বুড়ো লন্ডনী বিয়ে করে উধাও! চুক্তির টাকার জন্য ঘটক আটক!

    0
    255

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,১৬অক্টোবর,মতিউর রহমান মুন্নাঃ নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর পাহাড়ী অ লে অর্থের লোভে কম বয়সী মেয়ে’কে এক বুড়ো লন্ডনীর নিকট মোবাইল ফোনে বিয়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে আলোচনার ঝড় বইছে। কিন্তু এর রেশ কাটতে না কাটতেই লন্ডনী বুড়ো বর গত মঙ্গলবার গভীর রাতে কনের বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় নতুন করে আবার তোলপাড় শুরু হয়েছে। লন্ডনী বর পালিয়ে যাওয়ায় বিয়ের চুক্তির টাকার জন্য স্থানীয় বিয়ের ঘটক তাজুদ মিয়া (৩৫)কে নিজ বাড়িতে ১২ ঘন্টা আটক রেখে অবশেষে পুলিশের হাতে তোলে দিলেন মেয়ের বাবা আকবর আলী পাখি মিয়া। পুলিশ তাজুদ মিয়াকে ৫৪ ধারায় কোর্ট হাজতে প্রেরন করেছে।

    এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তারা নিরাপরাধ ঘটক তাজুদ মিয়াকে অব্যাহত দেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।

    স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের শতক মালিটিলা গ্রামের মৃত মনাই মিয়ার ছেলে তাজুদ মিয়া দীর্ঘদিন ধরে জীবন জীবিকার তাগিদে বিয়ের ঘটক হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। সেই সুবাধে সিলেটের বিশ্বনাথ থানার লন্ডন প্রবাসী আব্দুল আজিজ ( ৬৫) এর সাথে পরিচয় হয়। উক্ত বিয়ে পাগল লন্ডনী সুন্দরী কম বয়সী মেয়ে খোজাঁর জন্য ঘটক তাজুদ মিয়াকে নিয়োজিত করে। ফলে তাজুদ মিয়া শতক গ্রামের তার প্রতিবেশী আকবর আলী পাখি’র সুন্দরী মেয়ে তান্নি আক্তারের জন্য লন্ডনী পাত্রের নিকট বিয়ের প্রস্তাব দেন। উক্ত প্রস্তাবে সায় দেন মেয়ের বাবা। বিনিময়ে ২ লাখ টাকা দাবী করেন।

    এতে রাজি হয় লন্ডনী আব্দুল আজিজ। শর্ত মোতাবেক প্রায় দেড় মাস আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিয়ে হয় মেয়ে তান্নি আক্তারের। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গ্রামবাসী। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

    এরইমধ্যে বুড়ো লন্ডনী দেশে আসলে নতুন শশুড়ালয়ে যাওয়া আসা শুরু করেন। প্রতিনিয়তই কনের বাড়িতে বর যাওয়া আসা করতেন এবং রাত্রী যাপন করতেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। শর্তের টাকার মধ্যে ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেন লন্ডনী বর।  বাকী ১ লাখ ৩০ হাজার পরে দেয়ার কথা থাকে। এছাড়া প্রায় ১৫ দিন আগে আকবর আলী পাখি তার বড় মেয়ের জামাতাকে দিয়ে উক্ত লন্ডনীর সাথে ছোট মেয়ের বিয়ের কাবিন রেজিষ্ট্রী করানোর  জন্য স্থানীয় কাজী রৌশন আলীকে তার ডেকে আনেন।

    কাজী এসে মেয়ের জন্ম সনদ দেখে মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় কাবিন রেজিষ্ট্রী না করে ফিরে যান। এই সুযোগ কাজে লাগায় বিয়ে পাগল লন্ডনী। সে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে ঘটক তাজুদ মিয়াকে সাথে নিয়ে শশুড় আকবর আলীর বাড়ি গিয়ে উঠে। রাতের খাওয়া ধাওয়া শেষে লন্ডনী বর কে রেখে ঘটক তাজুদ তার বাড়িতে চলে আসে। সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে লন্ডনী আব্দুল আজিজ কনে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। ফলে মেয়ের বাবা আকবর আলীর মাথায় হাত পরে।

    একদিকে মেয়ের সর্বনাষ! অন্য দিকে শর্তের বাকী ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এই দু’ কারনে মেয়ের বাবা আকবর আলী গত বুধবার ভোর বেলা ৫ টার দিকে ঘটক তাজুদ মিয়াকে খবর দিয়ে তার বাড়ি নিয়ে আটক করে রাখেন। ঘটকালীর ফ্রি এর পরিবর্তে ঘটক তাজুদ মিয়ার স্থান হয়েছে হাজতে।

    এ ব্যাপারে তাজুদ মিয়া বলেন, আমি ঘটক মানুষ, পেটের দায়ে ঘটকালী করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করি। অর্থের লোভে আকবর আলী লন্ডনী আব্দুল আজিজের সাথে তার মেয়ের বিয়ে দিতে সম্মত হয়। এক পর্যায়ে গ্রামের লোকজনের বাধার কারনে বিয়ে ভন্ডুল হলে গোপনে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিয়ে হয়। লন্ডনী বর দেশে আসার পর কাবিন করার কথা থাকলেও কাজি সাহেব মেয়ের বয়স কম হওয়ায় কাবিন রেজিষ্ট্রী করেননি। কিন্তু লন্ডনী তাদের বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। মঙ্গলবার তাজুদ মিয়ার ঘটকালীর ফ্রি দেয়ার কথা বলে লন্ডনী কনের বাড়িতে নিয়ে যায়। কিন্তু ঘটকের অজান্তে সে পালিয়ে যায়।

    পরে মেয়ের বাবা আকবর আলী পাখি পাশের বাড়ির ঘটক তাজুদ মিয়াকে ডেকে নিয়ে বাড়িতে আটক করে। পরে সন্ধ্যায় থানায় খবর দিলে গোপলার বাজার পুলিশ ফাড়িঁর এস আই আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সতত্য পেয়ে উক্ত ঘটককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন এবং পরের ৫৪ ধারায় আদালতে প্রেরন করেছেন।