কোয়ারেন্টাইন শেষে তাবলিগ জামাতের ১৭ বিদেশি সদস্য কারাগারে

    0
    213

    ভারতের বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশে কোয়ারেন্টাইন শেষে এবার তাবলিগ জামাত সদস্যদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিদেশ থেকে আসা ওই তাবলিগ সদস্যরা পাসপোর্ট ও ভিসার নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ।

    তাবলিগ জামাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যারা সম্প্রতি দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে ছিলেন তাদের মধ্যে বেশ কিছু মানুষ করোনা আক্রান্ত হলেও উত্তর প্রদেশে যাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে সেই ১৭ তাবলিগ সদস্যদের অবশ্য কারও করোনা ধরা পড়েনি।

    আজ (রোববার) ‘আজতক’ টিভি চ্যানেলের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, উত্তর প্রদেশে বাহারাইচে ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের ১৭ জন তাবলিগ জামাত সদস্যকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি বাহারাইচ পুলিশ শহরের তাজ ও কুরেশ মসজিদ থেকে ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের ১৭ বিদেশিসহ মোট ২১ তাবলিগ সদস্যকে আটক  করেছিল। পরে তাঁদেরকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।

    কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে ১৭ বিদেশিসহ ২১ তাবলিগ সদস্যকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পেশ করা হয়। এদেরমধ্যে ১৭ বিদেশিকে ভিসা ও পাসপোর্টের নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে কারাগারে পাঠানো হয়। ৪ ভারতীয়কে জামিন দেওয়া হয়েছে।

    তাবলিগ জামাতের নিজামুদ্দিন মারকাজ

    করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় এরআগে সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে তাদের পরীক্ষা করা হলে তাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।

    এদের বিরুদ্ধে ২৬৯, ২৭০, ২৭১, ১৮৮, মহামারী আইন (১৮৯৭) এর ধারা ৩, পাসপোর্ট আইন (১৯৬৭) এর ধারা ১২ (৩) বিদেশি বিষয়ক আইন ১৯৪৬- এর ধারা ১৪ (বি), ১৪ (সি) ছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন (২০০৫) এর ৫৬ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

    পুলিশ সুপার বিপিন কুমার মিশ্র বলেন, গত ৩১ মার্চ প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ওই ব্যক্তিদের আটক করেছিল।

    উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পক্ষ থেকে আগেই কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয় যে কোনোভাবেই বেআইনিভাবে আসা তাবলিগ জামাত সদস্যদের ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    অধ্যাপক আব্দুল মাতীন

    ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে: অধ্যাপক আব্দুল মাতীন

    এ সম্পর্কে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কোলকাতার ঐতিহ্যবাহী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপক আব্দুল মাতীন আজ (রোববার) রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘এরফলে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল ট্রিটি ও নর্মস আছে। প্রত্যেকেই বৈধ ভিসা ও পাসপোর্ট নিয়েই এসেছিলেন। ভারত সরকার একদিকে যখন অনুমতি দিয়েছে, বিমানবন্দর থেকে যখন ওরা এসেছেন, টুরিস্ট ভিসায় কি না আমি জানি না। কিন্তু সাধারণত সরকার বলছে নাকি টুরিস্ট ভিসায় ওরা এসেছিলেন। যদি এসেই থাকে তাহলে ভারত সরকারের কাছে মেকানিজম কেন নেই, সেটা উন্নত হওয়া উচিত ছিল। বিমানবন্দরে তাদের স্ক্রিনিং করা উচিত ছিল। এরফলে বোঝা যায় যে আমাদের দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা দুর্বল।’

    তিনি বলেন, ‘তাবলিগ জামাত কোনও রাজনৈতিক ইসলামে বিশ্বাস করে না। তারা বিশ্বাস করে নেহায়েত সাধারণ আধ্যাত্মিকতার হিসেবে যে ধরণের বার্তা দেয় তা একেবারেই ধর্মের মৌলিক জিনিসগুলো যেমন নামাজ পড়া, রোজা রাখা ইত্যাদি।’

    বর্তমান পদক্ষেপে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ভারতের খারাপ সম্পর্ক হয়ে যেতে পারে বলেও অধ্যাপক আব্দুল মাতীন মন্তব্য করেন। পার্সটুডে