আজ ভারতের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ শহীদ দিবস

    0
    218

    আমারসিলেট24ডটকম,০৬ডিসেম্বরঃ ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের এই দিনে চরমপন্থি হিন্দুরা শহীদ করেছিল ভারতের উত্তর প্রদেশের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ।

    ২১ বছর আগে ১৯৯২ সালের এই দিনে সভ্য জগতকে মর্মাহত করে ভারতের উত্তর প্রদেশের ফয়জাবাদে অবস্থিত ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদের অবমাননার পর তা ধ্বংস করে দেয় হিন্দুত্ববাদী একদল উগ্র হিন্দু।

    ষোড়শ শতকের ঐতিহাসিক এই মসজিদটির নির্মাতা ছিলেন ভারত-বর্ষের মোঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহির উদ্দিন মুহাম্মাদ বাবরের ইরানি মন্ত্রী মির বাকি। ১৫২৮ সালে নির্মিত এই মসজিদটি ছিল ভারি সুন্দর তিনটি গম্বুজ-শোভিত এবং চমৎকার আরবী ও ফার্সি লিপি-খচিত মোঘল স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন।

    তিন শতক পর এক ব্রিটিশ কর্মকর্তা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এই দাবি বা কল্পনা নথিবদ্ধ করেন যে, মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপর। অযোধ্যায় শিয়া মুসলিম রাষ্ট্রের পতনের পর এই দাবি প্রচার করে ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠী। অথচ হিন্দু ঐতিহাসিকদের লিখিত রাজপুত-ইতিহাসেও কখনও এমন দাবি করা হয়নি।

    দাঙ্গা বাধানোর ষড়যন্ত্রমূলক ওই দাবি তোলার কয়েক দশক পর একদল  জঙ্গিবাদী হিন্দু গুণ্ডা জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করার লক্ষ্যে গোপনে এই মসজিদের একটি অংশে স্থাপন করে কয়েকটি মূর্তি। এরপর আদালতের রায়ের মাধ্যমে মসজিদটিকে অন্যায়ভাবে ভাগ করে দেয়া হয় এবং আরো পরে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয় ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদে।

    ভারতের একদল অসাধু রাজনীতিবিদের উস্কানিতে উগ্র হিন্দুরা এই দাবি তোলে যে, মসজিদটি নির্মিত হয়েছে রূপকথায় উল্লেখিত দেবতা রামের জন্মস্থানের ওপর।অবশেষে আজকের এই দিনে উগ্র হিন্দুরা মসজিদটি ধ্বংস করে ফেলে। ফলে গোটা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা এবং এতে নিহত হয় দুই হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষ যাদের বেশিরভাগই ছিল মুসলমান।

    ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অনুসন্ধানে এই মসজিদে বা তার আশপাশেও মন্দির তো দূরে থাক্ অন্য কোনো প্রাচীন স্থাপত্যের চিহ্ন বা নিদর্শনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের আদালত ধ্বংস-করে-দেয়া বাবরি মসজিদের জমির মাত্র এক তৃতীয়াংশ স্থানের ওপর একটি মসজিদ নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে এবং বিতর্কিত ওই রায়ে বাদবাকি স্থান একটি মন্দির নির্মাণের জন্য খালি রাখতে বলা হয়েছে।

    ভারতের ২২ কোটি মুসলমান দেশটির সুপ্রিম কোর্টের এই রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বাবরি মসজিদের পুরো জমি কেবল মসজিদ নির্মাণের জন্য ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে আপিল করেছেন যাতে সেখানে কেবল এক আল্লাহরই ইবাদত করা যায়।

    ভারতের মুসলমানরা মনে করেন ২১ বছর পরও বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সুবিচার পাইনি তারা।