স্বাধীনতার ৪৫বছরও স্বীকৃতি পায়নি শহিদ ডাঃ আজাদুজ্জামান

    0
    219

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৪জানুয়ারী,বেনাপোল প্রতিনিধি : স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার হলেও শার্শা চেরিটেবল হাসপাতালের সরকারী চিকিৎসক শহিদ ডাঃ আজাদুজ্জামান শহিদ মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সিকৃতি পায়নি। অথচ বহু মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ করেননি তারা অনেকেই টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লিখিয়ে সরকারী সুবিধা গ্রহণ করছেন। তাদের সংখ্যাও কম নয়। দেশ মাতৃকার জন্য ও লাল সবুজ পতাকা সিনিয়ে আনতে অকুতভয় সৈনিকেরা অকাতরে প্রাণ দিয়েছে তাদের খবর কেহই রাখে না। গ্রাম গঞ্জের আনাছে কানাছে শত শত মুক্তিযোদ্ধা আজও ডুকরে ডুকরে কাদছে। ৪৫ বছরেও তাদের খোজ কেহই নেয়নি। উৎকোচের প্রতিযোগিতায় যারা উত্তির্ণ হয়েছে কেবল তারাই মুক্তিযোদ্ধার সম্মান পেয়েছেন।

    ১৯৭১ সালে পাক সেনাদের দ্বারা মুক্তিযোদ্ধা, ইপিয়ার, আনছার, মুজিববাহিনি ও মুজাহিদ সদস্যরা আহত হয়েছিল তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়ার অপরাধে শার্শা চেরিটেবল হাসপাতালের দায়িত্ব প্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা ডাক্তার আজাদুজ্জামান এলাকার রাজাকার বাহিনির প্রধান ততিবর রহমান খান এর নির্দেশে তৎকালিন শার্শা থানার সিনিয়র দারোগা আবুল বাসার নাভারণ ফজিলাতুন্নেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজের পেছনে নিয়ে ব্যায়নট দিয়ে খুচিয়ে, পানিতে ডুবিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে নদীর পাড়েই মাটির নিচে পুতে রাখে। তখন সন্তান সম্ভবা ডাক্তার আজাদুজ্জামানের সহ ধর্মীনি আজিজা জামান স্বামীকে খুজতে খুজতে পাগল প্রায়।

    স্বামীর সন্ধান না পেয়ে এলাকায় খুজা খুজি করতে থাকলে প্রত্যাক্ষদর্শি সাবেক শার্শা মুক্তিযোদ্ধা (ভারপ্রাপ্ত) কমান্ডার মনিরুজ্জামান (মন্টু), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সুবহান, শার্শা চেরিটেবল হাসপাতালের পাশের স্থায়ী বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক খোরশেদ আলম, বর্তমান শার্শা সমাজ সেবা অফিসে কর্মরত আব্দুস সাত্তার তৎকালীন হিলফুলফুজুল সেচ্ছাসেবি সংগঠনের সভাপতি মকলেছুর রহমান মুকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রধান শিক্ষক ডাক্তার মাওলা বক্সসহ শতাধীক প্রত্যক্ষ দর্শিরা এ প্রতিনিধিকে জানান ডাক্তার জামান শার্শা চেরিটেবল হাসপাতালের একজন সরকারী কর্মকর্তা হিসাবে যথেষ্ট সুনাম ছিল।

    তিনি একজন সৎ ও ন্যয় নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা হিসাবে স্থানীয় সাধাণ মানুষের চিকিৎসা সেবা দিতেন। ১৯৭১ সালের ২৪শে এপ্রিল যশোর ক্যান্টনমেন্টের অবোরধ ভেঙ্গে বেনাপোল সিমান্ত পর্যন্ত চলে আসে। এই সময় পাকসেনাদের হাতে ইপিয়ার, আনছার, মুজাহিদ, মুক্তিযোদ্ধাসহ অসংখ্যা সাধাণ মানুষ গুলি বিদ্ধ হয়ে আহত হয়। এসময় এক মাত্র ডাক্তার জামান আহতদের চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ্য করেন। এ ঘটনার অপরাধে ডাক্তার আজাদুজ্জামানকে এবং এলাকার প্রতিবাদি যুবক মোকলেছুর রহমান মুকুলকে সিনিয়র দারোগা আবুল বাসার তবিবর রহমান খাঁন এর নির্দেশে আটক করে নাভারন নিয়ে যায়। এবং নির্মম ভাবে নাভারণ কাছারি অফিসের পাশে বেতনা নদিতে ফেলে ডুবিয়ে, ব্যায়নট দিয়ে খুচিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে মাটির নিচে পুতে রাখে। নিরুপায় হয়ে তার স্ত্রী আজিজা জামান শার্শার বড়বাবুর নিকট স্বরণাপন্ন হলে তৎকালীন সময় ঘটনা উল্লেখ করে তবিবর রহমান খান, সিনিয়র দারোগা আবুল বাসারসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।

    যথা নিয়মে মামলাটি আদালতে গড়ালেও আসামিদের ভয়ভিতির কারণে মামলাটি বিচারাধীন অবস্থায় স্থগিত হয়ে যায়। ডাক্তার আজাদুজ্জামনের বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার ৭ নং সবদলপুর ইউনিয়নের তারা উজিয়াল গ্রামের মৃত মুন্সি শাহাদত হোসেনের পুত্র। ৩ পুত্র বিল্টু, ঝন্টু, পল্টু ও দুই কন্যা ইভা ও রিপাকে নিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটাচ্ছে মিসস আজিজা জামান। তার দাবি আমার মৃত্যুর পূর্বে আমার স্বামী শহিদ মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সিকৃতি পায় তবেই আমি মরেও শান্তি পাব।