মজুরি বোর্ডের সুপারিশ সংগতিপূর্ণ নয়ঃশ্রমিকদের বিক্ষোভ

    0
    341

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,অক্টোবরঃ হোটেল সেক্টরে নিম্নতম মজুরি বোর্ড সম্প্রতি যে মজুরি কাঠামোর সুপারিশ পেশ করেছে তা বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ না হওয়ায় বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশন দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি পালন করে। এর অংশ হিসেবে মৌলভীবাজার জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিঃ নং চট্টঃ২৩০৫-এর উদ্যোগে ৪ অক্টোরব সন্ধ্যায় শহরের চৌমুহনা এলাকার কার্যালয় হতে এক বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। ‘মজুরি বোর্ডের বোর্ডের ঘোষণা, হোটেল শ্রমিক মানে না’ ; ‘মজুরি বোর্ডের বোর্ডের ঘোষণা, বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ না’ ; ‘১০ হাজার টাকা মূল মজুরি, ঘোষণা কর, করতে হবে’  শ্লোগানে মুখরিত বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কুসুমবাগ এলাকায় গিয়ে সমাপ্ত হয়। পরে কুসুমবাগ পয়েন্টে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্টিত হয়।

    জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মীর মোঃ জসিমউদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি শহীদ সাগ্নিক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস। সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আব্দুল আজিজ প্রধান, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহিন মিয়া, কোষাধ্যক্ষ তারেশ বিশ্বাস সুমন, প্রচার সম্পাদক তাজুল ইসলাম প্রমূখ। সমাবেশে বক্তারা মজুরি বোর্ডের ভূমিকাকে ‘চাতুরতা ও প্রতরণাপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে বলেন প্রথমে মজুরি বোর্ডে হোটেল সেক্টরের স্বীকৃত সংগঠনের দাবিকে উপেক্ষা করে সংশ্লিষ্ট শিল্পের শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিল্পের সাথে সম্পর্কহীন দুজন ব্যক্তিকে নির্বাচন করে তারা যেমন অযোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন, তেমনি ন্যায্য মজুরি থেকে শ্রমিকদের বি ত করার দিকটিও সামনে ছিল।

    ৩১ আগষ্ট ২০১৬ মজুরি বোর্ড হোটেল সেক্টরের শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি হারের খসড়া সুপারিশ ঘোষণা করেন, নিয়ম অনুযায়ী ১৪ দিনের মধ্যে এই খসড়া সুপারিশের প্রেক্ষিতে শ্রমিকদের মতামত বা প্রত্যাখান করার সুযোগ থাকে। ৩১ আগষ্ট ২০১৬ মজুরি বোর্ড হোটেল সেক্টরের শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি হারের খসড়া সুপারিশ ঘোষণা করলেও সরকারের বিজি প্রেস ৮ সেপ্টেম্বর তাদের ওয়েব সাইটে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করেন।

    কিন্তু ঈদুল আজহার ঠিক পূর্ব মুহুর্তে এই গেজেট প্রকাশ করায় এবং ৯ সেপ্টেম্বর হতে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি অফিস বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা আইনগতভাবে তাদের মতামত জানানোর সুযোগ থেকে বি ত হয়েছেন। ইতিপূর্বে (২০০৯ সালে গেজেটে) শ্রমিকদের অর্জিত অধিকার মূল মজুরির সম হারে দুটি উৎসব বোনাস, ৮ ঘন্টার অতিরিক্ত কাজে অধিককাল ভাতা ও গ্রাচুইটি, জেলা ও উপজেলার সুস্পষ্ট ঘোষণা থাকলেও মজুরি বোর্ড যে সুপারিশ পেশ করেছে তাতে নেই। মজুরি বোর্ড একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন সর্বমোট মাসিক মজুরি ৩২০০ টাকার সুপারিশ করেছে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির বাজারে পরিবার পরিজন নিয়ে একজন শ্রমিক এই মজুরিতে কিভাবে চলবে? মজুরি বোর্ডের এই চাতুরতা ও প্রতারণার কারণ কি? বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট সুইটমিট শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাত করে লিখিত প্রস্তাবনা পেশ করেছেন।

    এছাড়া সরকারি অফিস খোলার সাথে সাথেই মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল, সিলেটসহ সারাদেশ থেকে শ্রমিকরা তাদের ইউনিয়নের মাধ্যমে মজুরি বোর্ডের কাছে প্রস্তাবনা পেশ করেছে। কিন্তু মজুরি বোর্ড শ্রমিকদের প্রস্তাবনা/সুপারিশ বিবেচনায় না নিয়ে তাদের সুপারিশকৃত মজুরি চুড়ান্ত করে গেজেট আকারে প্রকাশের তৎপরতা চালাচ্ছেন। সমাবেশ থেকে বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণ নিম্নতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা ঘোষণা করার দাবি জানানো হয়, অন্যথায় সারাদেশের হোটেল শ্রমিকরা কঠিন পালন করতে বাধ্য হবেন।