আমার সিলেট ডেস্ক: বান্দরবানের থানচি থানায় হামলা চালিয়েছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীরা। গতকাল রাত ৮টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের প্রতিরোধে পুলিশ সদস্যরা পাল্টা গুলি চালায়। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বিজিবি সদস্যরা। ঘণ্টাব্যাপাী গোলাগুলিতে ভারী হয়ে ওঠে থানচির রাতের আকাশ। উভয়পক্ষ পাঁচ শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে গোলাগুলি থামে।
সন্ত্রাসীরা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে থানচি বাজারের চারপাশে গুলিবর্ষণ করে বলে গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান থানচি বাজার কমিটির সভাপতি ও থানচি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান খামলাই ম্রো। তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে থানচি বাজারের চারপাশে গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা। এক পর্যায়ে গুলি করতে করতে তারা থানচি থানার দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ তাদের প্রতিহত করে। রাত সাড়ে নয়টা থেকে গোলাগুলি বন্ধ আছে। পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।’
রাত সাড়ে নয়টার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রায়হান কাজেমি জানান, সাড়ে ৮টার দিকে কেএনএফ সদস্যরা দ্বিতীয়বারের মতো ব্যাংক লুটের চেষ্টা চালায়। এসময় পুলিশ বাঁধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে বিজিবি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিবেশ এখন শান্ত রয়েছে।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘রাত সাড়ে আটটা থেকে থানচি বাজার ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় কেএনএফের সঙ্গে পুলিশ ও বিজিবির তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। মূলত দুই স্থানে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। থানচি থানা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পেছনে। পুলিশ এবং বিজিবি দুই পক্ষের সঙ্গেই গোলাগুলি হয়েছে।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে চেনা যায়নি
সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যদের। তবে ধারণা করা হচ্ছে, কেএনএফ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে এ গোলাগুলি চলছে। কারণ দুদিন আগে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে থানচি বাজারে এসে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে হানা দিয়ে ১৭ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাদের ধরতে অভিযানে নামে থানচি থানার পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাই নিজেদের রক্ষার্থে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয় কেএনএফ সন্ত্রাসীরা। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
বান্দরবানে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার
আমার সিলেট ডেস্ক: বান্দরবানে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে রুমা বাজার এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রুমা বাজার এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাব বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় কেএনএফের সঙ্গে মধ্যস্থতা করে তাকে উদ্ধার করে। এখন তাকে বান্দরবানে স্থানীয় র্যাব ক্যাম্পে নিয়ে গেছে। সংবাদ লেখা পর্যন্ত র্যাব ক্যাম্পে তিনি রয়েছেন।
গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে রুমা উপজেলা প্রশাসন ভবনে হামলা চালায় একদল সশস্ত্র গোষ্ঠী। এ সময় সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা, নিরাপত্তারক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করে ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে বলে জানান রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি বলেন, তারা এই সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার ভিডিপির দুটি এসএমজি, ৬০ রাউন্ড গুলি, আটটি চীনা রাইফেল, ৩২০ রাউন্ড গুলি এবং আনসারের চারটি শর্টগান ও ৩৫ রাউন্ড গুলি লুট করে।
রুমা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিদারুল আলম জানিয়েছেন, নিজাম উদ্দিন সুস্থ আছেেন। এখন তিনি রুমায় রয়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তাকে উদ্ধারের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বান্দরবানে ব্যাংক ডাকাতি সরকার তুচ্ছ ঘটনা মনে করছে না। এই ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য,আজ বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে বান্দরবানে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলা ও ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। সূত্র আমাদের সময়