২০১৪ সালে দেশে অর্থনৈতিক সূচকের অগ্রগতি

    0
    379

    আমারসিলেট24ডটকম,০৫জানুয়ারীঃ ২০১৪ সালে দেশের বড় বড় অর্থনৈতিক সূচকের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

    এগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোচ্চ মজুদ, রেমিটেন্সের ধারাবাহিক প্রবাহ, দ্রুত রফতানি বৃদ্ধি, আমদানি হ্রাস, ফসলের বাম্পার উৎপাদন, স্থিতিশীল এক্সচেঞ্জ রেট, মূল্যস্ফীতি হ্রাস ইত্যাদি।

    এছাড়া শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণেও এক বছরে অর্থনীতি আরও সংহত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, গত বছরের ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের বর্তমান মেয়াদের ১ম বছরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকায় এ অগ্রগতি এসেছে।

    ১০ম সাধারণ নির্বাচনের অব্যবহিত পরই সরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে, ব্যবসা ও বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করে এবং অবকাঠামো ও বিদ্যুৎ সরবরাহের উন্নতি ঘটিয়ে অর্থনীতি পুনর্গঠন শুরু।

    ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করার জন্য সরকার বেশ কিছু নিয়মনীতি সহজ করেছে। বিশ্বব্যাংকের এক রিপোর্টেও একে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

    বিশ্ব প্রতিযোগিতা সূচকেও (জিসিআই) বাংলাদেশ গতবারের চেয়ে একধাপ এগিয়েছে। ১৪৪টি দেশের মধ্যে ১০৯ নম্বরে স্থান পায়। গত বছর ছিল ১১০।

    ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় ২২.৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর এটা ছিল ১৮.০৪ বিলিয়ন। তবে ১৮ ডিসেম্বর ছিল সর্বকালের সর্বোচ্চ মজুদ। এদিন ছিল ২২.৩৮ বিলিয়ন ডলার। রেমিটেন্স প্রবাহ ও রফতানি বৃদ্ধির কারণে এই রেকর্ড হয়েছে।

    ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিদেশ থেকে রেমিটেন্স আসে ১৪.৭১ বিলিয়ন ডলার। গত বছর একই সময় তা ছিল ১৩.২২ বিলিয়ন ডলার।

    বৈদেশিক মুদ্রার বিপুল রিজার্ভ ও রেমিটেন্স প্রবাহ স্থানীয় মুদ্রাকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। ১৯ ডিসেম্বর মার্কিন ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় মূল্য ছিল ৭৭.৯০ টাকা।

    গত নভেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬.২১ ভাগ। এটা গত ২২ মাসের সর্বনি¤œ। বিদায়ী বছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে মোট রফতানি আয় হয় ১২.৭৪ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরে দেশ প্রথমবারের মত ৩০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে।

    ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে রফতানি আয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩.২ বিলিয়ন ডলার। জুন মাসের শেষ নাগাদ এটা অর্জন সম্ভব বলে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন।
    বর্তমান অর্থবছরের ১ম ৪ মাসে বিগত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪.২৪ ভাগ রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু আয় ১০৪৪ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ১১৯০ মার্কিন ডলার।

    কিছু কোম্পানির শেয়ার উঠা-নামা করলেও ২০১৪ সালে স্টক মার্কেটের পরিস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, রফতানি আয় বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ চাহিদা জোরদার, ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, রেমিটেন্স প্রবাহের পাশাপাশি বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা মজুদের কারণে ২০১৫ সালে প্রবৃদ্ধি বাড়বে।
    পক্ষান্তরে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকও (এডিবি) অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। তারা তাদের আগের বক্তব্য পুনর্মূল্যায়ন করে বলেছে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৪ ভাগ। আগে বলেছিল ৬.২ ভাগ। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিডিপি) বলেছে, ২০১৪ সালে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল।

    এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং অন্যান্য সরকারি সূত্রের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যায়- অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ব্যাপারে কিছু কিছু নেতিবাচক ধারণাকে টপকিয়ে বড় বড় অর্থনৈতিক সূচকের উন্নতি হয়েছে।