খালেদাকে দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসার বিষয়ে শিগগিরই অভিমত

0
446
খালেদাকে দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসার বিষয়ে শিগগিরই অভিমত

আমারসিলেট ডেস্কঃ অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার বিষয়ে করা আবেদনের ওপর খুব শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয় তাদের অভিমত দেবে। মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত দেওয়া হবে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে আইনমন্ত্রী আরও বলেন, যখন ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে দেখা হয় তখন আমি খালেদা জিয়ার বিদেশ চিকিৎসা নিয়ে ভুলের বিষয়টি হাইলাইট করেছি এবং পরিষ্কারভাবে আইনের ব্যাখ্যা দিয়েছি। খালেদা জিয়ার পরিস্থিতি ও তিনি যে মুক্ত, আইনিভাবে তার যে অবস্থান, আমি সেটা তাদেরকে বুঝিয়েছি। তারা বলেছে এই জায়গায়টা তারা কারেকশন করবে।

খালেদা জিয়া ইস্যুতে বিএনপি যে কয়বার মতামত চেয়েছে ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এবার প্রায় ৪০ দিন হতে চলল- এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি, আমার কাছে হাইকোর্টের বিএনপি সমর্থিত ১৫ জন আইনজীবী যে বক্তব্য দিয়েছেন সেখানে কোথাও আইনি সাপোর্ট আছে কি না, সেটা আমি দেখব ও দেখেছি। তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট কোনো আইনি সাপোর্ট আমি পাইনি। তারা যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা কোনো আদালতই সাপোর্ট করেননি বরং আমি যে বক্তব্য সংসদে দিয়েছি অনেক রায়ে তাকেই সমর্থন করা হয়েছে।’

তবে কী খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সরকারের অবস্থান সরাসরি ‘না’- এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি খবু শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয়ের অভিমত দেব। ৭৬ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আরথারাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতার জন্য টানা ২৬ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ৭ নভেম্বর বাসায় ফেরেন তিনি। এর ৬ দিনের ব্যবধানে খালেদা জিয়াকে আবার ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির পর ১৪ নভেম্বর রাতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে সিসিইউতে নেওয়া হয়। এখন তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা।

তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এর আগে গত এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। পরে করোনা পরবর্তী জটিলতায় ২৭ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি হন। সে সময় এক মাসের বেশি সময় হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি ছিলেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে ১৯ জুন বাসায় ফেরেন। পরে করোনার টিকা নিতে তিনি দুই দফায় মহাখালীর শেখ রাসেল ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে যান।

উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এ পর্যন্ত ৩ দফায় খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। তবে বিএনপির নেতারা খালেদা জিয়ার শর্তসাপেক্ষে এ মুক্তিকে ‘গৃহবন্দি’ বলছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার আবেদন করা হলেও সরকার তা নাকচ করে দেয়। তাকে দেশে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে বলে শর্তও দেওয়া হয়েছে।