নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন

    0
    245

    চট্রগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ বোরিং কাজের ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের মূল কাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার সকাল সোয়া ১১টার দিকে চট্টগ্রামে নির্মিতব্য উপমহাদেশের প্রথম নদীর নিচ দিয়ে সড়ক টানেল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

    উদ্বোধন কালে নিজের আর চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের কল্যাণে রাত-দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমার শ্রমে যদি মানুষের উন্নতি হয় সেটাই আমার বড় পাওয়া। বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ এখন বিশ্বে সম্মানজনক অবস্থানে এসেছে। তিনি রোববার দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সৈকতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের খনন কার্যক্রম এবং লাল খানবাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিলার পাইলিং কাজের ফলক উন্মোচন শেষে এক সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি হচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম টানেল। ২০২২ সালে এটি চালু হলে এই অঞ্চলে আর্থ-সামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে। জাতীয় অর্থনীতিতে এই টানেল গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
    এই প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশের জন্য এ প্রকল্পে শতভাগ ঋণ সহায়তা দিয়েছে। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর এ টানেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট। এ টানেল আনোয়ারা উপজেলাকে চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে যুক্ত করবে। ১০ কিলোমিটার সড়ক করা গেলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার চার লেন সড়কের সঙ্গে যুক্ত করা যাবে বলে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালে এ টানেল নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিলাম। টানেল নির্মাণে মহিউদ্দিন চৌধুরীর যুক্তি ছিল সেতু করা হলে নদীতে পলি জমবে। তিনি টানেলের জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন। আজ তিনি নেই, তিনি থাকলে বেশি খুশি হতেন। আজ তাকে স্মরণ করছি। মুক্তিযুদ্ধ, আন্দোলন-সংগ্রামে তার যথেষ্ট অবদান রয়েছে।
    প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আওয়ামী লীগ সরকার করে দিয়েছে। আরেকটি কাজ করে দিচ্ছি লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামেকে ঘিরে বিশাল আকারে অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। শহরে যানজট কমানোর জন্য বাইপাস করে দিচ্ছি। টানেল নির্মাণ হলে চট্টগ্রামে যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়ন হবে। কক্সবাজার পর্যটন শহর। যাতে পরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠে সে লক্ষ্যে আলাদা কর্তৃপক্ষ করে দিয়েছি।
    সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশে গত ৪৩ বছরে সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক, সৎ নেতা আর ঝানু কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার কাছে বাংলাদেশ নিরাপদ। দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেলের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
    সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে চীনের রাষ্ট্রদূতও বক্তব্য রাখেন।
    সুধী সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, গৃহায়ন ও গণপুর্তমন্ত্রী স ম রেজাউল করিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সচিব সাজ্জাদুল হাসান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।