তাহিরপুর সীমান্তে চোরাকারবারীদের কাছে বৈধ ব্যবসায়ীরা জিম্মি !

0
146

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে চোরাকারবারীদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে অনেক বৈধ ব্যবসায়ীরা।
আজ মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) রাত ১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট, লাকমা ও চারাগাঁও সীমান্তের লামাকাটা, জঙ্গলবাড়ি, কলাগাঁও, এলসি পয়েন্ট ও বাঁশতলা এলাকা দিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অর্ধশতাধিক নৌকা বোঝাই করে চিনি, কয়লা ও চুনাপাথরসহ বিভিন্ন প্রকার মালামাল পাচাঁরের খবর পাওয়া গেছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গত রবিবার (২০ আগস্ট) ভোরে ভারত থেকে চিনি পাচাঁর করে নিয়ে যাওয়ার সময় বীরেন্দ্র নগর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা সীমান্ত সংলগ্ন টাঙ্গুয়ার হাওরে অভিযান চালিয়ে ১৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা মূল্যের ১৭০বস্তা অবৈধ চিনি বোঝাই স্টিলবডি ইঞ্জিনের নৌকা আটক করে। কিন্তু বালিয়াঘাট ও চারাগাঁও ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে চোরাচালান দিনদিন বেড়েই চলেছে। গত শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে লাকমা এলাকা দিয়ে ভারত থেকে কয়লা পাচাঁর করতে গিয়ে গর্তে পড়ে কিশোর আক্তার হোসেন (১৬) এর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
এছাড়াও এই সীমান্তে চোরাচালান করতে গিয়ে এপর্যন্ত ১৭জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
এব্যাপারে বৈধ কয়লা ও চুনাপাথর ব্যবসায়ী আবুল বাশার খান নয়নসহ আরো অনেকে জানান- উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কুড়েরপাড় গ্রামের নেকবর আলী ও তার কথিত গডফাদার, তাদের সোর্স কলাগাঁও গ্রামের একাধিক মামলার আসামী রফ মিয়া, সাইফুল মিয়া, জঙ্গলবাড়ি গ্রামের আইনাল মিয়া, হযরত আলী, লেংড়া জামাল, বাঁশতলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন বাবলু, লালঘাট গ্রামের রুবেল মিয়া, খোকন মিয়া, ইয়াবা কালাম মিয়া, লাকমা গ্রামের রতন মহলদার, কামরুল মিয়া, দুধের আউটা গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া ও মনির মিয়াগং প্রতিদিন রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবাধে কয়লা ও চুনাপাথরসহ মাদকদ্রব্য পাচাঁর করে ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা ব্রিজের কাছে নিয়ে বিক্রি করে।

এরপর তারাই বিজিবি,পুলিশ ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে চাঁদা নেয়। তাদের কাছে অনেক বৈধ ব্যবসায়ীরা বর্তমানে অসহায় হয়ে জিম্মি, তাই প্রশাসনের সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন।
চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ী ফজলু সরদার বলেন- অবৈধ পথে কয়লা ও চুনাপাথর পাচাঁর করে কম দামে বিক্রি করে চোরাকারবারীরা। এজন্য আমরা বৈধ মাল বিক্রি করতে পারিনা। ফলে একদিকে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছি, অন্যদিকে লাখলাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা গ্রামের বাবুল মিয়া বলেন- আমি অবৈধ ব্যবসা করিনা, নেকবর আলী তার গডফাদারকে নিয়ে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করছে। আমি তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করি এজন্য আমার নামে বদনাম করে।

এব্যাপারে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার তাজুল ইসলাম বলেন- সোর্স পরিচয়ধারী আইনাল, সাইফুল ও রফ মিয়াসহ সবাইকে সর্তকবানী দেওয়া হয়েছে। সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য চেষ্টা করছি।