কমলগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধা সংগঠক বা সহযোগীরা কি স্বীকৃতি পাবেন না ?

    0
    182

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৪ফেব্রুয়ারীঃ আমার মা শামছুন নাহার মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের সত্তরোর্ধ অসুস্থ নারী। একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামে যিনি নিজের বসতবাড়ী ছেড়ে দুই শিশু সন্তান নিয়ে ভারতের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে জীবনের ঝূঁকি নিয়ে কাটিয়েছেন যুদ্ধকালীন পুরোটা সময়।তার স্বামী আমার পিতা প্রয়াত আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি শিক্ষাবিদ এম,এ,সবুর যুদ্ধের পুরো নয়টি মাস ভারতে এককোটি বাঙালীর আশ্রয়স্থল শরণার্থী শিবিরে ঘুরে ঘুরে তাদের খাদ্য ও রসদ সরবরাহ করেছেন।

    মৃত্যুকে মাথায় করে পাকিস্তানী বন্দুকের গুলির সম্মুখে এপার ওপার করে মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য সরবরাহ করেছেন বিশ্বস্ততার সাথে। এ অপরাধে এদেশীয় রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্যরা তার বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিলো, ক্ষেতের পাকা ধান কেটে নিয়েছিলো। এমনকি দেশ স্বাধীনের পরপর স্থানীয় প্রভাবশালী রাজাকার ও শান্তি কমিটির প্ররোচনায় মিথ্যা মামলায় তাকে কয়েক মাস কারাবরণও করতে হয়। একাত্তরের মাঝামাঝিতে ভারতের হালাহালি শহরের কাছে কমলপুর গ্রামে  শত্রুর মর্টার বিষ্ফোরনের শব্দে তাদের নিষ্পাপ শিশু সন্তান আমার বড় ভাই শোয়েব এলাহীর কান ফেটে গিয়েছিলো। সে থেকে আজ অবধি সে মূক ও বধির হয়ে জীবন কাটাচ্ছে।পৃথিবীর সমস্ত শব্দ স্বাধীন বাংলার কোন বিজয় উল্লাস, কোন সুসংবাদ-দুঃসংবাদ তার কানে পৌছে না।

    আজও মা বলে ডাকতে পারছে না সে তার গর্ভধারিনীকে।তার ভাই আমার মামা বায়ান্নের ভাষা সৈনিক,বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহযোদ্ধা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য,বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ,মৌলভীবাজারের এমএনএ মোহাম্দ ইলিয়াছ এমপি ৪নং সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেছেন,ভারতে শরণার্থী শিবিরে ঘুরে ঘুরে তাদের খাদ্য ও রসদ সরবরাহ করেছেন।

    আমার প্রয়াত পিতা ও আমার অসুস্থ মা কি মুক্তিযোদ্ধা,মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অথবা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারেন না?

    শাব্বির এলাহী,লেখক,সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী,কমলগঞ্জ,মৌলভীবাজার।