আদালত খালেদার আবেদন মঞ্জুর করলেনঃপরবর্তী তারিখ ২৪নভেম্বর

    0
    247

    আমারসিলেট24ডটকম,নভেম্বরঃ উচ্চ আদালতে অপেক্ষমাণ থাকায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্টের দুর্নীতির মামলায় বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ বকশিবাজারের আদালতে স্থগিত রাখার আবেদন করেছেন বিএনপির নেত্রী ও দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন এবং সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ২৪ নভেম্বর নির্ধারণ করেন। আজ বেলা ১১টায় বকশিবাজারের বিশেষ আদালতে উপস্থিত হন বেগম জিয়া।
    বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, এডভোকেট জয়নাল আবেদীন ও  সানাউল্লাহ মিয়া। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহানগর আহবায়ক মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলুসহ কেন্দ্রীয় নেতারা এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
    এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্টের দুর্নীতির মামলায় বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের অস্থায়ী আদালতে হাজিরা দিতে আজ রবিবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে গুলশানের বাসা থেকে বের হন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। এদিকে রবিবার ঢাকার ৩য় বিশেষ জজ বাসুদেব রায়ের আদালতে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক হারুন অর রশিদের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন থাকলেও তা পিছিয়ে আগামী ২৪ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। ঢাকার বকসিবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত অস্থায়ী আদালত ভবনে এ দুটি মামলার বিচার চলছে। এ মামলায় খালেদা ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অপর ৫ আসামি হলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান। এর মধ্যে তারেক রহমান উচ্চ আদালতের জামিনে গত ৬ বছর ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আছেন জামিনে। বাকি দুজন পলাতক।
    জানা যায়, বিএনপির নেত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এ দুটি মামলায় গত ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করে আদালত। এর মধ্যে এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদা ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ৬জন এবং জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আরো ৩জন আসামি হিসাবে রয়েছেন। এ দুই মামলায় অভিযোগ গঠনকারী বিচারকের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়া আপিল বিভাগে গেলেও তা খারিজ হয়ে যায়।
    মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১১ সালের ৮ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ। তেজগাঁও থানার এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। এরপর ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ ৪জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত  কর্মকর্তা। এ মামলার অপর আসামিরা হলেন, খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। তবে হারিছ মামলার শুরু থেকেই পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে। এছাড়া বাকি ২ আসামি জামিনে রয়েছেন।
    জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অন্য মামলাটি দায়ের করে। এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়। দুদকের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ ২০১০ সালের ৫ আগস্ট বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন।
    প্রসঙ্গত জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়েরকৃত মামলায় আদালতে হাজিরা হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর আগে ২৬ অক্টোবর নিরাপত্তা জনিত কারণ দেখিয়ে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হননি। তার আগে গত ১৪ অক্টোবর বেগম খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল শুনানির জন্য ২৭ নভেম্বর ধার্য করেন চেম্বার আদালত। পরে দুদক লিভ টু আপিল শুনানি এগিয়ে আনার আবেদন করে। সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর এ দুটি মামলায় আদালতে হাজিরা দেন খালেদা জিয়া। এরপর কয়েক দফা তারিখ পড়লেও নিরাপত্তার কথা বলে এবং উচ্চ আদালতে লিভ টু আপিল শুনানির অপেক্ষায় থাকার কারণ দেখিয়ে তিনি শুনানিতে অনুপস্থিত থাকেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদন নাকচ করে তার অনুপস্থিতিতেই একটি মামলায় বাদীর আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ  নেয়া হয়।