জৈন্তাপুরে উপজেলা নির্বাহীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

    0
    231

     রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধিঃ জৈন্তাপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার, তৎকালীন সহকারী কমিশনার(ভূমি), সার্ভেয়ার এবং অফিস সহকারী সহ ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে জৈন্তাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
    গত ১৬ সেপ্টেম্বর জৈন্তাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার হাজী আনোয়ার হোসেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম.কাজী.এমদাদুল ইসলামের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন (যাহার ডকেট নং ৩৭)।
    অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জৈন্তাপুর উচ্ছেদ মামলা নং-২৮/২০১৬-২০১৭ইং এর প্রেক্ষিতে তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ২০১৮ইং সালের ২৭জুন সরজমিনে উপজেলা সদরের নিজপাট মৌজার মাস্তিংহাটি এলাকায় উচ্ছেদ মামলার কার্যক্রম পরিচালন করতে যান। কার্যক্রম পরিচালনা কালীন সময়ে সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম ও অফিস সহকারীর পরামর্শে উচ্ছেদকৃত জায়গার একাংশ প্রতিপক্ষকে অবকাঠামে সরানোর নিদের্শ দিয়ে জরুরী কাজের কথা বলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

    অভিযোগে বাদী হাজী আনোয়ার হোসেন উল্লেখ করেন, পরবর্তীতে কয়েক দফা সহকারী কমিশনার (ভুমি) অফিসে জায়গা উচ্ছেদ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলা হলে ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ অপারগতা প্রকাশ করে। চলিত বছরের গত ২রা মে পুনরায় জেলা প্রশাসক বরাবর উচ্ছেদ মামলার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে আবেদন করা হয় (যার স্মারক নং-১৬৬০, তারিখ ১০ জুন ২০১৯ইং)।
    আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্ছেদ মামলার কার্যক্রম নিষ্পত্তি করতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে পুনরায় নিদের্শ দেওয়া হয়। পুনরায় উচ্ছেদ মামলার কার্যক্রম বাস্তবায়নের আদের্শ নিয়ে কয়েক দফা ভূমি অফিসে যোগাযোগ করা হলে ভূমি অফিসের কিছু সুবিধাভোগী সংশ্লিষ্ট সহকারীগণ প্রতিপক্ষের নিকট থেকে আর্থিক সুবিধা ভোগ করে উচ্ছেদ মামলা নং ২৮/২০১৬-২০১৭ইং এর যাবতীয় নথিপত্র সরিয়ে ফেলেন এবং গোপন করে নানা অজুহাত দেখিয়ে সময় নিতে থাকেন এক পর্যায়ে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম ও সহকারী শর্মা কুমার চৌধুরী বিভিন্ন ভাবে অর্থ দাবী করে।
    অভিযোগ সূত্রে আরো বলা হয়েছে, ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের অর্থ দাবী সহ এই বিষয় উপজেলা নিবার্হী অফিসার মৌরীন করিম’কে জানানো হলে তিনি উল্টো মহান মুক্তিযোদ্ধ চলাকালীন সময়ের কমান্ডার হয়ে দেশের জন্য এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার, বাংলার সূর্য সন্তান হাজী আনোয়ার হোসেন-কে নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের লোকদের সমানে ধমক দেন ও বলেন, উপজেলা প্রশাসন উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করে প্রতিবেদন প্রেরণ করে দিয়েছে। উচ্ছেদ মামলার বাদী হাজী আনোয়ার হোসেন বলেন, সরজমিনে কোন উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় নাই বলে দাবী তুলে বলেন অবকাঠামো এখনও অক্ষত অবস্থায় রয়েছে এছাড়া আমি নিজেও নোটিশ পাই নাই তাহলে কি ভাবে উচ্ছেদ অভিযান করলেন প্রশ্ন করেন ? ফলে উপজেলা নিবার্হী অফিসার উত্তেজিত হয়ে উঠেন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আনোয়ার হোসেনের সাথে অসৌজন্য মুলক আচরণ দেখান এবং মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে মামলার হুমকি ও ভয় দেখিয়ে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
    উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার হাজী আনোয়ার হোসেন জানান, নিজের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধের সময় একজন কমান্ডার হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ গ্রহন করে শত্রুর গুলি শরীরে বহন করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছি। স্বাধীন দেশে ন্যায় সংগত কথা বলার অধিকার প্রশাসনের কাছে আমাদের নাই। তিনি ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, একটি স্বাধীন দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে প্রশাসনের অসৌজন্য মুলক আচরণ করতে পারে কি? জানতে চাই। তিনি উপজেলা নিবার্হী অফিসার মৌরীন করিম, সহকারী কমিশনার(ভূমি), উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম উরফে আনোয়ার, প্রধান অফিস সহকারী শর্ম্ম কুমার চৌধুরী সহ অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন এবং উচ্ছেদ মামলার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানান।