ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা

    0
    241

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৩ফেব্রুয়ারী,ডেস্ক নিউজঃ  বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য ও খুলনা জেলা সভাপতি, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং পাট-সুতা-বস্ত্রকল সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক, মার্কসবাদী বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, প্রখ্যাত শ্রমিকনেতা কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শ্রমিক সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ।

    তিনি গতকাল ১২ ফেব্রুয়ারি বেলা ২.৪৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ এ মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৭৩ বছর। তিনি স্ত্রী, ১ কন্যা, ২ পুত্র, পুত্রবধূ, জামাতা ও নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

    কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তিনি ভারতের নয়াদিল্লীর বিএলকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে গত ১০ ফেব্রুয়ারি তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে আসা হয়।

    শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া

    প্রয়াত শ্রমিকনেতা কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার মরদেহে আজ শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মানুষ। আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁর মরদেহ ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে রাখা হয়।

    সকালে ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির তরফ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যদিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পার্টির সভাপতি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি, পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড নুরুল হাসান, মাহমুদুল হাসান মানিক, ড. সুশান্ত দাস, ইকবাল কবির জাহিদ, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, কামরূল আহসান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড আলী আহমেদ এনামুল হক এমরান, করম আলী, তপন দত্ত, আনোয়ারুল হক বাবলু, কেন্দ্রীয় কমিটির বিকল্প সদস্য কমরেড আকছির এম চৌধুরী, আমিরুল হক আমিন, জাকির হোসেন, বজলুর রহমান, জোবায়দা পারভীন, আব্দুল মজিদ, জাকির হোসেন রাজু, মোস্তফা আলমগীর রতন, সাব্বাহ আলী খান কলিন্স।

    ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদীয় দলের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, হাজেরা সুলতানা এমপি, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, ইয়াসিন আলী এমপি, শেখ টিপু সুলতান এমপি।

    বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, কেন্দ্রীয় নেতা এনামুল হক শামীম, এ্যাড. আফজাল হোসেন, হাবিবুর রহমান সিরাজ প্রমুখ।

    ১৪ দলের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জোটের সমন্বয়ক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি, সাবেক মন্ত্রী ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য ও হুইপ আশরাফ হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ-কোরিয়া মৈত্রী সমিতির সভাপতি হারুনুর রশীদ।

    প্রয়াত কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার সংগঠন জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন এর কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংগঠনের কার্যনির্বাহী সভাপতি কামরূল আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হক আমিনসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

    শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো, জাসদ (আম্বিয়া) এর সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান এমপি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ নজরুল মজিদ বেলাল, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. অসিত বরণ রায়, বাসদের বজলুর রশীদ ফিরোজ ও রাজেকুজ্জামান রতন, ঐক্য ন্যাপের হারুন রশীদ ভূঁইয়া, জাসদ (ইনু) এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাইমুল আহসান জুয়েল।

    এছাড়াও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ), পাট-সূতা-বস্ত্রকল শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল, সাপ্তাহিক নতুন কথা, জাতীয় কৃষক সমিতি, বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়ন, বাংলাদেশ নারী মুক্তি, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, জাতীয় নির্মাণ শ্রমিক ফেডারেশন, জাতীয় গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স, ডিজাইন এন্ড সোর্স শ্রমিক ইউনিয়ন, এ প্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ শ্রমিক ইউনিয়ন, করিম জুট মিল লেবার ইউনিয়ন, জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, ডমেস্টিক ওয়ার্কার্স এসোসিয়েশন, একতা গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, লতিফ বাওয়ানী জুট মিলস শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশের জাতীয় শ্রমিক জোট, বাংলাদেশ হকার্স সমন্বয় পরিষদ, বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন, বিলস্, জাতীয় শ্রমিক জোট, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সেক্টর করপোরেশন, বাংলাদেশ বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, ছাত্রলীগ (বিসিএল), ঢাকা রুটি বিস্কুট কনফেকশনারি শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন (ইনসাব) এর নেতৃবৃন্দ।

    শ্রদ্ধা নিবেদন করে ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা, বরিশাল, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, ঠাকুরগাঁও জেলা, কেন্দ্রীয় অফিস বিভাগ, উত্তরা, মতিঝিল, মোহাম্মদপুর, শাহবাগ-নিউমার্কেট থানা কমিটি।

    শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের ঢাকা মহানগর, গাজীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা, যুব মৈত্রীর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, ময়মনসিংহ জেলা, ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা মহানগর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

    প্রথম জানাজা

    কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার প্রথম নামাজে জানাজা আজ বেলা ১২টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচা হাই স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ এবং প্রয়াত কমরেডের পরিবারের সদস্যবৃন্দ।

    তিন দিনের শোক

    কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার মৃত্যুতে তিন দিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ওয়ার্কার্স পার্টি। গতকাল ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামীকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের সকল কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে।

    আগামীকাল মঙ্গলবার খুলনায় শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন, জানাজা ও দাফন

    প্রয়াত কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার মরদেহ আজ বেলা ১২.৩০টায় ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। আজ সন্ধ্যায় খুলনা পৌঁছে রাতে মরদেহ রাখা হবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মরচুয়ারিতে।

    আগামীকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ১০টায় খুলনার শহিদ হাদিস পার্কে তাঁর মরদেহ রাখা হবে। সেখানে জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। সকাল ১১.৩০টায় খালিশপুর প্লাটিনাম জুট মিল ময়দান, বেলা ১টায় দৌলতপুর শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে ইস্টার্ন জুট মিল, ফুলতলা পার্টি কার্যালয়, ফুলতলা স্বাধীনতা চত্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাদ আসর ফুলতলা ডাবুর মাঠে জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। পরে উপজেলা সরকারি কবরস্থানে তাঁর মরদেহ সমাহিত করা হবে। আগামীকাল খুলনার সকল কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

    প্রয়াত কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়ার সংক্ষিপ্ত জীবনী

    কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৪৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুর রব ভূঁইয়া ও মাতার নাম তহুরুন্নেছা। ১৯৫৯ সালে ফুলতলা রি-ইউনিয়ন হাই স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৬০-৬১ সালে দৌলতপুর বিএল কলেজে অধ্যয়নকালে ছাত্র ইউনিয়নে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রবেশ। ছাত্রাবস্থায় তিনি ফুলতলার প্রবীণ রাজনীতিবিদ কালিপদ ঘোষের হাত ধরে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন। এ সময় কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ থাকায় প্রকাশ্যে ভাসানী ন্যাপের রাজনীতি করতেন। ১৯৬৩ সালে খুলনা আযম খান কমার্স কলেজ থেকে বিকম পাস করেন এবং ১৯৬৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমকম পাস করে কর্মজীবনের শুরুতে বটিয়াঘাটা ডেউয়তলা হাই স্কুলে ৬ মাসের জন্য প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে কমরেড নজরুল ইসলামের প্রেরণায় ১৯৬৬ সালের ১১ এপ্রিল শ্রমিক আন্দোলনে যুক্ত হয়ে খালিশপুরের প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলে চাকরিতে যোগদান করেন। চাকরির সুবাদে ঐ মিলের এমপ্লয়িজ ইউনিয়নে বারবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। এছাড়া আলিম ও ইস্টার্ন জুট মিলস মজদুর ইউনিয়নে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বহুবার বিজেএমসি কর্তৃপক্ষ পদোন্নতি দিতে চাইলেও তিনি শ্রমিক আন্দোলনের স্বার্থে পদোন্নতি নেন নি। এমনকি আশির দশকের প্রথম দিকে ডিজিএম পদে লোভনীয় পদোন্নতি প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭০ সালের প্রথমদিকে পার্টির সভ্যপদ লাভ করেন। দেশ স্বাধীনের পর লেনিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টির সাথে যুক্ত হন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৮ সালে ইউপিপি-তে এবং ১৯৮৫ সালে ওয়ার্কার্স পার্টির এক অংশের কেন্দ্রীয় সদস্যের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (নজরুল) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট লীগÑ এই দুই পার্টির ঐক্যের মধ্যদিয়ে ১৯৮৮ সালে গঠিত ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সদস্যের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল একত্রিত হয়ে ১৯৯২ সালে তিন পার্টির ঐক্য কংগ্রেসের মধ্যদিয়ে গড়ে ওঠা বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও খুলনা জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হন। কমরেড হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া ২০০৫ সালে যশোরে অনুষ্ঠিত ওয়ার্কার্স পার্টির সপ্তম কংগ্রেসে পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৫ সাল থেকে অদ্যবধি তিনি পার্টির খুলনা জেলা সভাপতি ছিলেন। একই সাথে তিনি জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন।

    তাঁর বর্ণাঢ্য আন্দোলনমুখর জীবনে রক্ষীবাহিনীর হাতে নির্মম নির্যাতন ও কারাভোগসহ বিভিন্ন সময় ও মেয়াদে ৫ বার কারাভোগ করেন। শ্রমিক নেতৃত্ব ছাড়াও ১৯৯৬-এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পার্টির প্রার্থী এবং ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে ফুলতলা উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন। তিনি পাট-সুতা-বস্ত্রকল সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক, বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন কমিটির সদস্য, খুলনা-যশোর পাট শিল্প সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক, বিল ডাকাতিয়া সংগ্রাম কমিটি, পানি ঠেকাও ফুলতলা বাঁচাও আন্দোলন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আন্দোলন, খুলনা শিল্প কারখানা রক্ষা ও মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন, বিভিন্ন সময় সা¤্রাজ্যবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলন, স্বৈরাচারী-দুঃশাসনবিরোধী আন্দোলন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকলের শ্রমিক আন্দোলনের রূপকার হিসেবে খালিশপুরসহ দেশব্যাপী আন্দোলনের চালিকা শক্তি হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

    তাঁর হাত ধরে ফুলতলা এমএম কলেজ, ফুলতলা মহিলা ডিগ্রি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। জামিরা বাজার আসমোতিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, ফুলতলা রি-ইউনিয়ন হাই স্কুল, দামোদর মুক্তময়ী হাই স্কুল, ফুলতলা মহিলা ডিগ্রি কলেজ ও ফুলতলা এমএম কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, ফুলতলা লিটল এ্যাঞ্জেল কিন্ডার গার্টেনের উপদেষ্টা হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।