নড়াইলে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী হত্যার অপরাধে স্বামীর মৃত্যুদন্ড

0
239

নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইলে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী মুক্তা মনি বেগমকে হত্যার অভিযোগে স্বামী মোঃ লাভলু মীরকে মৃত্যুদন্ড ও ৫০হাজার টাকা জরিমানা এবং অপর ৪জন আসামীকে খালাস প্রদানের আদেশ দিয়েছেন নড়াইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সানা মোঃ মাহ্রুফ হোসাইন।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে বিচারক এ আদেশ দেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মোঃ লাভলু মীর জেলার লোহাগড়া থানার চরবকজুড়ি গ্রামের লায়েব আলী মীরের ছেলে। খালাস প্রাপ্তরা হলেন লায়েব আলী মীর, লাভলী বেগম, মামুন মীর ও মোসাঃ লিজা বেগম। রায় শোনার পর আসামী লাভলু মীর কাঠগড়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।
মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০০৭ সালে আসামী মোঃ লাভলু মীরের সাথে নিহত মুক্তা মনি বেগমের বিবাহ হয়। বিবাহের পর আসামী লাভলু মীরের ঔরষে ও নিহত মুক্তা মনির গর্ভে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। তার নাম মেহেরাব। এই পুত্রের জন্মের পর বিভিন্ন সময়ে আসামীরা নিহত মুক্তা মনি ও তার পরিবারের লোকজনের কাছে ২লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল।
বিগত ২০১২ সালের ২১মে বেলা ১২টার সময় লোহাগড়া থানার চরবকজুড়ি গ্রামে স্বামীর বসতবাড়িতে আসামীরা পরস্পর যোগে ও সহায়তায় ২লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে না পেয়ে ক্ষোভে বাদীর বোন মুক্তা মনি বেগমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং লাশ গুম করার জন্য মধুমতি নদীর পানিতে ফেলে দেয়।

আসামীরা কিছু সময় পর নাটক সাজিয়ে নিহত মুক্তা মনির লাশ পানি থেকে উঠিয়ে বাড়িতে এনে পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে জানায়।
বাদীসহ তার আত্মীয় স্বজনরা আসামীদের বাড়িতে গিয়ে দেখতে পায় যে, নিহত মুক্তা মনির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে এবং গলায় শ্বাসরোধ করে হত্যার চিহৃ দেখতে পায়।
এ ঘটনায় নিহতের বোন সালেহা সুলতানা বাদী হয়ে নিহতের স্বামী মোঃ লাভলু মীরসহ ৫জনকে আসামী করে ২০১২ সালের ৪জুন লোহাগড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা নিহতের স্বামী মোঃ লাভলু মীর এবং লায়েব আলী মীর, লাভলী বেগম, মামুন মীর ও মোসাঃ লিজা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আদালতে ৯জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহন শেষে আসামী মোঃ লাভলু মীরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদন্ড ও ৫০হাজার টাকা জরিমানা এবং অপর ৪জন আসামীকে খালাস প্রদানের আদেশ দেন বিচারক।