নিষিদ্ধ উপাদানে সিলেটের ফ্যাক্টরীগুলোতে তৈরি আইসক্রীম

    0
    220

    মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর!

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৩ফেব্রুয়ারীঃ সিলেটের বিভিন্ন এলাকার কারখানায় বিষাক্ত উপাদান দিয়ে তৈরি হচ্ছে আইসক্রীম। অনুসন্ধানে জানা গেছে, চায়না থেকে আমদানীকৃত (সিএমসি) এসিড জাতের পাউডার ও ঘন চিনি দিয়ে কারখানাগুলোতে তৈরি করা হচ্ছে আইসক্রীম।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আইসক্রীম ফ্যাক্টরীর কারিগর বলেন, এই বিষাক্ত উপাদান দিয়ে তৈরি করা আইসক্রীম খেলে মানবদেহে কিডনী ও হার্টের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। দীর্ঘদিন যাবৎ সিলেটে একশ্রেণীর আইসক্রীম কারখানার মালিক নিষিদ্ধ ঘোষিত উপকরণ (সিএমসি) পাউডার ও ঘন চিনিসহ এক ধরনের ফ্লেবার আইসক্রীম তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। সিএমসি ও ঘন চিনি এ দু’টি চায়না থেকে আমদানী করা হয়ে থাকে।

    যা ঢাকার নবাবপুর ও বংশালে ক্যামিকেলের দোকানগুলোতে পাইকারীভাবে বিক্রয় করা হয়। সেখান থেকে সিলেটের অসাধু ব্যবসায়ীরা এই বিষাক্ত উপাদান ক্রয় করে সিলেটে এনে আইসক্রীম কারখানার মালিকদের কাছে পাইকারী চড়া মূল্যে বিক্রয় করে থাকে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিএমসি এসিড জাতের পাউডার দিয়ে আইসের ক্রীম তৈরি করা হয়।

    আর ওপর নিষিদ্ধকৃত ঘন চিনির একমুঠো চিনি ৬০ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে আইসক্রীমের সিরা তৈরি হয়। পরে সিরাগুলোসহ সিএমসি পাউডার আইসের ফরমুলায় ঢেলে দিলে আইসক্রীম তৈরি হয়ে যায়। আইসক্রীম তৈরিকালে আরেক ধরনের ক্ষতিকর উপাদান ফ্লেবার (ঘ্রাণ) ব্যবহৃত হয়। এছাড়া ওরেঞ্জ রংয়ের যেসব আইসক্রীম তৈরি হয় এগুলোতে বিষাক্ত রং মিশিয়ে দেয়া হয়। যা খেলে ধীরে ধীরে মানবদেহের কিডনী, হার্ট, লিভার সহ খাদ্যনালীতে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়ায়।
    সূত্র জানায়, এসব ক্ষতিকর উপাদানে মেশানো তৈরিকৃত আইসক্রীম ফ্যাক্টরীগুলোর মধ্যে শহরতলীর কুমারগাঁও, বাগবাড়ী, ধোপাদিঘীর পূর্ব পার, মিরাবাজার আগপাড়া, পীর মহল্লা, হযরত শাহপরাণ মাজার রোড, হুমায়ুন রশিদ চত্বর সহ দক্ষিণ সুরমা এলাকা ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এসব ক্ষতিকর উপাদান দিয়ে ফ্যাক্টরীগুলোতে আইসক্রীম তৈরি করা হচ্ছে।
    এ ব্যাপারে খাদ্য পণ্য ও সেবামান তদারকি ও মনিটরিং ইউনিট সিলেট জেলা সেনিটারী ইন্সপেক্টর মি. স্নিগ্ধেন্দু সরকার সাংবাদিকদের বলেন, আইসক্রীম তৈরিতে ব্যবহৃত সিএমসি এসিড জাতের পাউডার ও ঘন চিনি উপাদান মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। তবে কতটুকু ক্ষতিকর তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে।

    তিনি বলেন, চলমান নিরাপদ খাদ্য আইনে অনেক ধারাগুলোতে নিষিদ্ধ পণ্য উপাদান মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করলে সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সে জন্য ক্যামিকেল দ্রব্য উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা সহ দণ্ডনীয় অপরাধে শাস্তির বিধান রয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে অফিসিয়ালী সুস্পষ্ট নির্দেশনা বা প্রজ্ঞাপন না থাকায় ভেজাল অপরাধীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা যাচ্ছে না।

    তাছাড়া স্থানীয় (বিএসটিআই) কর্তৃপক্ষ ভেজাল পণ্য বিক্রয় লেনদেনকারীদের অনুমোদন আছে, অনুমোদন নেই বলে আইনকে জানান দেয়। কিন্তু সঠিকভাবে কোন কোন পণ্যে ভেজাল রয়েছে সেসব সরেজমিন টেষ্টসহ রহস্যজনক কারণে তারা তা স্বীকার করে না বলে খাদ্য ভোগ্য পণ্যে ভেজাল বিক্রয়কারী বিএসটিআই সনদধারীরা পার পেয়ে যায় বলে আলাপকালে প্রশাসন সূত্রে এসব তথ্য উঠে আসে।