২০টাকায় মোটরসাইকেল পাওয়ার লোভঃনিঃস্ব দিন মজুর

    0
    211

    “ ১০০ সিসি ওয়াল্টন মোটরসাইকেল, একটি সিএনটি অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন পুরষ্কার পাওয়ার লোভে সাধারন মানুষ বিশেষ করে রিক্সা শ্রমিক, শ্রমিক, দিন মজুর, ছাত্র ও ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা জন প্রতি ৫ থেকে ১০টি করে টিকেট ক্রয় করছেন। এভাবে প্রতিদিন কমলগঞ্জে আট লক্ষাধিক টাকা হারে জেলার সাতটি উপজেলা থেকে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আর পুরষ্কার দেওয়া হচ্ছে ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের ”
    আমারসিলেট24ডটকম,৩১জানুয়ারী,শাব্বির এলাহীঃ ২০ টাকায় একটি লটারীর মোটরসাইকেল পাওয়া যাবে এই লোভে কষ্টার্জিত আয়ের টাকা দিয়ে টিকেট কিনে নিঃস্ব হছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শ্রমিক, দিন মজুর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। প্রতি দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কমলগঞ্জ উপজেলা থেকে গড়ে আট লক্ষাধিক টাকা হারে পুরো জেলা থেকে প্রতিদিন অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে লটারীর আয়োজনকারীরা। লটারীর টিকেট বিক্রি বেড়ে গেলে কমলগঞ্জে স্থায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রভাব পড়েছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের।
    সরেজমিন দেখা গেছে, গত মাসাধিককাল থেকে ক্ষমতাসীন দলের মদদে মৌলভীবাজার জেলা সদর, রাজনগরের উত্তর মুন্সীবাজারের করিমপুর, মনু মুখ, ও শ্রীমঙ্গলে চলছে যাত্রাপালার আড়ালে অবৈধ জুয়া, বাম্পার, অশ্লীল নৃত্য ও লটারীর। স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের নামে এসবের আয়োজন হলেও মূলত মৌলভীবাজারের নাম করা জুয়াড়িরা এসব পরিচালনা করছেন। সকাল থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত অসংখ্য সিএনজি অটোরিক্সা ও প্রাইভেট কারে করে স্বপ্নতরী প্রতিদিন, রুপসীবাংলাসহ নানান ব্যানারে ২০ টাকা মূল্যের লটারী বিক্রি হয়।

    রাত ১১টায় লটারীর ড্র অনুষ্ঠিত হয় যাহা একটি স্থানীয় ক্যাবলের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করে টিকেট ক্রয় কারীদের বিশ্বাস অর্জন করা হয়। ২০ টাকা টিকেট কিনলে একটি নর। সম্প্রতি কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সরকারি একটি অনুষ্ঠানে মৌলভীবাজার জেলা যুবলীগ সভাপতি মো. ফজলুর রহমান তার বক্তব্যে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক চিফ হুইপ, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ এমপি’র দৃষ্টি আকর্ষন করে জেলা সদর সহ জেলার বিভিন্ন স্থানে যাত্রা, হাউজি বাম্পার ও অবৈধ লটারী বন্ধের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহবান জানান। উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ এমপি বলেন, জুয়া, হাউজি, বাম্পার ও অবৈধ লটারীর বিরুদ্ধে সর্বাতœক পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
    মোটরসাইকেল ও সিএনজি অটোরিক্সা পাওয়ার লোভে লটারীর টিকেট ক্রয় করে প্রতারিত হওয়া রিক্সা চালক অনিল, সুনিল, রফিক, দিন মজুর ইউসুফ মিয়া এ প্রতিনিধিকে বলেন, এক সপ্তাহে কষ্টার্জিত আয় থেকে ৮০০ টাকার টিকেট ক্রয় করেও কোন পুরষ্কার পাননি। অবৈধ লটারীর টিকেট বিক্রি করে সাধারন মানুষদের প্রতারিত করা ও ব্যবসায় পাওয়াব ফেলা সম্পর্কে ভানুগাছ বাজার পৌর বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশীদ ও শমশেরনগর বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারন সম্পাদক আব্দুল হান্নান বলেন, এ অবৈধ ব্যবসার তারা জোর প্রতিবাদ করছেন। এ অবৈধ ব্যবসায় লোভে পড়ে মানুষ কষ্টার্জিত টাকা ঢেলে দিচ্ছে।

    এতে নিজের ও এলাকার ব্যবসার ক্ষতি সাধন করছে। এ ব্যবসা অবিলম্বে বন্ধ করতে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ প্রশাসনের কাছে দাবী জানান। সুজা মেমোরিয়াল করেজ অধ্যক্ষ ম মুর্শেদুর রহমান বলেন জুয়া, হাউজি বাম্পার, অশ্লীল নৃত্য ও অবৈধ লটারী সামাজিক অবক্ষয়ের একটি অংশ। আর এর প্রভাব পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠঅনের শিক্ষার্থীদের উপরও। তাই অবিলম্বে তা বন্ধ করা উচিত।
    লটারীর টিকেট বিক্রিকারীদের সাথে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে তারা বলেন, মালিকের পক্ষে তারা টিকেট বিক্রি করছেন। এ বিক্রির কোন অনুমোদন আছে কিনা তা তাদের মালিক বলতে পারবেন। একজন বলেন, আপনারা অহেতুক জিজ্ঞেস করে লাভ নেই। এ বিষয়টি প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের জ্ঞাতসারেই হচ্ছে। টিকেট বিক্রয়কারীরা ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে অবৈধ জুয়া, হাউজি বাম্পার, অশ্লীল নৃত্য ও লটারী আয়োজনকারীদের নাম পরিচয় জানা যায়নি বলে তাদের বক্তব্য গ্র॥হন করা যায়নি।
    প্রকাশ্যে অবৈধ লটারীর টিকেট বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া সম্পর্কে জানতে চেয়ে কয়েক দফা কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: এনামুল হক (০১৭১৩৩৭৪৪৪১) কে মুঠো ফোনে ফোন করেও কথা বলা যায়নি।

    তবে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, এ সম্পর্কে সু-নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।