ইতালীয় নাগরিক হত্যায় বিএনপি নেতা জড়িত থাকতে পারে

    0
    208

    রেড অ্যালার্ট জারির সমালোচনা করে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,৩০সেপ্টেম্বর: ইতালীয় নাগরিক হত্যায় বিএনপি নেতা জড়িত থাকতে পারে  বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে তিনি গুলশানের কুটনীতিক পাড়ায় কয়েকটি দেশের রেড অ্যালার্ট জারির সমালোচনা করেন।

    স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমেরিকার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশ মিশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন বিদেশি নাগরিক মারা যাওয়ায় সত্যি আমরা দুঃখিত। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। কিন্তু ওই ঘটনার পরপরই আমরা বিএনপির এক নেতাকে (আবদুল মঈন খান) তৎপর দেখলাম। তাতে সন্দেহ হয়। তাকে ধরে ইন্টেরোগেশন করা উচিত, এই ঘটনার সাথে তার কোনও সম্পৃক্ততা আছে কি না? দেশে ফিরে এসে এ ঘটনায় ওই বিএনপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

    শেখ হাসিনা বলেন, একটি রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠী মানুষ পুড়িয়ে মারে। মানুষ খুন করে একটা অস্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়।

    এই হত্যাকাণ্ড ইস্যুতে কূটনীতিকপাড়ায় রেড এ্যালার্ট জারির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী উল্টো সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জানি না। একজন বিদেশী নিহত হলে যদি নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়, তাহলে বিদেশী মিশনগুলো রেড এ্যালার্ট জারির কথা বলে। কিন্তু নিউইয়র্কে কয়েক দিন আগে আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুলসহ এ পর্যন্ত অনেক বাংলাদেশী নিহত হয়েছেন। তাতে কি নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বলে আমাদের দূতাবাসগুলো রেড এ্যালার্ট জারি করেছে?’

    প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলার কারণে দেশে ক্রিকেট খেলার কোনো প্রতিবন্ধকতা হবে না। তবে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল না এলে সেটা তাদের বিষয়।

    এ সময় বিরোধী দল কোনটি—এ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে বিরোধী দল রয়েছে।

    বিএনপির পক্ষ থেকে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবির বিষয়টি কীভাবে দেখছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে মধ্যবর্তী কিংবা আগাম নির্বাচনের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই বলেও জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালের আগে আগাম নির্বাচন কেন? আমরা যে উন্নয়ন করছি এটা পছন্দ হচ্ছে না। হ্যাঁ, যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন পছন্দ করবে না তারা আগাম নির্বাচনের কথা বলে চিৎকার করবে।’

    গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গুলশান-২-এর ৯০ নম্বর সড়কে ইতালির নাগরিক সিজার টাভেলা গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনার পর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে বার্তা দেয় নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আইএসআইএল।

    গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা জানি, পশ্চিমা বিশ্বে এই জুজুর ভয় দেখিয়ে আজকের সরকার হয়তো অনেক কিছু লুফে নেওয়ার চেষ্টা করছে। হয়তো সাময়িকভাবে তারা লাভবান হতেও পারে। কিন্তু তারা যে সেটা পারবে না এবং সেই জুজুর শিকার তারা নিজেরাই হবে, তার প্রমাণ ঘটে গেছে গতকাল সন্ধ্যায়। একজন বিদেশি নাগরিক এ দেশের ক্ষয়িষ্ণু সমাজব্যবস্থার প্রতিফলন হিসেবে জীবন হারিয়েছেন। আওয়ামী লীগের জুজুর ভয় দেখানোর সুযোগে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল বিদেশি নাগরিককে হত্যা করে ফায়দা আদায়ের চেষ্টা করতে পারে।’

    উল্লেখ্য, ইতালীয় নাগরিক খুন হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, আমেরিকা ও কানাডা বাংলাদেশে তাদের নাগরিকদের সতর্ক করে রেড অ্যালার্ট জারি করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ একে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন।ইরনা

    অপরদিকে,কূটনীতিক পাড়ায় বিদেশী নাগরিক হত্যা পূর্বপরিকল্পিত বলে দাবি করে সরকারের সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “দেশী-বিদেশী কুচক্রীমহল তৎপর রয়েছে।”

    ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলীতে বিআরটিএ এর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিদর্শনকালে বুধবার বেলা পৌনে ১২টায় এ দাবি করেন মন্ত্রী।

    গত সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে গুলশান-২-এর ৯০ নম্বর সড়কে ইতালির নাগরিক চেসারে তাভেলা গুলিতে নিহত হন।