চট্টগ্রামে যৌতুক ও মাদকবিরোধী মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত

    0
    255

    “যৌতুক ও মাদকের অভিশাপ থেকে বাঁচতে প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে দ্বীনি-কর্তব্য ও মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে সূচিত এ যৌতুকবিরোধী আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে-আল্লামা আবুল কাশেম নুরী” 

    “যৌতুক ও মাদকের গ্লানি থেকে বাঁচতে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের বিকল্প নেই – মাওলানা এম এ মতিন”

    আন্তর্জাতিক মুফাসসিরে কুরআন ও পীরে তরিকত আল্লামা আবুল কাশেম নূরীর (মজিআ) আহ্বানে সাড়া দিয়ে আজ ৯ মার্চ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম লালদীঘি মাঠে অনুষ্ঠিত যৌতুক ও মাদকবিরোধী মহাসমাবেশে লাখো যুবক যৌতুকমুক্ত বিয়ের শপথ করেছে। সেই সঙ্গে তারা সমস্বরে মাদককে ‘না’ বলে মাদকমুক্ত সুন্দর পরিচ্ছন্ন জীবন গড়ার শপথ নিয়েছে। আনজুমানে রজভীয়া নূরীয়া বাংলাদেশ এর আয়োজনে এবং আল্লামা আবুল কাশেম নূরীর আহ্বানে যৌতুক ও মাদকবিরোধী দশম মহাসমাবেশে আজ বক্তারা বলেছেন, যৌতুক দেয়া-নেয়া দুটোই ঘৃণ্য নিকৃষ্ট পন্থা। যৌতুকের অভিশাপ গ্লানি থেকে লাখো গরিব অসহায় পরিবারগুলোকে বাঁচাতে যৌতুক দেয়া নেয়ার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ঘরে ঘরে এই সামাজিক দুষ্টক্ষতের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ ও গণঘৃণাবোধ জাগ্রত করতে হবে।

    বক্তারা যৌতুক, নারী নিপীড়ন, শিশু নির্যাতন, অ্যাসিড সন্ত্রাস, ধর্ষণ ও মাদকমুক্ত দেশ ও সমাজ গড়তে সরকারকে কঠোর আইন প্রণয়নের পাশাপাশি এর কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। বক্তারা দল মত শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের মাধ্যমে এসব দুষ্টক্ষেত নির্মূল করার ওপর গুরুত্বরোপ করেন। আনজুমানে রজভীয়া নূরীয়া বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান পীরে তরিকত আল্লামা আবুল কাশেম নূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যৌতুক ও মাদকবিরোধী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম নাছির উদ্দীন।

    উদ্বোধক ছিলেন সীতাকুন্ড আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মুহাম্মদ দিদারুল আলম। মুখ্য আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন। প্রধান অতিথি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন, যৌতুক ও মাদক আজ জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    এসব সামাজিক কুসংস্কার ও অবক্ষয় প্রবণতা থেকে বাঁচতে হলে জাতীয় জাগরণ ও সম্মিলিত সচেতনতা জরুরি। প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখলে যৌতুক ও মাদকের গ্লানি থেকে নিস্কৃতি মিলবে বলে আশা করা যায়। আল্লামা নূরী এ ধরণের গণমুখী উদ্যোগ নেয়ায় মেয়র তাঁকে ধন্যবাদ জানান এবং সবরকম সহযোগিতায় আশ্বাস দেন।

    উদ্বোধক সংসদ সদস্য দিদারুল আলম বলেন, শুধু সরকার একার পক্ষে যৌতুক ও মাদক নির্মূল করা সম্ভব নয়। এজন্য চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সমন্বিত প্রয়াস। আলেম সমাজ সোচ্চার হলে এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখলে এসব সামাজিক অভিশাপ থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি। মূখ্য আলোচক মাওলানা এম এ মতিন বলেন, আলেম সমাজের অহংকার আল্লামা নূরীর দ্বীনি দায়িত্ববোধ ও মানবিক মমত্ববোধ দেখে আমরা অনুপ্রাণিত হই। তাঁর মতো উলামা মাশায়েখরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে, নিজ নিজ দরবার ও খানকাহ থেকে এ ধরনের সামাজিক দায়িত্ব পালনে এগিয়ে গেলে যৌতুক-মাদকসহ সব ধরনের অপরাধ প্রবণতা থেকে আমরা রেহাই পেতাম।

    তিনি যৌতুক ও মাদকবিরোধী কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন। বিশেষ অতিথি ড. মাসুম চৌধুরী বলেন, যৌতুক বিরোধী আইন থাকলেও আইনের কঠোর প্রয়োগ নেই। ফলে এই সামাজিক কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসা যাচ্ছে না। তিনি আল্লামা নূরীর এ ধরনের গণমুখী কাজে সকলের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন। সভাপতির বক্তব্যে যৌতুক ও মাদকবিরোধী আন্দোলনের পুরোধা আল্লামা আবুল কাশেম নূরী বলেন, দ্বীনি দায়িত্ব, বিবেকের তাড়না ও মানবিক দায়িত্ববোধ থেকেই আমি যৌতুক ও মাদকবিরোধী আন্দোলন শুরু করেছি চট্টগ্রাম থেকে।

    পর্যায়ক্রমে এ আন্দোলন সারা দেশ ছড়িয়ে দেয়া হবে ইনশাল্লাহ। তিনি তাঁর সূচিত এ আন্দোলনে সম্পৃক্ত ও সহযোগিতাকারী সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসাইন এবং শায়ের মুহাম্মদ মাছুমুর রশিদ কাদেরীর এর যৌথ স ালনায় অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক আলহাজ¦ মুহাম্মদ নুরুল হক।

    মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন পীরজাদা গোলামুর রহমান আশরফ শাহ্, আন্জুমান ট্রাস্টের সেক্রেটারী আব্দুর রশিদ দৌলতী, হাজ্বী সৈয়দ মুহাম্মদ সেলিম, মাওলানা সোলাইমান খান রাব্বানী, মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী, আল্লামা ইউনুচ রজভী, মাওলানা যুন নুরাইন, মুহাম্মদ এনামুল হক ছিদ্দিকী, আল্লামা আবুল হাসান ওমাইর রজভী, আবু ছালেহ আঙ্গুর, মুহাম্মদ মিয়া জুনায়েদ, মাওলানা জাহাঙ্গীর রজভী, মাওলানা আব্দুল কাদেও রজভী, মাওলানা এনাম রেযা, মাওলানা দেলওয়ার হোসেন জালালী, পীরজাদা সৈয়দ আরিফ বিল্লাহ রাব্বানী, মাওলানা আবু বকর আনসারী, নাছির উদ্দিন মাহমুদ, মওলানা ইয়াছিন হায়দারী, ছাত্রনেতা নিজামুল করিম সুজন, ছাত্রনেতা ফরিদুল ইসলাম, আলহাজ্ব জহির সওদাগর, মুহাম্মদ হাসান, মুহাম্মদ তারেক আজিজ, মুহাম্মদ জাহিদুল হাসান রুবায়েত, মাওলানা সিরাজুল মোস্তাফা, মুহাম্মদ জাকারিয়া, মুহাম্মদ শফি, মাওলানা সোহাইল উদ্দিন আনসারী, মুহাম্মদ আব্দুল করিম সেলিম, মুহাম্মদ ফরিদুল আলম, হাবিবুল মোস্তাফা সিদ্দিকী, মুহিব্বুল্লাহ সিদ্দিকী, মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ, মুহাম্মদ ইদ্রিচ, শায়ের এনামুল হক, মুহাম্মদ ওমর ফারুক, মুহাম্মদ খোরশেদ, মুহাম্মদ ওসমান, শায়ের মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, শায়ের ছালামত রেযা, মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, মিনহাজ উদ্দিন সিদ্দিকী, মুহাম্মদ মাহফুজ, মুহাম্মদ আরাফাত প্রমূখ। সালাত সালাম শেষে দেশ-জাতির সমৃদ্ধি, কল্যাণ এবং বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের শান্তি কামনায় মুনাজাত করা হয়।