দুই মাসেই এমবিবিএস ডাক্তার !

    0
    217

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,২৯এপ্রিল,জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় মাত্র দুই মাসের ব্যাবধানে একজন পল্লি চিকিৎসক হয়ে গেলেন এমবিবিএস ডিগ্রিধারী চিকিৎসক। তবে তাঁর এ নতুন পদবীতে নাখোশ একজন চিকিৎসা গ্রহীতা অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  (ইউএনও)বরাবর। অভিযোগ, তিনি এমবিবিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত না হয়েও এ ডিগ্রি ব্যাবহার করে মানুষের সাথে প্রতারণা করছেন।

    ডাঃ শাখাওয়াত হোসেন আক্কাস। জুড়ী-ফুলতলা সড়কের কামিনিগঞ্জ বাজারের নিজস্ব চেম্বারে রোগী দেখেন। গত ২৪এপ্রিল সোমবার তাঁর বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নোমান আহমদ নামের একজন। অভিযোগে উল্লেখ, নোমান কিছুদিন পূর্বে অসুস্থ হয়ে কামিনীগঞ্জ বাজারস্থ ফুলতলা রোডের ডা.মো.শাখাওয়াত হোসেন (আক্কাস)এর স্বরনাপন্ন হন। যাওয়ার আগে তিনি অবগত হন আক্কাস একজন এমবিবিএস ডাক্তার এবং উনার প্রদত্ত ব্যাবস্থাপত্রেও তার প্রমাণ পান। ঔষধ সেবন করার পাঁচদিন পর নোমানের উপসর্গ কমার পরিবর্তে বেড়ে যায়। তাঁর অসুস্থতা ও চিকিৎসার বিষয়টি বন্ধুমহলে জানালে তাঁদের কাছ থেকে জানতে পারি উনি এমবিবিএস ডাক্তার নন। তিনি হতভম্ব হয়ে পড়েন এবং ইন্টারনেটে খোঁজা শুরু করেন আসল  বা নকল এমবিবিএস ডাক্তার জানার কোন উপায় আছে কিনা।

    ইন্টারনেটে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের সন্ধান পান এবং কাউন্সিলের ওয়েবসাইট www.bmdc.org.bd এর Find Registered Doctor অপসনে আক্কাসের ব্যাবস্থাপত্রে প্রদত্ত রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৯১৮৫ দিয়ে দেখেন তাঁর পরিবর্তে এ রেজিস্ট্রেশন নম্বর মো.মনসুর রহমান নামের একজন ডাক্তারের। অভিযোগকারী বুঝতে পারেন আক্কাস এমবিবিএস ডাক্তার নন এবং তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এরকম আরও ‘ভূয়া এমবিবিএস’ ডাক্তারের উদ্ভব  এবং জুড়ী উপজেলাবাসীকে প্রতারণা থেকে রক্ষা করতে বিষয়টি তদন্ত করে এই ‘ভূয়া এমবিবিএস’ ডাক্তারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে ইউএনওকে আবেদন করেছেন নোমান আহমদ। তিনি অভিযোগটির অনুলিপি মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ও জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকেও দিয়েছেন।

    অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৬নভেম্বর শাখাওয়াত হোসেন আক্কাসের প্রদত্ত্ব ব্যাবস্থাপত্রে তাঁর পদবী ডি.ফার্ম (ঢাকা), ভি,এইচ,এফ,এ(চট্টগ্রাম) ছিল। আর ২০১৭ সালের ৯ফেব্রুয়ারি তা এমবিবিএস (এ.এম) হয়ে যায়। তবে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মহী উদ্দিন এ প্রতিবেদককে জানান, ‘মেডিকেল শিক্ষায় ৭৩দিনে এমবিবিএস ডাক্তার হওয়ার কোন সুযোগ নেই।

     শাখাওয়াত হোসেন আক্কাস জানান, তিনি কলকাতার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এমবিবিএস (অলটারনেটিব মেডেসিন) বিষয়ে প্রশিক্ষন নিয়েছেন। তবে তিনি বিএমডিসি’র রেজিস্ট্রেশনভুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন।

    ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) বর্নালী পাল গতকাল জানান, তাঁর বদলী সংক্রান্ত ব্যস্ততায় বিষয়টির তদন্ত করা যায়নি। তবে এ বিষয়ে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।