আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,১৮এপ্রিল,এস কে দাস সুমনঃ প্রকৃতিগত ভাবে প্রাচিন কাল হতেই মানুষ সামাজিক জীব । মানুষের জীবনের ব্যাপক চাহিদার পরিপেক্ষিতে এবং ঈশ্বর প্রদত্ত শেষ্ঠত্ত উপাদিতে ভূষিত মানুষ প্রতিনিয়ত নিজেকে সবার উর্ধ্বে নিয়ে যাবার প্রচেষ্টায় লিপ্ত। মানুষের দূরভেদ্য অসম ক্ষুধা, লোভ, লালসা, হিংসা, মানুষ কে সর্বদা ই বশীভূত করে রাখে।
বর্তমান বিশ্বের ক্ষুধা দারিদ্রতা বর্ণবৈষম্য নিপীড়ন সন্ত্রাসবাদ আজ জটিল পরিস্থিতির তৈরি করছে।
জঙ্গিবাদ বা টেরোরিজমকে ঘিরেই বর্তমান বিশ্বে তৈরি হচ্ছে জটিল বাস্তবতা। তাই এখন যৌক্তিক কারণেই জগতের অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি জঙ্গিবাদ নিয়ে ব্যাপক বিশ্লেষণ গুরুত্ব পাচ্ছে। এর সূত্র ধরে ও বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের পরিপ্রেক্ষিতে জঙ্গিবাদের নানা শ্রেণিবিভাগও তৈরি করেছে দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী । যেমন সাইবার, নারকো, নিউক্লিয়ার, বায়ো, রাজনৈতিক, সেপারেটিস্ট, ধর্মীয় জঙ্গিবাদ, সামাজিক নিপীড়ন, বর্ণবৈষম্য, নৈতিক অবক্ষয়, পারিবারিক অশান্তি ও নির্যাতন, যৌন নির্যাতন, রাজনৈতিক বৈষম্য ইত্যাদি।
মানুষ সমষ্টিগত ভাবে সামাজিক জীব হলেও বিভিন্ন নিপীড়ন ও বৈষম্যের কারনে নিজেকে আড়াল করে। প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা পারিবারিক ও সামাজিক কারনেও জঙ্গিবাদের বীজ ছড়ানো হচ্ছে,
পৃথিবীতে যুগে যুগে মানুষের জীবন মান উন্নত করার জন্য ( অবতার ) ঈশ্বর প্রদত্ত দূত দের আগমন ঘটে এবং তাদের দেখানো পথেই মানুষের জীবন যাপনের দিক নির্দেশনা এবং সাম্য -মৈত্রীর বানী নিয়ে যুগে যুগে বিভিন্ন ধর্মেরও আগমন ঘটেছে এই ধরায়। মধ্যপ্রাচ্য এবং ভারতবর্ষ হচ্ছে ধর্মের আদিভূমি, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধর্মের নামে মানুষ রক্তগঙ্গা বইয়ে দিয়েছে আবার এই ধর্মই মানুষকে করেছে সুসংহত, মানবতাবাদী।
জঙ্গিবাদ সৃষ্টির প্রধান কারণগুলো কোন পরিস্থিতিতে তৈরি হয়, তার ব্যাখ্যা অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে অপরাধ জগতের অজস্র তথ্যবৃত্তান্ত
সমগ্র পৃথিবী আজ জঙ্গিবাদের কড়াল গ্রাসে নিমগ্ন, এক শ্রেণীর ধর্ম ব্যাবসায়িদের বেক্তিগত রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য জঙ্গিবাদকে উস্কে দিচ্ছে।
ধর্মীয় উগ্রতা জঙ্গিবাদের পরিবেশ সৃষ্টিতে অনুকূল ভূমিকা তৈরি করতে অবশ্যই সহায়ক হয়।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে শুধুমাত্র ধর্মীয় উন্মাদনা বা ধর্মান্ধতাই জঙ্গিবাদের মূল কারন নয়, পৃথিবীর নানা ধর্মমতে এমন অজস্র অনুসারী রয়েছেন, যাঁরা নিজেরা ধর্মান্ধ হয়েও কোনো ধরনের সহিংস নীতির প্রতি মোটেই বিশ্বস্ত নন।
বিশ্ব জঙ্গিবাদ মানবসমাজকে ঠেলে দিতে চাইছে এমন একটি অন্ধকার সময় ও স্থানের দিকে, যেখানে গণতান্ত্রিক সমাজের ধারণাগুলো বিলুপ্ত, জঙ্গি প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্তি অর্জন, অর্থ লগ্নি হচ্ছে সমাজের উপর তলার মানুষ গুলোর কলকাঠিতে, এ ক্ষেত্রে ব্যাংক, বীমা, বৈদেশিক সাহায্য বেক্তিগত অর্থায়ন জঙ্গিবাদের মেরুদন্ড তৈরিতে সহায়ক হচ্ছে।
আমাদের দেশের মত উন্নয়নশীল দেশে মানুষ এখনো দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত । মানুষের মৌলিক অধিকার গুলো ভূলুণ্ঠিত, বিশ্ব বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীটি হয়ত অর্থনৈতিক ভাবে অসচ্ছল পরিবারের সন্তান, তার নিত্য নৈমিত্তিক চাহিদা গুলো পরিবার থেকে পূরন সম্ভব নয় সে ক্ষেত্রে ধর্ম ব্যাবসায়িদের সরব উপস্থিতি মিথ্যা প্রলোভন অর্থনৈতিক সাচ্ছন্দ্য পেতে বিশ্ব বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রটি পা বাড়াচ্ছে জঙ্গিবাদে অথবা ধনকুবের পরিবারের সন্তান পারিবারিক বৈষম্যের শিকার হয়ে সহপাঠী শিক্ষক বা ধর্মান্ধতার শিকলে আটকা পড়া কিছু স্বার্থবাদী দের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে বেছে নিচ্ছে বিকল্প পন্থা।