প্রধানমন্ত্রী বরাবর রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের স্মারকলিপি

    0
    204

    “রামেক হাসপাতালে ইন্টানী চিকিৎসকদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ, রোগী মৃত্যুরোধ, অব্যবস্থা রোধ, দুর্নীতি বন্ধ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা  নিশ্চিতসহ ১৩ দফা দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের স্মারকলিপি”

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৬ডিসেম্বরঃ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টানী চিকিৎসকদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ, ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুরোধ, চিকিৎসায় অব্যবস্থা রোধ, দুর্নীতি বন্ধ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

    মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি পেশ করা হয়। তবে জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) পারভেজ রায়হান স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। এর আগে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের নেতাকর্মীরা নগরীর কোর্ট শহীদ মিনার চত্ত্বরে জমায়েত হয়ে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এসময় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার নামে ইন্টানী চিকিৎসকদের তান্ডব, হাসপাতাল পরিচালনায় অবব্যবস্থাপনা, সকল দুর্নীতি অনিয়ম রোধ ও সু চিকিৎসা নিশ্চিতের দাবিতে স্লোগান দেয়া হয়। এতে নেতৃত্ব দেন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি লিয়াকত আলী ও সাধারণ সম্পাদক মো. জামাত খান।

    স্মারকলিপি প্রদান শেষে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, দালাল চক্রের কারণে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ভেঙ্গে পড়েছে। চিকিৎসার নামে ইন্টানী চিকিৎসকরা রোগীদের সঙ্গে চরম দুব্যবহার করছেন। সামান্য প্রতিবাদ করলে রোগীর স্বজনদের ওপর হামলা, নির্যাতন এমনকি পুলিশে সোপর্দ করার ঘটনাও ঘটেছে। এ নিয়ে রাজশাহীর মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

    জামাত খান বলেন, চিকিৎসকদের একটি গ্রুপ সিন্ডিকেট করে রামেক হাসপাতালে নানা অপকর্ম, দুর্ণীতি ও দালালের আখড়ায় পরিনত করেছেন। এসব বন্ধ না হলে খুব শিগগিরই রাজশাহীতে সু চিকিৎসা সেবার দাবিতে আন্দোলন সংগ্রাম গড় তোলা হবে।

    রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ তাদের স্মারকলিপিতে হাসপাতালের চিকিৎসার মান নিশ্চিতের দাবিতে ১৩ দফা অভিযোগ তুলে ধরেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, চিকিৎসকদের যেখানে সেখানে প্রাইভেট প্যাকটিসে মত্ত থাকা, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সহায়তায় রাজশাহীতে ব্যঙের ছাতারমতো গড়ে উঠেছে বেসরকারি  ক্লিনিক হাসপাতাল, ক্লিনিক, প্যাথলজি। আর সেখানে এসব চিকিৎসকরা মোট অংকের টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন।

    রামেক হাসপাতালের এনজিওগ্রাম মেশিন দির্ঘদিন ধরে কোনো কাজে আসছে না। হাসপাতালের চিকিৎমক সন্ত্রাসীরেদ গডফাদার রইসউদ্দিন ১৩ বছরের বেশী সময় ধরে এখানে চাকরির সুবাদে বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে।  ফলে রোগীদের পরীক্ষা নিরিক্ষার নামে কথায় কথায় তিনি এনজিও গ্রাম ও রোগীদের রিং পরানোর নামে চাপ প্রয়োগ করেন। সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে চিকিৎসার নামে অপচিৎিসা দিয়ে আসলেও ক্ষমতার কারণে তার বিরুদ্ধে কেনো ব্যবস্থা নেয়া হয়না।  ডা, রইসের ক্ষমতার উৎস কোথায় এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলে স্মারকলিপিতে আরো  উল্লেখ করা হয়, অঅগামী ২০ ডিসেম্বর তিনি  জাপানে যাবেন।ইতিমধ্যে আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে গেছেন  এর উৎস্য কোথায়। এগুলো খুজে বের করার দাবি জানানো হয়।

    এছাড়া স্মারকলিপিতে চিকিৎসার মান বৃদ্ধি, ওষুধ সরবরাহ, এ অ লের মানুষের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চিকিৎসা ফি রির্ধারন, ওষুধ চুরি রোধ, অবৈধ ক্লিনিক প্যাথলজি বন্ধ, কথিত ওষুধ কোম্পানিসমুহ অবিলম্বে বন্ধেরও জোর দাবি জানানো হয়। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রেজিষ্ট্রেশন বিহীন কোম্পানীর ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে লিখে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা বন্ধ করারও দাবি জানানো হয়েছে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কর্তব্যরত রেজিষ্টার, চিকিৎসক ও ওষুদের তালিকা টানানোর দাবিও জানানো হয়। হাসপাতালের অবকাঠামো সম্প্রসারণের দাবি জানানো হয় স্মারকলিপিতে।

    স্মারকলিপি প্রদানকালে অন্যদের মধ্যে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাংগাঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু, ভাষা সৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান, পবা উপজেলা জাপার সভাপতি আব্দুল মালেক, এ্যাডভোকেট অংকুর সেন, ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সভাপতি আলহাজ হারুনার রশিদ, রাজশাহী বেনেতি ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মহেষচন্দ্র, রাজশাহী চেম্বারের সাবেক পরিচালক এম. শরিফ, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সেলিনা বেগম, ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহীনা বেগম, নারী সাংবাদিক আফরোজা খাতুন হেলেন, জাতীয় আদিবাসী পরিসদের দফতর সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হেবম্ব্রন, যুবমৈত্রীর সহসভাপতি শাহীন শেখ,  জামিল হোসেন জনি প্রমুখ।

    স্মারকলিপির অনুলিপি স্বস্থ্যমন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় সাংসদ, স্বাস্থ অধিদফতরের মহাপরিচালক, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও রাজশাহী মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনারকেও প্রদান করা হয়।