পাকিস্তানি ভূখণ্ডে হামলায় ৩০০ জন নিহতের দাবী ভারতের

    0
    239

    ভারতীয় যুদ্ধবিমান আজ নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানি ভূখণ্ডে বোমাবর্ষণ করেছে। আজ (মঙ্গলবার) ভোরে ভারতীয় বিমানবাহিনীর ১২টি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান পাকিস্তানি সন্ত্রাসী শিবির টার্গেট করে কমপক্ষে এক হাজার কেজি বোমাবর্ষণ করে। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বালাকোটে সবচেয়ে বড় জৈশ প্রশিক্ষণ শিবির ধ্বংস করেছে ভারত।

    আজ এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিজয় কেশব গোখলে বলেন , মঙ্গলবার ভোরে ভারতীয় বিমানবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে যে অভিযান চালিয়েছে তাতে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে ।

    পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘১৪ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের সন্ত্রাসী সংগঠন জৈশ-ই-মুহাম্মদ পুলওয়ামাতে সন্ত্রাসী হামলা চালালে আমাদের ৪০ জওয়ান নিহত হয়েছিল। এরআগে পাঠানকোটেও জৈশের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছিল। পাকিস্তান সবসময় তাদের দেশে এসব সংগঠনের উপস্থিতির কথা অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানকে কয়েকবার এ নিয়ে প্রমাণ দেয়া হলেও তারা সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পাকিস্তানের অবস্থান দেখে আমরা এ নিয়ে পদক্ষেপ নেয়ার কৌশল অবলম্বন করেছি। আজ সকালে বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক করা হয়েছে যাতে জৈশ কমান্ডারসহ অনেক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।

    ভারতের হামলা এদিকে, বিমান বাহিনীর ওই অভিযানকে ভারতের প্রধান বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালসহ অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন।

    অন্যদিকে, আজ ইসলামাবাদে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ভারত যা করেছে, তা আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণরেখার লঙ্ঘন। এতে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিপদাপন্ন। পাকিস্তানের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। এই ঘটনার জবাব দেয়ার সব রকমের অধিকার রয়েছে পাকিস্তানের। পাকিস্তান সেই জবাব দেবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

    এ হামলা সম্পর্কে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর জানান, ভারতীয় বিমানবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করেছে। তিনি আরো দাবি করেন, পাকিস্তানের পাল্টা প্রতিরোধের মুখে পড়ে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলি ফিরে যায়। তিনি জানিয়েছেন, মুজফফরাবাদ থেকে ভারতীয় বিমানগুলি প্রবেশ করে।

    তাঁর দাবি, পাকিস্তানের জবাবে বালাকোটে বোমা ফেলেই চলে যায় ভারতীয় বিমানগুলি।এ সময় ভারতের একটি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়েছে বলেও দাবি করেছেন মেজর জেনারেল আসিফ গাফুর। এই হামলায় বিশেষ ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি।

    ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৪০ মিনিট ধরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের আকাশে ছিল ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো। তবে ২১ মিনিট ধরে বোমাবর্ষণ চলেছে।

    চকোটিতে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে রাত ৩টা ৫৮ মিনিট থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত। মুজাফ্ফারাবাদে বোমাবর্ষণ চলে রাত ৩টা ৪৮ মিনিট থেকে ৩টে ৫৫ মিনিট পর্যন্ত। এই হামলায় ২০০ থেকে ৩০০ জন নিহত হয়েছে দাবি ভারতের।

    অন্যদিকে পাকিস্তান হতাহতের কথা স্বীকার করেনি। এছাড়া এমন ইস্যুতে জাপান সফর স্থগিত করেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি।

    তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, এএনআই, ডন, আনন্দবাজার, টাইমস অব ইন্ডিয়া,পার্সটুডে।