উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা:গ্রেপ্তার-৮

    0
    252

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,০৪জুন,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের দুই পক্ষে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান শামছুল আলম ঝুনু মিয়া সহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শনিবার কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে জামালগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন, মামলা নং ১। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২ জুন শুক্রবার বিকালে জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের স্কুল মাঠের জি.সি.সি. রাস্তায় উপজেলা চেয়ারম্যান শামছুল আলম ঝুনু মিয়া ও সদর ইউপির সাবেক মেম্বার কামরুল ইসলামের লোকজনের সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে কামরুল ইসলামের পক্ষে ২২ জন গুরুতর আহত হয়ে জামালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হলে ১০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। উপজেলা চেয়ারম্যান পক্ষে ৭ জন আহত হয়ে জামালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় থানা পুলিশ রাতেই ৭ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটককৃতরা হল, গোলাম মৌলা (৩০), লাফু মিয়া (৩০), রুহাত হোসেন (১৮), রতন মিয়া (৩০), মো. রুমেল মিয়া (২৪), শুভ মিয়া (১৬)। শনিবার তাদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ থাকায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।

    জানা যায়, হালির হাওরের ছাতিধরা গ্রুপ জলমহালে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে এই সংঘর্ষ বাধে। বিগত দিনে ছাতিধরা জলমহাল উপজেলা চেয়ারম্যানের নিয়ন্ত্রনাধীন গ্রুপে দীর্ঘ দিন যাবৎ ইজারাপ্রাপ্ত হয়ে মৎস্য চাষ ও  আহরণ করে আসছেন। বিগত কিছু দিন পূর্বে ইনছানপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ বিজ্ঞ মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ৬ বছরের জন্য বন্ধোবস্তপ্রাপ্ত হয়ে মাছের পোনা ছেড়ে অবমুক্ত করে পাহারাদার নিযুক্ত করে মাছ ফলানোর জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। অপর পক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রুপের নেতৃতে গত ৩১ মে শনিবার ছাতিধরা বিলে মাছ ধরতে গেলে বন্ধোবস্তপ্রাপ্ত সদর ইউপির সাবেক মেম্বার কামরুল ইসলাম সমর্থিত সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবরের লোকেরা বাধা দিলে গত ২৯ মে রবিবার ভাসান পানিতে মাছ ধরার দাবীতে বন্ধোবস্তপ্রাপ্ত লোকদের বিরুদ্ধে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দাখিল করে। এই ঘটনার জের ধরে গত শুক্রবার উভয় পক্ষে লোকজনের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে লক্ষীপুর স্কুল মাঠে এ সংঘর্ষ ঘটে।

    ইনছানপুর মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর বলেন, ২৫ বছর যাবৎ ঝুনু মিয়া ছাতিধরা বিল আইন্যা একটা ইছা মাছ মারবার লাগিও কেউরে দেয় নাই। আর আমরা এহন বিল পাওনে তাইন ভাসান পানির নেতা সাইজ্জা তার লোকজন দিয়া আমাদের বিলে অন্যায়ভাবে মাছ মারার চেষ্টা করে।

    এ ব্যাপারে সদর ইউপির সাবেক মেম্বার কামরুল ইসলাম বলেন, ছাতিধরা বিল না পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শামছুল আলম ঝুনু সাহেব অপু মিয়া ও লাইম মিয়াকে দিয়ে গ্রামের লোকজনকে লেলিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় সংঘর্ষে সূত্রপাত ঘটে। আমাদেরকে আপোষের কথা বলে হঠাৎ এলোপাতারি মারামারি করে মহিলা সহ ২২ জন লোককে আহত করে।

    উপজেলা চেয়ারম্যান শামছুল আলম ঝুনু মিয়া বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আমার প্রতি ইর্শ্বানিত হয়ে আমাকে অহেতুক হয়রানী করার জন্য আসামী করা হয়েছে।

    এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসেম বলেন, মামলা হয়েছে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হবে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তার পক্রিয়া চলছে।