বিয়ের বছর পূর্তির পূর্বেই লাশ হলো হবিগঞ্জের এক যুবক!

0
129

নূরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধি: বিয়ের বছর পূর্তির পূর্বেই মাত্র আট মাসের মাথায় হবিগঞ্জের নজরুল ইসলাম (২৭) নামে এক যুবককে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার পর থেকে বাসা থেকে গা-ঢাকা দিয়েছে নিহতের তার স্ত্রী।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়া থানা-পুলিশ মরদেরহ উদ্ধার করে। নজরুল ইসলাম হবিগঞ্জ সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার ছেলে। তার স্ত্রী নার্গিস আক্তারের কক্সবাজারের চকরিয়া থানার পূর্ব ডুমখালী গ্রামের বাসিন্দা।

জানা গেছে, ফেসবুক পরিচয় সূত্রে নার্গিস আক্তারের সঙ্গে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে কক্সবাজারে নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে তারা বিয়ে হয়। গত ৫ মার্চ হবিগঞ্জ শহরতলীতে তাদের বিবাত্তোর সংবর্ধনা হয়।

এদিকে নার্গিসের আক্তারের চাকরির সুবাধে উখিয়ার সোনাপাড়া গ্রামে বাসা ভাড়া নেন। বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। পরে নজরুলের গ্রামের বাড়িতে আনার চেষ্টার করলেও নার্গিস রাজি হননি।

নজরুলের পরিবারের অভিযোগ, নার্গিসের পেটে নজরুলের সন্তান, এমন খবর পেয়ে কক্সবাজারের চকরিয়ায় তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর সাথে দেখা করতে যান নজরুল। তবে তাকে ফিরতে হয়েছে কফিনবন্দি লাশ হয়ে। গত শনিবার সেখান থেকে নজরুলের মরদেহে উদ্ধার করে পুলিশ।

নজরুলের ভাই তাজুল ইসলাম বলেন, আমার ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন প্রায় ৫ মাস আগে তাদের বিচ্ছেদ হয় কিন্তু হঠাত করে নার্গিস আমার ভাইকে ফোন দিয়ে বলে তার পেটে নজরুলের বাচ্চা একথা শুনার পরে আমার ভাইকে আর আটকে রাখতে পারিনি।

শনিবার সকালে হঠাৎ ফোন আসে নজরুলের লাশ পাওয়া গেছে কক্সবাজারে। আমরা সেখানে ছুটে যাই। একটি রুমের খাটের উপর তার লাশ পরে ছিল।

ওই বাসার প্রতিবেশি বলেছেন শুক্রবার তারা এক সাথে বাসাতেই ছিলো। সকালে নার্গিস প্রতিবেশিদের ফোন দিয়ে বলেন নজরুল তার ফোন রিসিভ করে না একটা ডাক দিয়ে বলার জন্য। এরপর তারা গিয়ে লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

তিনি বলেন, নার্গিস যদি আমার ভাইকে খুন না করতো তাহলে সে পলাতক কেন? সেতো তার স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে আসতে পারতো, এতেই প্রমান হয় আমার ভাইকে সেই হত্যা করেছে।

অভিযোগ করে নজরুল বলেন, ‘আমার ভাইকে ওই নারী প্রতিনিয়তই মারধর করতো। সব কিছু সহ্য করে তাকে নিয় চলার চেষ্ঠা করতো। তার সব শখ পূরণ করার চেষ্ঠা করতো। পরিবারের ছোট ভাই হিসাবে তার ইচ্চার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতো না।’

কক্সবাজারে ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার সকালে লাশ নিয়ে আসা হয় হবিগঞ্জের হামিদপুর গ্রামে। নজরুলকে শেষবারের মতো দেখার জন্য আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশি ও আশপাশের গ্রামের লোকজন বাড়িতে ভিড় করেন। স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠে চারপাশ। তার এমন চলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারছেন না কেউই।

সকাল সাড়ে ১১টায় সুলতানশি সাহেব বাড়ি মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবস্থানে দাফন করা হয় নজরুলের মরদেহ। এর আগে শনিবার উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে নজরুলের ভাইয়ের সূত্রে জানা গেছে।