আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,২৩মে,গীতি গমন চন্দ্র রায়: ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার ১নং ভোমরাদহ ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার পরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে কবর স্থান(গোরস্থান) ও হিন্দুদের শ্মশানের জমি জোবর দখল করে আম বাগানসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করেন বলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা ভোমরাদহ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আ”লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান ও তার চাচাতো ভাই সহ ৭জনের বিরুদ্ধে গোরস্থান ও শ্বশানের জমি অবৈধ ভাবে জবর দখল করার কারণে কুশারীগাও এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন।
এ ঘটনায় কুশারীগাঁও গ্রামের ২৮৬ জন বাসিন্দা গত ৩১শে জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। সরেজমিনে দেখা গিয়েছে যে, গোরস্থান ও শ্মশানের মাঝ একটি কাপনিহার নামে পুকুর রয়েছে। এ পুকুরের চার পাশ্বের জমি গুলোতে ভূট্রাক্ষেত ও আম বাগান করেন। স্থানীয়রা জানান, কুশারীগাঁও গ্রামের ৮৭নং জেএল ১নং খতিয়ান ভুক্ত ৮৪০, ৮৪১, ৮৪২, ৮৪৪ ও ৮৪৭ দাগের প্রায় ৮০ বিঘা জমির কাপনীহার পুকুর ও পুকুরের দক্ষিণ ও পশ্চিম পাড় মুসলমানদের গোরস্থান উত্তর ও পূর্বপাড় হিন্দুদের শ্বশান হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে এই গ্রামের আ”লীগের নেতা আব্দুল মান্নান তার চাচাতো ভাই মোঃ লাল শাহেদ আলী, গোলাম মোহাম্মদ, মোজাফ্ফর আলী, আব্দুর রশিদ, শরিফউদ্দীন ও আবু হোসেন মিলে পুকুরের চার পাশে গোরস্থান ও শ্মশানের প্রায় ত্রিশ বিঘা জমি পুরাতন কবর ভেঙ্গে দখল করেন এবং হিন্দুদের শ্মশানের জমি হাল চাষ দিয়ে আমের চারা রোপন করেন।
কুশারীগাঁও গ্রামের বাসিন্দা কুতুবউদ্দীন (৬৮) বলেন আমাদের চৌদ্দগোষ্ঠি ঐ গোরস্থানের শুয়ে আছেন। শুধু আমাদের গ্রাম নয় আমাদের আশে-পাশের গ্রামের মানুষরাও গোরস্থানটি ব্যবহার করে আসছেন। অথচ আ”লীগ নেতা আব্দুল মান্নানসহ তার পরিবারের লোকজন জোর পূর্বক ভাবে গোরস্থানের জমি দখল করে আমবাগান করেছেন। এতে করে বাপচাচার আমলের শ্মশান ও গোরস্থানের ঐতিহ্য বিলীন হয়ে গেছে। এ বিষয়ে আমরা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। একই গ্রামের মোবারক আলী (৭০) জানান, ঐ গোরস্থানে আমাদের বাবদাদোর পূর্ব পুষদের কবর রয়েছে। আর সেসব কবর ভেঙ্গে কবরের উপর হাল চাষদিয়ে সেখানে আম গাছ রোপন করেছেন।
সুরেন্দ্রনাথ (৭৩) বলেন কাপুনীহার পুকুরের পূর্ব ও উত্তর পাড়ে হিন্দুদের শ্মশান বংশ পরষ্পরায় ব্যবহার করে আসছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি ঐ জমিটি জোবর দখল করে শ্মশানের ঐতিহ্য বিলীন করেন। এ বিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বহী অফিসার বেশ কয়েকবার বসেছিলেন তিনি বলেছিলেন কবর ও শ্মশানের জমিটি সরকারি। এজন্য আব্দুল মান্নানকে জমিটি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু সে জমি ছাড়েনি। অভিযুক্ত আ”লীগ নেতা জানান, পুকুরের চার পাশ ৮৪৭ দাগের মধ্যে গোরস্থান ও শ্মশানের জমি রেকর্ড ভূক্ত জমি বাদ দিয়ে ১৫ বিঘা জমিতে আমগাছ রোপন করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে যা অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। এগুলো আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি। আমাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র আছে। ভোমরা দহ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হিটলার হক বলেন আব্দুল মান্নান ও তার পরিবারের লোকজনকে গোরস্থান ও শ্মশানের জমিতে গাছ রোপন করতে নিষেত করা হলো তিনি তা কর্ণপাত করেন নি।
পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগ পাওয়ার পর আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলাম। অভিযুক্ত আব্দুল মান্নানকে জমি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। সে কিছুতে কর্ণপাত করন নি। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাষক মোঃ আব্দুল আওয়াল বলেন স্থানীয়রা অভিযোগ দিয়েছে এ বিষয়টি আমার মনে নেই। কেই যদি কবর ও শ্মশানের জমি দখল করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে পীরগঞ্জ এলাকায় ধর্মীয় অনুভতির দৃষ্টিতে মানুষের মৃত্যুপরে যে চিরস্থায়ী মৃত মানুষের স্থান সে স্থান কেড়ে নেওয়ায় চা ল্যের সৃষ্টি হয়েছে।