত্তনীয়া সোসাইটির নিয়ম অনুযায়ী ৮ মাস সিজনভূক্ত শিল্পীরা প্রতিমাসে ৩ দিনের ছুটি রয়েছে। সর্বমোট ছুটি ২৪ দিন। সারা সিজনে পাওনা ছুটিই শিল্পীরা পান না ছুটি পেলেও শিল্পীদের কাছ থেকে পাওনা ছুটির পরিশ্রমের টাকা গুণেগুণে হিসাব করে কেটে নেওয়া হয়।
    গাঁজা তৈরিতে ব্যাস্ত

    নাম না প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিল্পী জানান, জয় রাম সম্প্রদায় মালিক অতুল প্রসাদ সাহা প্রতি সিজনে সিজনভূক্ত শিল্পীদের কাছ থেকে পরিশ্রমের টাকা ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩০-৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। সিজন শেষে অনেক শিল্পীদের মিষ্টিমুখে কথা বলে বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে পাওনা টাকা পাঠাবেন। ভূক্তভোগী শিল্পীরা পরিশ্রমের টাকার জন্য যোগাযোগ করলে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে শান্তনা দিয়ে থাকে। এমনকি যোগাযোগ পর্যন্ত করতে চায় না। সিজনের পর সিজন চলে যায় পাওনা দারের টাকার কোন হিসাবেই থাকে না। বরং পাওনা টাকা চাইলে অশালীন আচারণ করে থাকেন। বাংলাদেশ শ্রীশ্রী হরিনাম কীর্ত্তনীয়া সোসাইটির নিকট ভূক্তভোগী শিল্পীরা বিচার প্রার্থী হলে সব মালিকপক্ষ এক হয়ে যায়। তখন উল্টো দোষ ভূক্তভোগী শিল্পীর। সমিতির দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বিচার পেলেও ঘুষের টাকা দিয়েই চলে যায় মূল পরিশ্রমের টাকা।

    সমকামিতায় লিপ্ত দুজন

    বেশ কিছু উৎসব অঙ্গন থেকে এ তথ্য পাওয়া, অনেক উৎসব কমিটির নিকট থেকে একনাম কীর্ত্তনীয়া দলের জন্য কন্টাক্ট নেয়। কন্টাক্ট টাকা নিয়ে উৎসব কমিটির সদস্যদের কীর্ত্তনীয়া দলের নাম দেয় একটি দল যায় অন্যটি। অগ্রিম টাকা নিয়ে উৎসব কমিটি দলের নাম দিতে চায় না। শেষ মুহুর্তে মূলত তিনি দল ঠিক না করেই দলের নাম দিয়ে দেন। দল দিলেও অনেক উৎসব অঙ্গনে দল পৌঁছায় না। তখন উৎসব কমিটির সদস্যরা যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি যোগাযোগের মাধ্যম থেকে দূরে সরে থাকেন। যে কারণ উৎসব কমিটির সদস্যরা মারাত্মকক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

    অনৈতিক কাজে লিপ্ত

    উৎসব কমিটি টাকা দিলে এক রকম তিনি আলাদা ফান্ড করে প্রতি দল থেকে ৫ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা দালালী করে বেশি নেন। এমনকি তিনি এক সাথে ৪-৫ টি উৎসব কমিটির নিকট থেকে একনাম কীর্ত্তনীয়া দলের জন্য কন্টাক্ট নেন একই দিনে। যে কমিটি টাকা দেয় বেশি সেখানেই জয় রাম সম্প্রদায় পৌছাবে। বাকি উৎসব অঙ্গনে অন্য দল ঠিক করে হারমোনিয়ামে জয় রাম সম্প্রদায়ের নামের ব্যানার লাগিয়ে কীর্ত্তন পরিবেশন করে থাকে। সব কীর্ত্তনীয়া দলগুলিই এরকম করে থাকেন। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন উৎসব কমিটিরা।

    সরেজমিনে পাওয়া, জয় রাম সম্প্রদায় মালিক অতুল প্রসাদ সাহা বিভিন্ন স্থানে কীর্ত্তন পরিবেশন করতে গিয়ে ধর্ম আত্মীয় করে সুন্দরী রমনীদের সাথে আপত্তীকর কার্যকলাপ চালিয়ে যায়। নিজ দলের শিল্পী সহ অন্য দলের মালিক ও শিল্পী নিয়ে দিনরাত জুয়া খেলা, গাঁজা, মদ সেবন ও বিক্রয় করা সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।
    জুয়া খেলায় রত

    এ বিষয়ে আমাদের টিম সরাসরি অতুল প্রসাদ সাহার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি টিমের সাথে অশ্লীল আচরণ করতে থাকেন এবং হুমকি-ধামকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি সাংবাদিকদের সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে  বলেন,”আপনারা যা পারেন তা করেন আমি ভয় পাই না। বাংলাদেশ শ্রীশ্রী হরিনাম কীর্ত্তনীয়া সোসাইটির চট্টগ্রাম জোনাল অফিসের আমি ১৪ জনের মাঝে একজন। আমাদের সোসাইটির ফান্ডে ২৫ লক্ষ টাকা রয়েছে।” তিনি টাকার বাহাদুরী দেখিয়ে সাংবাদিকদের সাথে এমন কথাবার্তা বলেছেন।

    বাংলাদেশ শ্রীশ্রী হরিনাম কীর্ত্তনীয়া সোসাইটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় শাখার সভাপতি শ্রীশ্রী অচ্যুতান্দ সম্প্রদায়ের মালিক ডাঃ তেজেন্দ্র লাল সুশীল ও সাধারণ সম্পাদক শ্রীশ্রী মহিমান্দ সম্প্রদায়ের মালিক মাস্টার মিলন দেবনাথ কে এবিষয় জানানো হলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি নয়।
    অনুসন্ধানে পাওয়া, সভাপতি ডাঃ তেজেন্দ্র লাল সুশীল ও সাধারণ সম্পাদক মিলন মাস্টার সহ সোসাইটির সকল সদস্যরা সবাই একজোট হয়ে এক সাথে বসে দেশী বিদেশী মদ, গাজাঁ সেবন সহ অফিসে বসে বিভিন্ন দল, উৎসব কমিটির নিকট হতে দালালী করে মোটা অংকের টাকা আদায় করছেন বলে ও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
    তাছাড়াও বাংলাদেশ শ্রীশ্রী হরিনাম কীর্ত্তনীয়া সোসাইটি যার গভঃ রেজিঃ নং সি ৬৩৫৬(৬০১) কেন্দ্রীয় কমিটি সহ বিভাগীয় শাখাগুলি ঘুষ-বানিজ্য সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। বাংলাদেশ শ্রীশ্রী হরিনাম কীর্ত্তনীয়া সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটি সহ বিভাগীয় শাখার বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তি প্রতিবেদনে চোখ রাখুন।