ফলোআপঃজৈন্তাপুরের বাউরী টিলাবাসীর কান্না থামছে না

    0
    224

    কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মানব বন্ধনের কর্মসূচীর ডাক

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৭নভেম্বর,রেজওয়ান করিম সাব্বিরঃ সিলেটের জৈন্তাপুরে উচ্ছেদের নামে ৪৩টি পরিবারের নিঃস্ব করায় বাউরী টিলার বসবাসকারীদের কান্না এখনও থামছে না। রোধ বৃষ্টিতে ভিজে গাছ তলায় অবস্থান নিয়ে করে কোন দিন যাপন করছে ৪৩ পরিবারের নারী, শিশু বৃদ্ধারা। ভূমি বন্দোবস্ত ও ক্ষতিপুরনের দাবীতে এ সপ্তহে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মানব বন্ধনের কর্মসূচী পালনের ডাক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের।

    সরেজমিনে গত ৬ নভেম্বর রবিবার জৈন্তাপুর উপজেলা চারিকাটা ইউনিয়নের বাউরী টিলা ঘুরে দেখা যায় এম আহমদ টি এন্ড ল্যান্ড কোম্পানীর পেশী শক্তির জোরে উচ্ছেদ অভিযানের নামে বাউরী টিলা প্রায় ২৩ একর ভুমি দখণ করে। ফলে ৪৩টি ভূমিহীন পরিবারের সৃজিত ভিবিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ, সুপারী, লেবু বাগান, সব্জী বাগান সহ বাসতবাড়ী ধ্বংস সহ জ্বলীয়ে দেওয়া হয়। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারের সদস্য সলিমা বিবি, জায়দা বিবি, আব্দুছ ছামাদ, জামাল উদ্দিন সহ একাধিক ব্যক্তিরা প্রতিবেদক কে জানান- জৈন্তাপুর উপজেলার মধ্যে চারিকাটা ইউনিয়নের সরকারী খাস ভূমির পরিমান প্রায় ৬০ হতে ৭০ শতাংশ। স্বাধীনতার পূর্ব হইতে আমাদের পূর্ব পূরুষেরা এই জমি ও পাহাড়ী টিলা রকম ভূমিতে ফসল উৎপাদন করে বসবাস করে আসছে। এই জমি আমরা বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে প্রশাসনের কাছে আবেদন নিবেদন করে আসছি।

    কিন্তু প্রশাসন অজ্ঞাত কারনে আমরা ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্ত দিচ্ছে না। আমাদের জানা মতে সরকারী পতিত, টিলা, পাহাড় রকম খাস ভূমি সমুহ সাধারন নাগরিক বন্দোবস্ত নিতে আগ্রহী নন এসকল ভূমি বাগান তৈরীর জন্য বড় বড় কোম্পানীর কাছে স্বল্প করে ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। কিন্তু চারিকাটা ইউনিয়নের ভূমিহীন বাসিন্ধারা যুগের পর যুগ ভূমি বন্দোবস্তের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেও ভূমি বন্দোবন্ত পাচ্ছে না। ফলে আমরা ভূমিহীন পরিবার দীর্ঘ দিন হতে বাউরী টিলায় পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছি। সম্প্রতি আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রেভিনিউ কালেক্টর স্বাক্ষরীত স্মারকে নং-০৫.৪৬.৯১০০.০৮৮.৬৬.০১৯.১২-২০২৭(৫), তারিখ ১৬/০৬/১৬।

    অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা-১৯৯৫ এর সুনির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ উল্লেখ পূর্বক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রেরনের জন্য বলা হয়ছে। এদিকে এই তথ্য গোপন রেখে ভূল তথ্য উপস্থাপন করে গত ২৪ অক্টোবর উচ্ছেদ মামলা নং ২৬/২০১৫-১৬ (জৈন্তাপুর) বলে দক্ষিণ কামরাঙ্গী খেল মৌজার ৫৫ নং জেএল, ৫০ নং খতিয়ানের, ২৭১নং দাগের টিলা রকম ভূমিতে উচ্ছেদ অভিযানের নামেন প্রশাসন। কিন্তু ২৭১নং দাগ উচ্ছেদ সহ আমাদের আবেদীত এবং দখলীয় অপরাপর দাগ সমুহে পেশি শক্তির ব্যবহার করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটে, নির্বাহী কর্মকর্তার সম্মুখে আমাদের সৃজিত বাগান, বাড়ীঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ধ্বংস, অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে।

    অপরদিকে অভিযানের প্রাক্কালে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আমাদের আবেদনের বিষয়টি এবং ফসল ধ্বংস না করার জন্য অনুরোধ জানালেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বিষয়টি কর্মপাত করেন নাই। ফলে বাউরী টিলার ভূমিহীন ৪৩পরিবারের প্রায় ২কোটি টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এছাড়া ভূমি বন্দোবস্ত পাওয়া এবং এম.আহমদ টি ল্যান্ড কোম্পানী কর্তৃক তাদের ক্ষতিপুরনের দাবীতে ২/১দিনের মধ্যে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মানব বন্ধন পালন করবে। মনাব বন্ধন পালনের পর যদি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সাড়া না দেন তাহলে তারা রাজপথে শুয়ে আমরন অনশন কর্মসূচী পালন করবে বলে প্রতিবেদকে জানান।

    এবিষয়ে- ইউপি সদস্য হাজির আলী, মোঃ জালাল উদ্দিন, সমাজসেবী আলতাফ হোসেন বেলাল সহ একাধিক সমাজসেবীরা বলেন- ২৭১ নং দাগের অভিযানের এসে পেশি শক্তি প্রয়োগ করে ভূমিহীন ৪৩টি পরিবারের অপুরনীয় ক্ষতি সাধিত করা হয়েছে। প্রায় ১৫দিন যাবত  রোধ বৃষ্টি উপেক্ষা করে ৪৩টি ভূমিহীন, গৃহহীন পরিবারের সদস্যরা অন্যান্য গ্রামের মানুষের ভাঙ্গা কুটিরে অবস্থান নিয়ে আবার কেউবা গাছ তলায় অবস্থান নিয়ে দিন যাপন করছে। অভিলম্বে নিরিহ ভূমিহীন পরিবার গুলোর ক্ষতি পূরন সহ ভূমি বন্দোবস্ত দেওয়ার জোর দাবী জানান।

    এবিষয়ে চারিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ-আলম চৌধুরী তোফায়েল প্রতিবেদক কে জানান- আমি প্রশাসনের কাছে সীমানা চিহ্নিত করা এবং সৃজিত বাগান বাড়ী ধ্বংস না করে সরিয়ে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। বিন্তু পেশি শক্তির প্রভাবে এম.আহমদ টি ল্যান্ড কোম্পানী লালাখাল চা বাগানের লোকজন বাড়ী ঘর ধ্বংস করে তান্ডবলীলা চালায়। আমি এঘটনায় ভূমিহীন এবং বর্তমানে আশ্রয়হীন পরিবার গুলোর ক্ষতিপুরন প্রদানের জোর দাবী জানাচ্ছি। সেই সাথে পরিবার গুলোর জন্য পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস ব্যক্ত করছি। অন্য প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- যেহেতু উচ্ছেদের নামে তাদের অপুরনীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে তাই তারা শন্তিপূর্ণ মানব বন্ধন এবং আমরন অনশন পালন কর্মসূচী গ্রহন করতে পারে।