কর্মসংস্থানই মুক্তির চাবিকাঠি

    0
    237

    আমারসিলেট24ডটকম,৩১অক্টোবর,আফিকুর রহমান আফিক: বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ। এ দেশের জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ যুব-সম্প্রদায়। বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে যাদের বয়স, তাদেরকে যুবক-যুবতী বা এক কথায় যুব বলে চিহ্নিত করা হয়। তবে যৌবন ও তারুণ্য শুধু বয়সের নাম নয়, তারুণ্য শক্তি ও সৃজনশীলতার প্রতিক। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্র“য়ারীর ও ১৯৭১-এ আমরা দুঃসাহস দেখেছি মানুষের, দুঃসাহস দেখিছি তারুণ্যের।

    আমরা দুঃসাহসী হই তখন, যখন আমরা একই চেতনার সঙ্গে গ্রথিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। কিন্তু বিচ্ছিন অবস্থায় আমার প্রেম ভালোবাসাহীন জড় পদার্থ হয়ে পরস্পরের শক্রতে রূপান্তরিত হই। আজকে আমাদের মধ্যে শেষোক্ত অবস্থা বিরাজমান বলে আমরা সাহস শক্তিহীনতার কবলে পড়ে হতাশার শিকার হয়েছি। অর্থনৈতিক স্থবিরতা ও বিশাল জনগোষ্টী বিশেষ করে যুব-বেকারত্ব ও দারিদ্রের অন্ধকার আমাদেরকে গ্রাস করে ফেলেছে। একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, যুগযুগান্তরের দারিদ্র, ক্ষুধা, অশিক্ষা, বেকারত্ব, শোষণ ও অবিচারে উত্তরাধিকার নিয়ে যাদের জন্ম, সে জনগোষ্টীই আজ আমাদের সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ।

    আমাদের শিক্ষিত, অশিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত বেকার শ্রম শক্তি কাজে না লাগাতে পারলে যুগান্তরের দারিদ্রদের অন্ধকার হতে মুক্তি লাভ অসম্ভব । সমস্যার ঝুড়ি এখন এত বড় আকার ধারণ করছে যে, সমাধানের পথ হারিয়ে অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছি। শিক্ষায় আমরা পশ্চাদপদ, কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যে আশানুরূপ সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।

    ফলে বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। যার পরনির্ভরশীলতা বন্ধ না করলে বিজয়ের চেতনা সমুন্নত রাখা সম্ভব নয়। স্বনির্ভর হওয়ার লক্ষ্য থেকে আমরা এখনও দূরে, বহুদূরে। দারিদ্র বিমোচন ও অর্থনৈতিক মুক্তি আন্দোলনে যুব সমাজকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তাদেরকে উৎসাহিত করবেন জ্ঞানমুখী নীতিবান সমাজসেবকগণ।

    আমাদের দেশে বেকার সমস্যা দূর করা সুচিহ্নিত ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আর এ ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ ও এর কার্যকর বাস্তবায়নের পর বেকারত্ব হ্রাসের বিষয়টি নির্ভর করে। তাতে মানবীয় প্রতিভা ও ক্ষমতা বিকাশ সাধনের ব্যবস্থা গ্রহণ ও জনসম্পদকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে তৈরি করণ আবশ্যক, যেখানে আধুনিক সমস্যা কল্যাণ এক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই সিলেট বিভাগ যুব পদক প্রাপ্ত ফোরাম শ্লোগান হচ্ছে কর্মসস্থানই মুক্তির চাবিকাঠি।

    কর্মসংস্থান হচ্ছে বিশ্বের অগণিত মানুষের জীবিকা অর্জনের মুল উৎস। সকলের জন্য নূন্যতম জীবনমান বজায় রাখার লক্ষ্যে সমাজের প্রতিটি কর্মক্ষম ব্যক্তির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। সিলেট বিভাগ যুব উন্নয়ন পরিষদের ধ্যন উদ্দেশ্য হচ্ছে অবহেলিত যুব-সম্প্রদায়ের সার্বিক কল্যাণ সাধন।

    আমরা তাদের বোঝাবো যে তাদের সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার ফলে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব। আমাদের দেশের যুব সমাজের চিরাচরিত অভ্যাস হচ্ছে এই যে, তারা অনেক ব্যাপারই তাদের অভিভাবক ও সরকারী কর্তৃপক্ষের উপর নির্ভরশীল। তাদের মন থেকে নির্ভশীলতার মনোভাব দুর করে উৎপাদনমূখী ও আত্মনির্ভশীল করে গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক এবং প্রশিক্ষণ ও সামাজিক শিক্ষার মাধ্যমে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যা তাদের অর্থনেতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।

    আমরা সমাজ থেকে ক্ষুধা, দারিদ্র ও বেকারত্বের অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশকে আগামী শতাব্দীর যোগ্য দেশ এবং পর্যায়ক্রমে আগামী সভ্যতার ঠিকানা হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস চালিয়ে যাবে।