জৈন্তাপুরে চেরাচালানীদের অবাদ বিচরণকৃষকের ফসল হানিতে নিরব সংশ্লিষ্ট প্রশাসন

0
115

রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি: সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্ত পথ গুলো চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসাবে ইতোমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে। এই রুট দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৮/১০ কোটি টাকার চোরাচালান পন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। চোরাচালান পণ্য পরিবহন করতে গিয়ে জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘটের শত শত বিঘা ফসলী জমি নষ্ট করা হচ্ছে। ফসল নষ্ট হওয়ান কৃষকরা দিশাহারা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরব ভূমিকায়।

সরেজমিনে জৈন্তাপুর উপজেলার নলজুরী, আলুবাগান, মোকামবাড়ী, মোকামপুঞ্জি, শ্রীপুর, খড়মপুর, বাননঘাট, আদর্শগ্রাম, মিনাটিলা, ছাগল খাউরী, কাঠালবাড়ী, কেন্দ্রী, কেন্দ্রীহাওড়, লম্বাটিলা, ডিবিরহাওড়, ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী, টিপরাখলা, করিমটিলা, ভিতরগোল, গোয়াবাড়ী, বাইরাখেল, হর্নি, নয়াবাড়ী, জালিয়াখলা, মাঝেরবিল, কালিঞ্জবাড়ী, সারী নদীর মুখ, বাঘছড়া, জঙ্গীবিল, তুমইর, রাবার বাগান, ইয়াংরাজা, বালীদাঁড়া, সিঙ্গারীপাড় এবং গোয়াইনঘাট উপজেলার গুচ্ছগ্রাম, জিরোপয়েন্ট, সোনাটিলা, মায়াবীঝর্ণা, মন্দিরের ঘাট, লামাপুঞ্জি, বাবুর কোনা, পান্তুমাই, কুলুমছড়া, বগলকান্দি, বিছনাকান্দি, আমস্বপ্ন, নলজুরী, এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় শাড়ী, লেহেঙ্গা, চা-পাতা, আমদানী নিষিদ্ধ শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি (পাতার বিড়ি), ভারতীয় চিনি, বিভিন্ন ব্যান্ডের কসমেটিক্স সামগ্রী, মোবাইল হ্যান্ডসেট, শিশু খাবার, মটর সাইকেল, টাটা গাড়ীর পার্স, বিভিন্ন ব্যান্ডের ভারতীয় মদ, ইয়াবা এবং ভারতীয় গরু-মহিষ।

সীমান্ত দিয়ে বিশেষ করে জৈন্তাপুর উপজেলার গরু-মহিষ প্রবেশের অন্যতম রুট হল নলজুরী, আলুবাগান, শ্রীপুর, খড়মপুর, বাননঘাট, আদর্শগ্রাম, মিনাটিলা, ছাগল খাউরী, কাঠালবাড়ী, কেন্দ্রী, কেন্দ্রীহাওর, লম্বাটিলা, ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী, টিপরাখলা সীমান্ত এসব ভারতীয় গরু-মহিষ প্রবেশ করে উপজেলার বিরাইমারা হাওর, লামনীগ্রাম, নলজুরী হাওর, হয়ে নিয়ে এসে বাউরভাগ-পাঁচসেউতী হয়ে আগফৌদ ও নয়াখেল হাওরে অবস্থান করে। পরে আগফৌদ নয়াখেল হয়ে সারীঘাট উত্তর বাজার দিয়ে ডিআই ট্রাক যোগে এসবপণ্য উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রবেশ করে। গোয়াইনঘাট উপজেলার হাদারপাড় বাজার, পান্তুমাই, আনন্দবাজার, কাকুনাখাই, পাঁচসেউতী, বিছনাকান্দি, রাধানগর, ভাদেশ্বর, মাতুরতল, সুইচগেইট দিয়ে এসব ভারতীয় পণ্য এবং গরু মহিষ বিভিন্ন হাওরে মজুদ করা হয়। পরে সুবিধা মতে বিভিন্ন সড়ক ব্যবহান করে বিভিন্ন বাজাওে প্রবেশ ও সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করা হয়।

এদিকে হাওর এলাকা দিয়ে গরু মহিষ প্রবেশের প্রক্কালে জৈন্তাপুর ও নিজপাট ইউনিয়নের কৃষকদের সারা বৎসরের খাদ্যের জন্য রোপিত কাঁচা-পাকা ধান বিনষ্ট করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের কৃষক সাদ্দাম হোসেন বলেন, প্রকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করে আমাদের একমাত্র ফসল ধান গুলো মানব সৃষ্ট দূর্যোগের হাত হতে রক্ষা করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন চোরাকারবারীরা হাওর দিয়ে গরু-মহিষ পাচার করতে গিয়ে আমাদের ফসল হানি করছেন। আমরা জনপ্রতিনিধিদের জানালেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না।

জৈন্তাপুর ইউপির সদস্য নজির আহমদ, আব্দুছ সালাম, আব্দুল কাদির বলেন, আপনারা জানেন চোরাচালানের কারনে আমাদের ইউপির প্রচুর কৃষকের ফসল হানি করা হচ্ছে। ইতোপূর্বে আমরা উপজেলা প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছি। কিন্তু কোন প্রতিকার হচ্ছে না। বরং এর মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে আমাদের দিশেহারা, আমরা নিরুপায়।

জৈন্তাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, আমার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকাজুড়ে চোরাচালান পণ্য মারাত্বক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিষয়টি আপনার দেখছেন, সরকারের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থান কাছে জোর দাবী চোরাচালান বন্দে কঠোর হস্তক্ষেপ গ্রহন করবেন।

জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, আমি জৈন্তাপুরে যোগদানের পর হতে সফলতার মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছি। আমার অভিযানে আপনারা দেখেছেন বিপুল পরিমান ভারতীয় পণ্য সহ গরু মহিষ আটক করেছি। আমাদের অভিযান অভ্যাহত রয়েছে।