খাদিজা মিষ্টি করে হাসছে তবে এখনো চিকিৎসাধীন

    0
    378

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৫জানুয়ারী,ডেস্ক নিউজঃ  মিষ্টি হাসিমাখা মুখখানির ছবিটি ফেসবুকে দেখে আগ্রহী হয়ে উঠি। গত বছরের ৩ অক্টোবরের পর খাদিজা বেগমকে বা তার ছবি যারা দেখেছেন, তারা ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করেননি, খাদিজা আবার কোনোদিন এমন মিষ্টি করে হাসবেন।

    তাকে উন্মত্তের মতো কুপিয়েছিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম।
    দূর থেকে অনেকেই সেটির ভিডিও করেছিল। কিন্তু কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি।

    এরপর দীর্ঘদিন খাদিজা ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ছিল জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

    অথচ এই ছবিটি মোটে দিন তিনেক আগে তোলা। তার ভাই শারনান হক শাহীন ছবিটি তুলে ফেসবুকে দিয়েছেন।

    ঢাকার কাছে সাভারের সিআরপিতে ছবিটি তোলা।

    সেখানেই এখন চলছে খাদিজার পুনর্বাসন।

    টেলিফোনে আমার কথা বলার সুযোগ হয় খাদিজার সাথে।

    জানতে চাই, কেমন আছেন?

    “মোটামুটি ভালো আছি।”ছোট্ট উত্তর।

    শুনতে পেলাম আপনি এখন হাঁটাচলা করতে পারেন, ঘুরতে-টুরতেও যাচ্ছেন এখানে সেখানে?

    “এইতো একটু। বেশী না।”

    কি কষ্ট আপনার আছে এখন?

    “বাম হাতে আর বাম পায়ে।”

    ছোট ছোট বাক্যে এক দু-কথায় জবাব সারছিলেন তিনি।

    খাদিজার ভাই শারনান হক বলছেন, “ডাক্তার আর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ছাড়া আর কারো সাথে কথা বলতে চান না খাদিজা।”

    হকের ফোনেই কথা হচ্ছিল।

    তিনিই সিআরপিতে খাদিজার সার্বক্ষণিক সঙ্গী। তিনি চীনের বেইজিংয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ছাত্র। শীতকালীন ছুটিতে বাংলাদেশে এসেছেন।

    স্বাভাবিক খাওয়া দাওয়া, পড়াশোনা এগুলো এখন একটু একটু করতে পারেন বলে জানালেন খাদিজা।

    তবে বেশীরভাগ সময়েই তার কাটে ডাক্তারদের থেরাপি কক্ষে নয়তো বিছানায় শুয়ে।

    এভাবে বেশীরভাগ সময় শুয়ে বসে কাটান বলে খুবই ‘বোর’ হচ্ছেন তিনি, তাই বিকেলবেলা তাকে দেয়া হচ্ছে সিআরপির কম্পাউন্ডে ঘুরে বেড়ানোর অনুমতি।

    আর গত সোমবার সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করার পর তাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় সিআরপি কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায়।

    খাদিজার কাছে জানতে চাই, যেদিন তাকে কোপানো হয়েছিল সেদিনকার কথা মনে আছে তার?

    খাদিজা বললেন, “কিছু মনে নেই।” তারপর পাশে বসা ভাইয়ের হাতে ফোনটি দিয়ে দিলেন।

    এখানেই শেষ খাদিজার সঙ্গে আমার আলাপচারিতা।

    খাদিজার ভাই হক জানাচ্ছেন, ওই ঘটনা নিয়ে কথা বলতে চান না খাদিজা।

    কিন্তু আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সিলেটের আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার কথা আছে তার।

    সেই দিনকে সামনে রেখে সিআরপি কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে তাকে সিলেটে নিয়ে যাওয়ার একটি তোড়জোড় আছে।

    সেখানে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে খাদিজাকে হয়তো সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিতে হবে।

    ওদিকে হক বললেন, ওইদিনের কথা বললে খাদিজার ‘ডিপ্রেশন’ হয়।

    সে কবে নাগাদ পুরোপুরি সুস্থ হবে সেই দিনক্ষণ এখনো নিশ্চিত করেনি সিআরপি।

    তবে পুরো সুস্থ হলে খাদিজা আবার তার লেখাপড়ার জীবনে ফিরে যেতে চান সেই কথাটা আলাপচারিতার এক ফাঁকেই তিনি জানিয়েছিলেন আমাকে।সুত্রঃবিবিসি