তাহিরপুরের লালঘাট সীমান্তে চোরাচালান বাণিজ্য জমজমাট

    0
    204

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,৩১ডিসেম্বর,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প এলাকার লালঘাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিদিন হচ্ছে জমজমাট চোরাচালান বাণিজ্য। গতকাল শুক্রবার রাত ১টায় ২টি ট্রলি দিয়ে প্রায় ১০টন কয়লা পাঁচার করা হয়। যার মূল্য প্রায় ১লক্ষ টাকা। আর এই কয়লার সাথে ওপেন পাঁচার করা হচ্ছে মদ,গাজা,হেরোইন ও ইয়াবা। সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে ওইসব অবৈধ মালামাল ওপেন পাঁচার করা হলেও স্থানীয় বিজিবি এব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

    এলাকাবাসী জানায়,লালঘাট গ্রামের মৃত বরকত আলীর ছেলে চিহ্নিত চোরাচালানী জয়নাল মিয়া ও চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের পিছনে অবস্থিত চাঁরাগাঁও শুল্কষ্টেশন এলাকার মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে ডাকাত সর্দার ফরিদ মিয়া তাদের সহযোগীদের নিয়ে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবির কমান্ডিং অফিসারের (সি.ও) সোর্স পরিচয় দিয়ে চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার রশিদ মিয়ার সহযোগীতায় চাঁরাগাঁও সীমান্তের লালঘাট এলাকার ১১৯৬নং পিলারে ডান পাশ দিয়ে প্রতিদিন রাতে ওপেন কয়লা,মদ,গাঁজা,হেরোইন ও ইয়াবা পাচাঁর করছে। আর পাঁচারকৃত মালামালের মধ্যে কয়লা প্লাষ্টিকের বস্তা বন্দি করে ট্রলি যোগে বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে চোরাচালানী ফরিদ মিয়ার বাড়িতে ও চাঁরাগাঁও শুল্কষ্টেশনের কয়েকটি ডিপুতে নিয়ে মজুদ করা হচ্ছে।

    পরবর্তীতে এলসির মাধ্যমে বৈধ পথে আসা কয়লার সাথে মিশিয়ে অবৈধ কয়লাকে বৈধ করা হচ্ছে। এজন্য প্রতি বস্তা কয়লা থেকে জয়নাল মিয়া সি.ও’র নাম ভাঙ্গিয়ে ২০০টাকা ও চাঁরাগাঁও ক্যাম্পের কমান্ডার হাবিলদার রশিদ মিয়ার নামে ১০০টাকা চাঁদা নিচ্ছে। এর আগে হাবিলদার রশিদ মিয়া সীমান্তের চাঁনপুর বিজিবি ক্যাম্পে কর্মরত থাকাকালীন অবস্থায় চোরাচালানীদের নিয়ে নিজে দাড়িয়ে থেকে ভারত থেকে কয়লা ও চুনাপাথর পাঁচার করার ঘটনায় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে তাকে অন্যত্র বদলি করে দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

    এছাড়া চোরাচালানী জয়নাল মিয়া এলাকার নিরীহ লোকদের ভয় দেখিয়ে ভারত থেকে কয়লা পাঁচার করতে গিয়ে লালঘাটের চোরাই কয়লার গুহায় চাপা পড়ে আলামিন নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এসময় আহত হয় আরো ৩জন। অন্যদিকে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সোর্স পরিচয় দিয়ে লালঘাট গ্রামের কালাম মিয়া লালঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ওপেন গরু,মদ,গাজা, হেরোইন ও ইয়াবা পাচাঁর করে। আর মাদকদ্রব্য পাঁচার,হুন্ডি ও চাঁদাবাজির জন্য বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী চোরাচালানী কালাম মিয়া ৩বার জেল খেটেছে। তার বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে ৪টি মামলা রয়েছে। তারপরও ক্ষান্ত হয়নি সে। দিনদিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বর্তমানে লালঘাট এলাকাকে চোরাচালানীরা চোরাচালানের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে।

    এব্যাপারে চোরাচালানী জয়নাল মিয়া বলেন,আমার বিরুদ্ধে পত্রিকায় লিখলে কিছুই হবেনা,কারণ আমি যা করছি হাবিলদার রশিদ ভাইকে নিয়েই করছি।

    চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার রশিদ বলেন,সীমান্তের চোরাচালানের বিষয়ে আমার জানা নেই,এব্যাপারে খোঁজ খবর নেব।

    সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক নাসির উদ্দিন বলেন,সীমান্তে আমার কোন সোর্স নেই,বিজিবি নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।