শ্রীমঙ্গল ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সফলতায় বেঁচে গেল গর্ভবতী সকিনা!

0
27
শ্রীমঙ্গল ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সফলতায় বেঁচে গেল গর্ভবতী সকিনা!(ইনসেটে রোগীদের চিকিৎসা চলছে)

আমার সিলেট রিপোর্ট: শ্রীমঙ্গল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সূত্রে এক অসম্ভবকে সম্ভব করার কাহিনী বেশ আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছে।

ঘটনার পূর্ণ বিবরণ থেকে জানা যায়,গত ২০এপ্রিল, শনিবার সকাল ৯ টা বেজে দশ মিনিট,ডলুছড়া নিবাসী ৩২ বছর বয়সী ছয় মাসের গর্ভবতী সখিনা বেগমকে প্রায় নিস্তেজ অবস্থায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ইমারজেন্সিতে নিয়ে আসেন তার স্বামী বাবুল মিয়া।
বিস্তারিত জিজ্ঞাসায় জানা যায়, ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় সখিনা বেগমকে সাপে কাটে, হাসপাতালে না এনে ওঝার শরণাপন্ন হয়ে পার করে দেন মূল্যবান ১২/১৪ ঘন্টা। গ্রাম্য ওঝার অপচিকিৎসার শিকার হয়ে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন রোগীনী জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।
ডিউটিরত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সম্রাট কিশোর পোদ্দার রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিষধর সাপের কামড় বলে নিশ্চিত হন।
ইতিমধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী উপস্থিত হলে তার তত্ত্বাবধানে রোগীর অভিভাবকদের কাউন্সিলিং করে সব রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রথম ডোজ এন্টিভেনম প্রয়োগ করা হয়।অ্যান্টি ভেনম চলাকালে গাইনী বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রোকসানা পারভীন গর্ভবতী মায়ের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।

প্রথম ডোজ এন্টিভেনম দেয়ার পরও রোগীর অবস্থা অপরিবর্তিত থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরীর নির্দেশে দ্বিতীয় ডোজ এন্টিভেনম প্রয়োগ করা হয়।
এরই মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোর্শেদ হাসপাতালে উপস্থিত হন এবং রোগীটিকে পর্যবেক্ষণ করে সার্বিক দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
এক পর্যায়ে দ্বিতীয় ডোজ এন্টিভেনম দেওয়ার পর রোগীর অবস্থার উন্নতি পরিলক্ষিত হয়।রোগী নিজের সম্পূর্ণ নাম ঠিকানা বলতে পারছিলেন এবং পরিবারের সবাইকে চিনতে পারছিল। কিন্তু রোগীর রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা উঠানামা করায় এবং শ্বাস নিতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছিল বিধায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সিভিল সার্জনের নির্দেশে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় এবং রোগীর জন্য আইসিইউসহ সকল ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়।

সূত্রে জানা যায়, সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবারো এন্টিভেনম প্রয়োগ করা হয়, রোগীর শরীরে বিষের প্রতিক্রিয়াজনিত লক্ষণগুলো কমতে শুরু করে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রোগী বর্তমানে সুস্থ আছে এবং স্বাভাবিক খাবার দাবার খেতে পারছে।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট মহলের নেতৃবৃন্দ শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই সাহসী পদক্ষেপের প্রশংসা করেন কেননা সময় মত দুই ডোজ এন্টিভেনম এই গর্ভবতী মাকে দিতে না পারলে হয়তো বাঁচানো সম্ভব হতো না।
সর্বোপরি শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডঃ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সম্রাট কিশোর পোদ্দার, মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রোকসানা পারভীন (গাইনী বিভাগ), মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শারমিন আক্তার, সিনিয়র স্টাফ নার্স,ওয়ার্ড বয় সহ-সংশ্লিষ্ট সকলকে এই অসাধারণ টিম ওয়ার্ক করে প্রশংসিত হন।