কে এই আফিয়া? জঙ্গিদের কাছে কেন তার গুরুত্ব?

    0
    205

    আমারসিলেট24ডটকম,২৭ডিসেম্বরঃ আলজেরিয়া, ইরাক থেকে ইয়েমেন  ইসলামি জঙ্গি পণবন্দিকারীদের মুখে এখন একটাই নাম, আফিয়া সিদ্দিকি। পাকিস্তানের এই বিজ্ঞানী আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার উপরে হামলা চালানোর অভিযোগে আমেরিকার জেলে বন্দি।

    সম্প্রতি মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফোলিকে অপহরণ করে ৪২ বছরের আফিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়েছিল আইএস। যদিও শেষ পর্যন্ত গত অগস্ট মাসে ফোলির মুণ্ডচ্ছেদ করে তারা। কিন্তু কে এই আফিয়া? জঙ্গিদের কাছে কেনই বা তার গুরুত্ব? করাচিতে আফিয়ার পরিবার নিশ্চিত, তাদের মেয়ে নিরপরাধ।

    গল্পটা বহু দিনের। ২০০৩ সালের মার্চে আল কায়দার তিন নম্বর মাথা এবং ৯/১১-এর অন্যতম অভিযুক্ত খালেদ শেখ মুহম্মদকে গ্রেফতার করা হয় করাচি থেকে। তার পরই তিন সন্তানকে নিয়ে করাচি থেকে উধাও হয়ে যান আফিয়া। আল কায়দার সঙ্গে তিনিও জড়িত বলে সন্দেহ ছিল গোয়েন্দাদের। মার্কিন অফিসারদের দাবি, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে খালেদ শেখ  ‍মুহাম্মদের ভাইপোর সঙ্গে বিয়ে হয় আফিয়ার। ওসামা বিন লাদেনের জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত প্রথম মহিলার নাম বলতে উঠে এসেছিল আফিয়ার কথাই। যিনি লেডি আল কায়দা নামেই পরিচিত।

    পাকিস্তান আর জাম্বিয়ায় শৈশব কাটিয়ে ১৮ বছরের আফিয়া চলে যান টেক্সাস। বস্টনের এমআইটি-তে পড়াশোনার পরে নিউরোসায়েন্স নিয়ে পিএইচডি করেন ব্রান্দেইস ইউনিভার্সিটি থেকে। করাচির এক চিকিৎসকের সঙ্গে বিয়ে। ২০০১ সালে ইসলামি প্রতিষ্ঠানে ঢালাও অর্থসাহায্য করে এবং রাতচশমা-সহ যুদ্ধের উপরে বই কিনে এফবিআইয়ের নজরে আসেন আফিয়া আর তার স্বামী। পরের বছর পাকিস্তানে ফেরেন আফিয়া। বিচ্ছেদ হয় স্বামীর সঙ্গে। উধাও হয়ে গেলেও ২০০৮ এ তিনি ফিরে আসেন আফগানিস্তানে। সেখানকার গজনি প্রদেশ থেকে স্থানীয় পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে।

    আমেরিকার আদালতের সূত্রে জানা যায়, ময়শ্চারাইজারের বোতলে দু’কিলো সোডিয়াম সায়ানাইড নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তা ছাড়া, রাসায়নিক অস্ত্রের সাহায্যে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজ এবং এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ে হামলা চালানোর পরিকল্পনা সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্রও ছিল তার কাছে।
    এর পরে লেডি আল কায়দাকে জেরা শুরু করে আফগানিস্তানের মার্কিন সেনা। এই সময়েই এক দিন জেরা চলাকালীন সেনার রাইফেল কেড়ে গুলি চালান আফিয়া। মুখে স্লোগান, “আমেরিকার মৃত্যু হোক,” “আমি আমেরিকানদের মারতে চাই।” এর পর আফিয়াকে আমেরিকায় আনা হয়। সেনার ওপরে হামলার অভিযোগে ২০১০-এ তার ৮৬ বছরের কারাদণ্ড হয়। আফিয়ার বোনের একটাই দুঃখ, ও যদি জানতে পারে, ওকে নিয়ে এসব কথা হচ্ছে, শেষ হয়ে যাবে ও। কিন্তু লেডি আল কায়দা ফোলি-নিধনের পরে যে লেডি আইএস বলে জনপ্রিয় হচ্ছেন জঙ্গিমহলে, তা কি আফিয়ার বোন জানেন!সুত্রঃসংবাদ সংস্থা