ঈদের দিনের প্রস্তুতি ও জামাত আদায়ের সংক্ষিপ্ত রূপরেখা

0
132

মুসলিমদের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠান গুলোর মধ্যে হচ্ছে একটি অনুষ্ঠান ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতরের দিন জামাতে অংশগ্রহণ করার জন্য রয়েছে কিছু নিয়ম কানুন।
নিয়ম কানুনগুলো সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে-ফজরের নামাজ অবশ্যই আদায় করতে হবে এর জন্য অন্যদিনের তুলনায় সকালে ঘুম থেকে জেগে মিসওয়াক করে যথাসম্ভব গোসল করে শরীয়তসম্মত এবং সামর্থ অনুপাতে উত্তম পোশাক পরিধান করে সুগন্ধি ব্যবহার করা উত্তম।
ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাবার আগে মিষ্টি জাতীয় যেমন খেজুর অথবা মিষ্টি জাতীয় ফল বা মিষ্টি দ্রব্য ইত্যাদি সামান্য খেয়ে সকাল সকাল ঈদগাহে রওনা দিবেন।
ঈদুল ফিতরের ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সদকায়ে ফিতর আদায় করবেন।
এবং ঈদের নামাজ ঈদগাহে আদায় করার চেষ্টা করবেন যদি না কোন প্রাকৃতিক সমস্যা তৈরি হয়।
যে রাস্তায় ঈদগাহে যাবেন, সম্ভব হলে ফেরার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরবেন।
ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া সুন্নত।
ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাবার সময় আস্তে আস্তে তাকবীর পড়তে থাকবেন।
যাওয়া আসার সময় একে অপরকে সালাম ও মুবারকবাদ দেওয়া।
ঈদের নামাজের পর মসাফাহা, মুয়ানাক্বাহ
( কোলাকুলি) করবেন।
ঈদের দিন যথাযথভাবে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য নিয়ত, নিয়ম এবং তাকবির তুলে ধরা হলো-
نَوَيْتُ أنْ أصَلِّي للهِ تَعَالىَ رَكْعَتَيْ صَلَاةِ الْعِيْدِ الْفِطْرِ مَعَ سِتِّ تَكْبِيْرَاتِ وَاجِبُ اللهِ تَعَالَى اِقْتَديْتُ بِهَذَا الْاِمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اللهُ اَكْبَرْ
উচ্চারণ: ‘নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকাআতাই সালাতিল ইদিল ফিতরি মাআ সিত্তি তাকবিরাতি ওয়াঝিবুল্লাহি তাআলা ইকতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াঝঝিহান ইলা ঝিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি ‘আল্লাহু আকবার’।’
অর্থ: আমি ঈদুল ফিতরের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে এ ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি- ‘আল্লাহু আকবার’।
ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম:-
ইমামের সঙ্গে তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে উভয় হাত বাঁধা।
২. তাকবিরে তাহরিমার পর ছানা পড়া-
‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুক।
এরপর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেয়া।
এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকা।
প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেয়া।
তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত তাকবিরে তাহরিমার মতো বেঁধে নিতে হবে।
আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়া
সুরা ফাতেহা পড়া
সুরা মিলানো। এরপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সেজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাত শেষ করা।
দ্বিতীয় রাকাত-
বিসমিল্লাহ পড়ে সুরা ফাতেহা পর
সুরা মেলানো।
সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেয়া।
প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেয়া।
তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত তাকবিরে তাহরিমার মতো বেঁধে নিতে হবে।
এরপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।
এবং সেজদা আদায় করে
শেষ বৈঠকে বসে তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়া মা’সুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা। অনুষ্ঠানে মুসল্লিদেরকে ইমাম ও মোকাব্বিরকে অনুসরণ করতে হবে এবং ইমাম সাহেবকে নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
নামাজের সালাম ফেরানোর পর তাকবির পড়তে হবে নিম্নে তাকবীর দেওয়া হল:-

اَللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَر لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَروَلِلهِ الْحَمْد
উচ্চারণ : ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ্।’
নামাজের পর ইমাম সাহেবের দুটি খুতবা দেওয়ার সময় মুসল্লিদের চুপ থাকতে হবে
ঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম খুতবা দেবে আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবেন।
ঈদের নামাজের তাকবির পড়া-
ঈদের চাঁদ দেখার পর থেকে অর্থাৎ ৩০ রমজান ইফতারের পর প্রথম কাজই হচ্ছে তাকবির তথা আল্লাহর কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন করা। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে তাকবির পড়া। এটিই ঈদের প্রথম কাজ। আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমেও তাকবির পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন এভাবে-
وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
‘আর তোমাদের আল্লাহ তাআলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।’( সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫)
তাকবির হলো-
اَللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَر لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَروَلِلهِ الْحَمْد
উচ্চারণ : ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’ ঈদের জামাতের অনুষ্ঠান শেষে এক মুসল্লী অপর মুসল্লির সাথে হাসিমুখে সালাম বিনিময় করবেন এবং পবিত্র রমজান থেকে শিক্ষা করা ধৈর্য সহকারে পরবর্তী রমজান পর্যন্ত নিজেকে তৈরি করে নিবেন। আল্লাহ আমাদের প্রতি সহায় হোন। আল্লাহ ও রাসূল অধিকতর জানেন।