বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনী কূটনৈতিক নুর ৯৬সালের পর এই প্রকাশ্যে প্রথম!

0
152

আশ্রয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার কানাডায় গণমাধ্যম

কাওছার ইকবাল: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করেছে কানাডার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিবিসি। দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গবন্ধুর এই খুনি কানাডায় মুক্তভাবে জীবনযাপন করলেও প্রথমবারের মতো দেখা গেল ক্যামেরায়। তবে এমনি এক সময় এই সংবাদ প্রকাশ পেল যখন বাংলাদেশ সরকার প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সংবিধান অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরিপূর্ণ ব্যবস্থা করতে পেরে সাংবিধানিক সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ইতিহাস তৈরি করেছেন অপরদিকে আসন্ন নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় আসতে হলে কিছু চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে আর এই চ্যালেঞ্জ ঘরের মধ্যেই নূর হোসেনের মত অপরাধীদের বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য আইনি প্রক্রিয়া ও বিভিন্ন শর্ত উপ শর্ত সংক্রান্ত বিষয়ে পালন একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।

কানাডিয়ান ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়,টরন্টো থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরের ইটোবিকো এলাকায় বর্তমানে বসবাস করছেন তিনি। সেখানে একটি কনডোমিনিয়ামের তিনতলায় থাকেন ৭০ বছর বয়সি নূর চৌধুরী। প্রতিদিনই বিকেলে ব্যালকনিতে আসেন ফুলের পরিচর্যা করতে।

টেলিভিশনটির অনুসন্ধানী বিভাগ ‘দ্য ফিফথ স্টেট’ এ ‘দ্য অ্যাসাসিন নেক্সট ডোর’ শিরোনামের ৪২ মিনিটের এই প্রতিবেদনটি প্রচারিত হয় বাংলাদেশ সময় (১৭ নভেম্বর) শুক্রবার মধ্যরাতে।

প্রতিবেদনে টরন্টোর নিজ ফ্লাটের ব্যালকনিতে নূর চৌধুরীকে দেখানো হয়। গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় নূর চৌধুরীকে ড্রাইভিং সিটে বসে থাকা অবস্থায় দেখা যায়। কিন্তু প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা না বলে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে চলে যান তিনি। দীর্ঘদিন অনুসরণ করে তাকে খুঁজে বের করেছে ফিফথ স্টেটের অনুসন্ধানী দলটি।

প্রতিবেদনে নূর চৌধুরীর কানাডায় পালিয়ে যাওয়া, ২৭ বছর সেখানে থেকে যাওয়া এবং খুনের অভিযোগে হওয়া শাস্তি বাস্তবায়নে তাকে বাংলাদেশের ফেরত চাওয়ার বিষয়গুলো উঠে এসেছে।
কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, এই একটি ইস্যু বাদে কানাডার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। কেবল বাংলাদেশি হাইকমিশনার হিসেবে নয়, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ হিসেবে নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত চান তিনি।

বঙ্গবন্ধুকে গুলি করে হত্যার পর বিভিন্ন দেশে কূটনীতিকের চাকরি করেন নূর। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে হংকং থেকে পালিয়ে কানাডায় চলে যান। ২০০৬ সালে শরণার্থী আবেদন নাকচ করে নূরকে দেশত্যাগের নির্দেশ দেয় কানাডা। কিন্তু দেশে ফিরলে মৃত্যুদণ্ড হবে জানিয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়নের একটি আবেদন করেন তিনি। আর এভাবেই কানাডার মৃত্যুদণ্ডবিরোধী নীতি-অবস্থানের সুযোগ কাজে লাগান নূর।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্য ঠান্ডা মাথায় বঙ্গবন্ধুকে তার নিজ বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করে।

হত্যাকাণ্ডের পরপরই খুনিরা দেশ থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে পরবর্তীতে তাদের কয়েকজনকে বিচারের আওতায় এনে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। এখনও পাঁচজন বাকি আছে। তারা হলেন: আব্দুর রশীদ, শরীফুল হক ডালিম, মোসলেম উদ্দিন, রাশেদ চৌধুরী ও নূর চৌধুরী।