আদর্শ মানুষ গঠনে মহানবীর আদর্শের বিকল্প নেই:আওলাদে রাসুল আল্লামা সাবির শাহ্

0
208

এস এম সুলতান খান: পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপলক্ষে আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাষ্ট ঢাকার উদ্যোগে আজ মোহাম্মদপুর এলাকায় জশনে জুলুছ র‌্যালী বের হয়।
জুলুছ (র‌্যালী) পরবর্তী মাহফিলে সমাজের সত্যিকারের আদর্শবান, নৈতিকবোধ সম্পন্ন ও দেশ প্রেমিক দ্বীনদার মানুষ গড়ার জন্য প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লামের অনুপম আদর্শ অনুসরণ করাই যথেষ্ঠ বলে মন্তব্য করেছেন পীর আল্লামা সাবির শাহ্ (মুদ্দা জিল্লুহুল আলী)।
আজকের র‌্যালীটি ঢাকার মোহাম্মদপুরস্থ কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া আলিয়া (কামিল) মাদ্রাসা হতে আরম্ভ হয়ে শাহজাহান রোড, ইকবাল রোড, আসাদ এভিনিউ, শিয়া মসজিদ, রিং রোড, শ্যামলী সড়ক সমূহ প্রদনি করে পুনরায় মাদ্রাসা ময়দানে গিয়ে বিশাল মাহফিলে পরিণত হয়। জুলুছের নেতৃত্ব এবং মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ৪১ তম আওলাদ হযরতুল আল্লামা আলহাজ সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মুদ্দা জিল্লুহুল আলী)। প্রধান অতিথি ছিলেন পীর আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মুদ্দা জিল্লুহুল আলী) এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজাদা আলহাজ সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসিম শাহ্ (মুদ্দা জিল্লুহুল আলী)।
ড. মাওলানা মুহাম্মদ নাসির উদ্দিনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি পীর আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ আরও বলেন, এক দিকে সন্ত্রাসবাদ অন্য দিক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার আঘাতে বর্তমান পৃথিবীর মানুষ আজ দিশেহারা। শান্তির খোঁজে ছুটছেন মানুষ। মৌলিক অধিকার বঞ্চিত পৃথিবীর অধিকাংশ জনগোষ্ঠী। সম্মদের পাঁহাড় করছে কিছু মানুষ। অন্যদিকে অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা ও বাসস্থানের অভাবে আছে বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ জণসাধারণ। অন্যায়ভাবে যুদ্ধ চাপিয়ে প্রতিবছর শরণার্থী করা হয় অসংখ্য মানুষকে। অনেক জায়গায় মুসলিম নিধন ঘটে নীরবে। অন্যদিকে, নৈতিক ও যথাযথ ধমীয় শিক্ষা ও অনুশীলনের অভাবে সমাজে খুন-খারাবি, ঘুষ-দুর্নীতি, নারী-নির্যাতন ইত্যাদি লেগেই আছে। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ ও শিক্ষার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন। এই শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের অন্তরাত্মা পরিশুদ্ধ হয় এবং ইহলোক ও পরোলোকে শান্তি নসিব হয়।
বিশেষ অতিথি শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসিম শাহ (মুদ্দা জিল্লুহুল আলী) বলেন, রাসুলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ থেকে বিচ্যুতির কারণেই মূলত পৃথিবীতে অশান্তি নেমে এসেছে। যারা ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে নবী অলিদের প্রতি বিদ্বেষী করে তোলে হাজার বছর ধরে চলে আসা ইসলামী অনুষ্ঠানমালা যেমন ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী, শবে বরাত, শবে মেরাজ ও ফাতেহা ইত্যাদির বিরোধীতা করে, তাদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকা দরকার। তিঁনি আরও বলেন, আল্লাহ পাকের নেয়ামত সমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সৃষ্টি। তাঁহার সৃষ্টিতে ধন্য হয়েছে সমগ্র সৃষ্টিজগত। যাঁর সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ বলেন, আপনাকে প্রেরণ করা হয়েছে সমস্ত সৃষ্টি জগতের রহমত হিসেবে (আল-কোরআন)। আল্লাহর রহমত ও করুণাপ্রাপ্তীর কারণে খুশি উদযাপন করা কোরআনের নির্দেশ। নবীজির শুভ জন্মলগ্নে দাসীকে মুক্ত করে আনন্দ প্রকাশ করায় আবু লাহাবের মত অভিশপ্ত কাফেরও প্রতি সোমবার ভয়াবহ শাস্তি হতে কিছুটা পরিত্রাণ পায় বলে হাদিসে আছে। একজন মুসলমান নবীজির শুভাগমনে আনন্দিত হলে তথা ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পালন করলে নিশ্চিতভাবে মহান রবের দরবারে উভয় জাহানে পুরস্কৃত হবেন। মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাষ্ট ঢাকার চেয়ারম্যান আলহাজ মো. শহীদ উল্লাহ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আঞ্জুমানের সম্মানিত সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ মুহাম্মদ মহসিন, পিএইচপির চেয়ারম্যান সুফী মিজানুর রহমান, সেক্রেটারী জেনারেল আলহাজ মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ঢাকা আঞ্জুমানের সেক্রেটারী মো. মিজানুর রহমান। মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ও ঢাকা আঞ্জুমানের নেতৃবৃন্দ।
পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তাৎপর্য তুলে ধরে বয়ান করেন, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া আলিয়া (কামিল) মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুফতি আবুল কাশেম মুহাম্মদ ফজলুল হকসহ দেশ বরেণ্য ওলামায়েকেরাম। পরিশেষে খতমে গাউসিয়া ও মিলাদ শরীফ সমাপান্তে বাংলাদেশসহ সমস্ত মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় দোয়া করেন হযরতুল আল্লামা আলহাজ সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্।