গাজিপুরে নিহত জঙ্গির লাশ গ্রহণ করবেন না তার পরিবার

    0
    185

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,১২অক্টোবর,চান মিয়া, ছাতকঃ ঢাকা গাজীপুরে জঙ্গি আস্থানায় নিহত ৯জনের মধ্যে একজন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের মনিরজ্ঞাতি (ডিমকা) গ্রামের মতিউর রহমান ওরফে ময়না শাহের পুত্র সাইফুর রহমান বাবলু (২৫)। এনিয়ে ছাতকের অর্ধডজন জঙ্গির সন্ধান মিলেছে। এসব ঘটনায় উপজেলা জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তার বাবা একজন গরু ব্যবসায়ি। এব্যবসায় দিয়ে তিনি কোনোভাবে পরিবারের ভরন-পোষন চালাতেন। তবে বাবলু কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত কি না জানা যায়নি।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাইফুর রহমান বাবলু গোয়াশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাইমারী পাশ করে ভর্তি হয় স্থানীয় গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের পীরপুর শুকুরুন নেছা চৌধুরী স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে এসএসসি পাশ করে ভর্তি হয় সিলেট রায়নগর এলাকার সার্ক ইন্টারন্যাশনাল কলেজে। এখান থেকে ২০১৪সালে এইচএসসি পাশ করে। এরপর তার মা-বাবাকে ঢাকার একটি ইউনিভার্সিটিতে সে ভর্তি হওয়ার জন্যে তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকায় চলে যায়। পরে বাবলু তার মা-বাবাকে জানায় সেখানে একটি ভাল চাকুরি করছে। মা-বাবা তাকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্নে ছিলেন বিভোর। কিন্তু তাদের সে আশা অবশেষে দূরাশায় পরিণত হয়। এখন এক নজর তার মূখ দেখতেও নারাজ তার পরিবারের লোকজন।

    স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, ডিমকার পাশের গ্রাম ছিল সেনপুর। সেই গ্রামের বাবলুর বাল্য বন্ধু আব্দুছ সালামের পুত্র আব্দুল বাছিত (২৩)কে ঢাকায় নিয়ে যায়। বাবলুর সাথে সেও এতো দিন থেকে নিখোঁজ রয়েছে। তবে এখন বাছিত কোথায় রয়েছে এলাকার কেউ বলতে পারছেনা। অবশেষে প্রায় দু’মাস আগে বাড়ির সাথে বাবলু সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এর আগে ফোনে প্রায়ই মা-বাবার খোজ খবর নিতো। এরপর বাবলু নিখোঁজের বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মছব্বিরকে মৌখিকভাবে অবহিত করেন তার মা-বাবা। সবশেষে ৮অক্টোবর গাজিপুরের জঙ্গি আস্থানায় যৌথ বাহিনীর পৃথক অভিযানে ৯জঙ্গির সাথে বাবলুও নিহত হয়। এসময় তার পকেটে জন্ম নিবন্ধ সনদের একটি ফটো কপি পাওয়া যায়।

    সে অনুযায়ী ছাতক থানা পুলিশ সোমবার সাইফুর রহমান বাবলুর বাড়িতে গিয়ে তার মাকে বিষয়টি অবহিত করলে নিহত ৯ জঙ্গিদের মধ্যে ৫নম্বার সিরিয়ালে বাবলুর লাশের ফটো দেখে পরিবারের সদস্যরা তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন। এব্যাপারে নিহতের পিতা মতিউর রহমান ওরফে ময়না শাহ জানান, যেহেতু খারাপ কাজে গিয়ে ছেলেটি নিহত হয়েছে সেহেতু সে আমার ছেলে নয়। তার লাশ ও তারা গ্রহণ করবেননা বলে জানান। নিহত বাবলুই ছিল তাদের একমাত্র পুত্র সন্তান। কন্যা সন্তানও রয়েছে আরো দু’জন।

    থানার ওসি আশেক সুজা মামুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জঙ্গি বাবলু নিহত হওয়ার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন।