কমলগঞ্জে মিথ্যে সনদের কারণে বন্ধ করা গেলো না বাল্যবিয়ে

    0
    201

    আমারসিলেট24ডটকম,২০নভেম্বর,শাব্বির এলাহী: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে প্রশাসনকে জানানোর পরও ঠেকানো গেলো না ৯ম শ্রেণির ছাত্রী নুরুন্নাহার মিল্কীর বাল্যবিয়ে। কমলগঞ্জ পৌরসভার দেয়া মিথ্যে সনদের কারণে ঠেকানো গেলো না বাল্যবিয়ে। কমলগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের রামপাশা গ্রামের মো. জিন্নাহ মিয়ার স্কুল পড়–য়া মেয়ের বয়স ১৫ থেকে বাড়িয়ে ১৮ বছরের জন্মসনদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
    বুধবার (১৯ নভেম্বর) ভানুগাছ বাজারের চাঁদনী কমিউনিটি সেন্টারে কমলগঞ্জ পৌরসভার রামপাশা গ্রামের মো. জিন্নাহ মিয়ার মেয়ে কমলগঞ্জ মডেল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী নুরুন্নাহার মিল্কীর সাথে একই উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের জাঙ্গালীয়া গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে জহির আলী (৩০) -এর সাথে বিয়ে হয়েছে। গ্রামবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা স্কুল ছাত্রীর বয়স প্রমাণের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে বিয়ের নির্দেশ দেন।

    পরে মেয়ে পক্ষের লোকজন কমলগঞ্জ ইউএনও অফিসে গিয়ে বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করে কমলগঞ্জ পৌরসভা প্রদত্ত ১৮ বছরের জন্মসনদ দেখিয়ে ফিরে আসেন। স্থানীয় লোকজন এ বিয়েটি বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করেও কোন ফল হয়নি।

    বিয়েতে স্থানীয় নিকাহ রেজিষ্ট্রার কাজী মুহি সুন্নাহ রেজিষ্ট্রি কাবিন সম্পন্ন করেছেন বলে গ্রামবাসী জানান। তবে বিয়েতে মেয়ের গ্রামের অধিকাংশ লোকজন বাল্যবিয়ের কারণে উপস্থিত ছিলেন না।
    এদিকে নুরুন্নাহার মিল্কীর অধ্যয়নরত কমলগঞ্জ মডেল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগাযোগ করে ভর্তি রেজিষ্ট্রারে তার জন্ম তারিখ ১৪ আগষ্ট ১৯৯৯ দেখা যায়।  সে হিসেবে তার বর্তমান বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ জানান নুরুন্নাহার মিল্কী ৯ম শ্রেণিতে— নিয়মিত ক্লাস করেছে।
    এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবু ইব্রাহীম জমসেদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে প্যানেল মেয়র মো. আনোয়ার হোসেন জানান, এই জন্মসনদ পত্রের বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে জানান।
    এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমি খবর পেয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকদের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। জন্মসনদ দেখানোর পর মেয়ের বয়স ১৮ বছরের উর্ধ্বে থাকায় বিয়ে হয়েছে। তবে এলাকায় তাদের দু’পক্ষের বিরোধ রয়েছে।
    এলাকাবাসী জানান ইউএনও, ডিসি, এসপি এবং ওসিকে এই বাল্যবিয়ে বন্ধের জন্য বারবার বলা হলেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ লজ্জা প্রশাসনের। এ লজ্জা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা পুলিশের। তারা আরো বলেন, এ ঘটনার পর এলাকায় দিনকে দিন বৃদ্ধি পাবে বাল্যবিয়ের সংখ্যা। ফলে ভবিষ্যতে আর বাল্যবিয়ে রোধ করা সম্ভব হবে না। এ লজ্জা সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির।