বঙ্গোপসাগরে দুষণ বাড়ছে,পদ্মা থেকে ৩০০ ধরনের পণ্য সাগরে

    0
    274

    বঙ্গোপসাগরে দুষণ বাড়ছে। পদ্মা নদী থেকে ৩০০ ধরনের প্লাস্টিক পণ্য সাগরে পড়ছে। এই বর্জ্যের উৎস গঙ্গা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার দেশ চীন, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ।

    বঙ্গোপসাগরে যুক্ত হওয়া বর্জ্যের মধ্যে কোমল পানীয়ের বোতল থেকে শুরু করে থালা, কসমেটিকসের মোড়ক ও নিত্যব্যবহার্য নানা জিনিসপত্র রয়েছে। ব্যবহার করার পর যত্রতত্র ফেলা দেয়া এসব বর্জ্য বিভিন্ন জলাশয়, নদী নালা ঘুরে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ছে।

    পরিবেশবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। অক্টোবর মাসের শেষের দিকে ‘উৎস থেকে সাগরে’ শীর্ষক ওই গবেষণায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারী বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা অংশ নেন।

    জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সংস্থা ইউএনইপি গত বছরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন প্রায় ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়ছে। পরিমাণের দিক থেকে এটি বিশ্বে পঞ্চম। চীন, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে এই বর্জ্য মিশছে বঙ্গোপসাগরে।

    বাংলাদেশে এককভাবে দিনে তিন হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়। এর মাত্র কিছু অংশ নদী দিয়ে সাগরে যায়। বেশিরভাগ বর্জ্য ভারত, নেপাল ও চীন থেকে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র দিয়ে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সাগরে পড়ছে। এতে বাংলাদেশের বিভিন্ন নদ-নদী এবং ভূভাগকে মারাত্মকভাবে দূষিত করছে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি হচ্ছে।

    এ প্রসঙ্গে পরিবেশ বাচাও আন্দোলন (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, উন্নত বিশ্বে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার বেশি। রিসাইকেলের ব্যবস্থা থাকার পরও দুষণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। পানি ও মাটিতে মিশে জীবন ও প্রকৃতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। নদী ও সাগরে নৌযান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মাছসহ বিভিন্ন প্রাণীর খাদ্যচক্র বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্লাস্টিকে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে জলজ প্রাণী। তাই পরিস্থিতি উত্তরণে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার সর্বনিম্ন পর্যায়ে আনতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিকল্পনা নিতে হবে।

    ইউএনইপির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতিদিন তিন কোটি টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদিত হয়। এর ৮০ লাখ টন প্রধান ১০টি নদী অববাহিকা দিয়ে সাগরে গিয়ে পড়ছে। এই ১০ নদীর আটটিরই উৎসস্থল চীন। আর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর ন্যাচারের (ডব্লিউব্লিউএফ) এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে প্রতি মিনিটে ৩৩ হাজার ৮০০টি প্লাস্টিকের বোতল এবং ব্যাগ সাগরে গিয়ে পড়ছে। বছরে যার পরিমাণ ৮০ লাখ টন। ২০৫০ সাল নাগাদ বছরে ১ লাখ ৩০ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য সাগরে মিশবে।পার্সটুডে