নবীগঞ্জে ঘাতক পুত্রের হাতে পিতা খুনঃমামলা নিয়ে আতংক

    0
    215

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৮মার্চ,নবীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ  নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের বহুল আলোচিত সদরাবাদ গ্রামের ঘাতক পুত্রের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া ৬৫ বছর বসয়ী বৃদ্ধ মুক্তার উল্যার হত্যাকান্ডের ঘটনায় ঘাতক পুত্র জীবন ও কলেজ ছাত্র সহ আরো কয়েকজনকে অজ্ঞাত রেখে নবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলেন নিহতের বড় ছেলে সুমন মিয়া। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত পুত্র জীবন এর নামের পাশাপাশি অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা এফ.আই.আর হওয়ার পর পরই ওই গ্রামে আতংক বিরাজ করছে।

    পুলিশ কর্তৃক লাশ উদ্ধারের সময় নিহতের যুবতি কন্যা ডালিনা বেগম ও প্রতিবেশী সিরাজুল ইসলাম রাফি নামের যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে গেলে হত্যা মামলা দায়েরের পর ডালিনাকে পুলিশ ছেড়ে দিলেও সিরাজুল ইসলাম রাফিকে উক্ত

    মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে প্রেরন করে পুলিশ। ঐ আলোচিত ঘটনাটি নিয়ে উপজেলার সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টির পাশাপাশি নিজ পুত্র কর্তৃক পিতাকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে। ঘটনার বিবরন ও মামলার এজহারে প্রকাশ, উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের সদরাবাদ গ্রামের মৃত রমিজ উলার পুত্র মুক্তার উলাহ প্রায় বছর খানেক পূর্বে দুবাই থেকে বাড়িতে আসেন। বয়সের ভারে নতজানু ওই বৃদ্ধ কোন রোজি রোজগার করতে পারেন নি।

    এমন কি মামলার বাদী নির্মম ভাবে নিহত মুক্তার উল্লার বড় ছেলে সুমন মিয়া বলেন, তিনি সিলেট শহরের সুবিদ বাজারস্থ মার্লিন টাওয়ারে কর্মরত রয়েছেন। তার পিতা দুবাই প্রবাস থেকে আসার পর জুয়া খেলার বদ অভ্যাস ছিল। এমনকি জোয়া খেলার নেশার টাকার প্রয়োজনে তাদের এক মাত্র মাথা গুজার ঠাই বসতভিটা খানা পার্শ্ববর্তী বাড়ির সিরাজুল ইসলাম রাফিদের নিকট বিক্রয় করিয়া দিতে চেয়েছিলেন।

    এ ঘটনায় মামলার বাদী সুমন সহ তার ভাই মামলার প্রধান আসামী জীবন স্ব-পরিবারের সদস্যগণ তার বাবাকে বাড়ি বিক্রি করার জন্য বাধা নিষেধ করিলেও তার পিতা তাদের কথা না শুনে বাড়ি বিক্রি করিবে বলিয়া জানান। এই ঘটনার জের ধরেই গত ১৪মার্চ দিবাগত রাত ১১টায় রাফিদের বাড়ি থেকে তার  বাবাকে বিষয়টি মিমাংশা করার প্রলোভন দিয়ে তার বোন জামাই আজির উদ্দিন মুক্তার উল্যাহকে নিয়ে আসার সাথে সাথেই এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।

    এলাকাবাসীর সাথে আলাপকালে আরো জানাযায়, নিহত মুক্তার উল্ল্যার ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে রয়েছেন। বড় ছেলে সুমন সিলেট শহরের সুবিদ বাজারস্থ মার্লিন টাওয়ারে সিকিউরিটির কাজ করে। ঘাতক পুত্র জীবন শেরপুর মাই ওয়ান ইলেক্ট্রনিক্স দোকানে শ্রমিকের কাজ করে। কোন রকম চলছিল তাদের জীবন সংসার। সংসারের ভরণ পোষন ও একটি মেয়ের বিবাহ দিতে গিয়ে কিছু বাড়ি রকম জায়গা বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন মুক্তার উলাহ। এই জায়গা বিক্রয় নিয়ে পিতা পুত্রের মধ্যে এমন কি পুরো পরিবারে মধ্যে গত ২ সপ্তাহ ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে গত সোমবার দিবাগত রাত অনুমান সাড়ে ১১টা ৫০মিনিটে সময় পিতা ও পুত্রের মধ্যে কথার কাটাকাটি এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে পুত্র জীবন তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ধাওয়া করে পিতাকে।

    ওই সময় পিতা মুক্তার উল্লাহ পাশ্ববর্তী পুকুরে ঝাপ দিয়ে পড়েন। কিন্তু ঘাতক পুত্র জীবন তার হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে বুক লক্ষ করে গাই(আঘাত) মারে নিজ পিতাকে। ঘটনাস্থলেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এর পর প্রতিবেশীরা তা আচ করতে পেরে মুক্তার উলার নিথর দেহ দেখতে পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেন।

    পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরন করেন। এর পর নিহতের পুত্র সুমন বাদী হয়ে তার ভাই ঘাতক জীবনকে প্রধান আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এমন কি ওই মামলায় সন্ধেহজনক ভাবে আসামী করা হয়েছে মৌলভীবাজার সরকারী কলেজে অর্নাস এ অধ্যায়নরত মৃত আহমদ আলীর পুত্র আব্দুর রহমানকে। কলেজ ছাত্রকে আসামী করায় দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।