নবীগঞ্জে তীব্র শীতে কম্বল বিতরন করলেন ইউএনও তাজিনা

    0
    201

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৩জানুয়ারী,মতিউর রহমান মুন্নাঃ    নবীগঞ্জে চলছে শীতের তীব্রতা। পৌষ মাসের শেষের দিকে এই তীব্র শীতের দাফটে অনেকেই অসহায়। বিশেষ করে বেকায়দায় পড়েছেন ছিন্নমূল, দুঃস্থ, হত-দরিদ্র, বেদে জনগোষ্টি, হরিজন, ঋষি সম্প্রদায়ের লোকজন। আর এসব মানুষের পাশে দাড়ালো নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। প্রচন্ড শীতের রাতে নবীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে গ্রামে গিয়ে সত্যিকার অর্থে যারা শীতে কষ্ট পাচ্ছেন ঘরে গিয়ে ঘুম থেকে তুলে তাদেরকেই নিজ হাতে সরকারি কম্বল দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার। আর এতেই তিনি মহানুভবতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।

    সুত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে প্রচন্ড শীতের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ পাওয়া কয়েক শতাধীক কম্বল সাথে নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের গবির অসহায় লোকদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে তিনি প্রকৃত গরিব মানুষদের ঘুম থেকে ডেকে তুলেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা শোনেন। এবং যাদের বেশি প্রয়োজন এমন গরিব দুস্থদের হাতে কম্বল তুলে দেন। তীব্র শীতের মধ্যে কখনও এসব গ্রামে হেঁটে যান আবার কিছুদূর গাড়িতে যান ইউএনও।

    এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি এম এ আহমদ আজাদ, প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ও বাংলা টিভি প্রতিনিধি মতিউর রহমান মুন্না, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার জহিরুল ইসলাম, ইউএনও অফিসের উচ্চমান সহকারী সুব্রত প্রমুখ।

    বিশেষ করে, দেশে ভাসমান অবস্থায় যাদুবিদ্যা তন্ত্রমন্ত্র ও ঝাড়ফুক দিয়ে লোকজনকে আকৃষ্ট করে যাদের জীবন চলে সমাজের চোখে তারাই হল বেদে। তাদের জীবন কাটে ছোট্ট ছোট্ট বহর তৈরী করে দেশের এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত ছুটে চলে। তাদের জীবন কাহিনী আমাদের সমাজের আরো দশ জনের মত নয়। ব্যতিক্রমধর্মী জীবন কাহিনী এ দেশের বেদে সম্প্রদায়ের লোকজনের। তাদের স্বপ্ন শুধু এ কর্ম করে একমুঠো অন্ন যোগানো আর ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসারের ভরন পোষন করা। তাদের নেই কোন নিজস্ব কোন সহায় সম্পত্তি। ঝড় তুফান ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ যতই আসুক না কেন ওদের বিরুদ্ধে লড়াই করেই বেচেঁ থাকার জন্য তাদের জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হয়। কিন্তু তারাও এদেশের নাগরিক।

    নবীগঞ্জের শিবগঞ্জ সংলগ্ন একটি স্থানে বহর তৈরী করে কয়েক বছর ধরে বসবাস করে আসছেন বেদে জনগোষ্টির লোকজন। তাদের দুঃখ দূর্দশার খবরে গত মঙ্গলবার রাতে ছুটে যান ইউএনও তাজিনা সারোয়ার। প্রতি বহরে গিয়ে সবাইকে ঘুম থেকে তুলে তাদের হাতে কম্বল তুলে দেন তিনি। আর এতে তারা অনেক আনন্দিত হয়। এছাড়াও রসুলগঞ্জ বাজারের পাশে ও আউশকান্দি ইউনিয়নেরর মিঠাপুর এলাকায় হরিজন ও ঋষি সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে শতাধীক কম্বল বিতরন করেন তিনি। ইউএনও‘র এ উদ্যোগে বেশ সাড়া জাগিয়েছে।

    এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজিনা সারোয়ার বলেন, ‘‘উপজেলা প্রশাসন সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের গরিব মানুষরা তীব্র শীতের মধ্যে অনেক কষ্ট করছে, এমন খবরে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তা নিজের চোখে দেখে তাদের হাতে কম্বল দিয়েছি। তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে বিতরন করলে অনেক সমস্যা হয়। যাদের প্রয়োজন নেই তারাও অনেকই নিয়ে যায়।

    এজন্যই বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজের চোঁখে দেখে, সত্যিকারে যাদের প্রয়োজন, তাদেরকেই সরকারী কম্বল দিয়েছি।”