আমার সিলেট ডেস্ক: দেশের রাজধানী ঢাকায় তিন দিনের সুন্নাতে ভরা আন্তর্জাতিক ইজতেমা আগামি ১৪ ফেব্রুয়ারি-২০২৪ (বুধবার) থেকে শুরু হবে এবং শেষ হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি বা’দ জুম’আ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে।
পবিত্র কোরআন ও সুন্নাত প্রচারের বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠন দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশের উদ্যোগে রাজধানীর এয়ারপোর্ট সংলগ্ন কাওলা (আশিয়ান সিটি) ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে তিন দিনের এ ইজতেমা।
১৪ ফেব্রুয়ারি ফজর নামাজের পরে শুরু হবে ইজতেমা। শেষ হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি জুমার নামাজ শেষে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে। দেশবিদেশের বরেণ্য আহলে হক তথা সুন্নি মতাবলম্বী স্কলার, আলেমে দ্বীন তিন দিনের ইজতেমায় ইসলামের মৌলিক বিষয়, আকায়েদ ও আমল নিয়ে সারগর্ভ বয়ান করবেন। দেশের লাখো মুসল্লি এ ইজতিমায় যোগ দেবেন বলে আশা করছেন ইজতেমা সংশ্লিষ্টরা।
তিনদিনের সুন্নাতে ভরা এ ইজতেমার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশের জিম্মাদার (মিডিয়া বিভাগ) মুফতি জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী আত্তারী।
গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আশিয়ান সিটি ইজতেমা ময়দানে এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ইজতেমা কর্তৃপক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, ইতোমধ্যে কাওলা (আশিয়ান সিটি) ময়দানজুড়ে টানানো হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। পুলিশ চেকপোস্ট, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইজতেমা ময়দানের প্রবেশপথে বসানো হয়েছে বিশেষ চেকপোস্ট ও পাঁচটি ওয়াচ টাওয়ার। আগত মুসল্লিদের তল্লাশি করে মাঠে প্রবেশ করানো হবে।
পুলিশ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে দাওয়াতে ইসলামীর কয়েকশ নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী। এ ছাড়া মুসল্লিদের জন্য অজু, গোসলসহ প্রয়োজনীয় খাবারের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা থাকছে। পিডিবির সহায়তায় দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশের জিম্মাদার (আন্তর্জাতিক বিভাগ) আলহাজ মুহাম্মদ কামাল আত্তারী, ইজতেমা জিম্মাদার ও দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশ (সাধারণ সম্পাদক) ছিলেন সরফরাজ আশরাফী, বাহাদুর আত্তারী, মাহমুদুল হক কাদেরী, কেন্দ্রীয় সদস্য নাইমুল হায়দার কাদেরী, ইমতিয়াজ কাদেরী প্রমুখ উলামায়ে কেরাম।
দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশের জিম্মাদার (মিডিয়া বিভাগ) মুফতি জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী আত্তারী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী, সুফিবাদ ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বিদায় বিশ্বাসী, বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক সংগঠন হলো দাওয়াতে ইসলামী। সারাবিশ্বের মতো এ দেশে ২০১৫ সাল থেকে তিন দিনের এ ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ইজতেমায় কোরআন, সুন্নাহ, ইজমা-কেয়াসের ভিত্তিতে ইমান-আক্বিদা ও আমল সম্পর্কে দিনরাত বয়ান করা হবে। কীভাবে নামাজ পড়তে হবে, ইসলামের ফরজ, সুন্নাত, নফল এবাদত কীভাবে করতে হয় দালিলিক প্রমাণ দ্বারা হাতে-কলমে মুসল্লিদের শিখিয়ে দেওয়া হবে। ইসলাম শান্তির ধর্ম, শান্তির পথে ইসলামের দিকে মানুষকে আহ্বান করা, জিহাদের নামে জঙ্গিবাদের যে স্থান নেই– এ বিষয়টি জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক সারগর্ভ আলোচনা হবে।
দেশের বরেণ্য সুন্নি ওলামায়ে কেরাম ও মোবাল্লিগরা এখানে আলোচনায় অংশ নেবেন। প্রতিদিন বয়ান শেষে মিলাদ (দ:) মাহফিল, কিয়াম ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দেশ, জাতি ও মুসলিম বিশ্বের জন্য দোয়া করা হবে। সারাদেশ থেকে ইজতেমায় লাখো আশেকে রাসুলের ঢল নামবে বলেও জানান তিনি।
দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশের জিম্মাদার (আন্তর্জাতিক বিভাগ) আলহাজ মুহাম্মদ কামাল আত্তারী বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে এ ইজতিমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ইজতেমা শেষে মুসল্লিরা ১২ দিন, ৩০ দিন, ৬৩ দিন, ৯২ দিন ও ১২ মাসের মাদানি কাফেলায় বের হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সফর করে ইলমে দ্বীন প্রচার করবে এবং মানুষকে ইসলামের সিরাতুল মুস্তাকিমের দিকে দাওয়াত দিবেন।
উল্লেখ্য, দাওয়াতে ইসলামী নামে সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিকভাবে প্রচার ও প্রসার করে যাচ্ছেন পৃথিবীব্যাপী।
