মহাজোটের প্রার্থী শাহাব উদ্দিন ঐক্যফ্রন্টের কে ?

    0
    262

    “মৌলভীবাজার-১ (জুড়ী-বড়লেখা) আসনে মহাজোটের একমাত্র প্রার্থী আলহাজ মোঃ শাহাব উদ্দিন এর সাথে লড়ছেন কে ? এবাদুর রহমান চৌধূরী না নাসির উদ্দিন মিঠু”

     

    এমএম সামছুল ইসলাম, জুড়ী,মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজার-১ (জুড়ী-বড়লেখা) আসনটিতে মহাজোটের একমাত্র প্রার্থী জাতীয় সংসদের হুইপ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি, বড়লেখা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও গত তিন বারের নির্বাচিত এমপি হুইপ আলহাজ মোঃ শাহাব উদ্দিন। তার বিপরীতে কোন বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। গত ১০ বছরে এবং ৯৬’র সংসদে নির্বাচিত হয়ে তিনি তার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে যথেষ্ট কাজ করেছেন। এলাকার বিদ্যুতায়ন, রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্টসহ অনেক অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিল্ডিং নির্মাণ করেছেন।

    তাছাড়া দীর্ঘদিন পতিত থাকা কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেল লাইনটি সংস্কার করে ভারতের উত্তর-পূর্ব ৭টি রাজ্যের সাথে ট্রান্স এশিয়ান রেল যোগাযোগ স্থাপনে তার রয়েছে অন্যতম ভূমিকা। নির্বাচনী এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে শাহাব উদ্দিন প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছেন। দু’উপজেলায় বেশ ক’টি স্কুল ও ২টি কলেজকে সরকারিকরণ ছাড়াও কয়েকটি মাদরাসাকে এমপিও ভুক্তি করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বরাদ্দ এনে দিয়েছেন।

    পল্লীর দরিদ্র মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে সরকারের গৃহীত প্রকল্পের বরাদ্দ পৌছে দিয়েছেন তার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে। এলাকার কোন মানুষ কোনদিন তার কাছে কোন সমস্যা নিয়ে হাজির হয়ে খালি হাতে ফিরে এসেছেন এমন নজির নেই। দু’টি উপজেলার দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য তিনি কাজ করেছেন। এমন হেভিওয়েট প্রার্থীর সাথে ভোটের লড়াই করতে বিরোধী জোট থেকে চিন্তা ভাবনা করে প্রার্থী দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য সাধারণ ভোটারদের। অপরদিকে শুনা যায়, বিরোধী জোট থেকে মনোনয়নপত্র কিনেছেন অনেকেই।

    তন্মধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবাদুর রহমান চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি তরুন শিল্পপতি আলহাজ নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু, বড়লেখা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান, জুড়ী উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আসাদ উদ্দিন বটল, বড়লেখা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাপান প্রবাসী দারাদ আহমদ, কাতার প্রবাসী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শরীফুল হক সাজু, বড়লেখা উপজেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি আব্দুল হাফিজ, কাতার প্রবাসী লোকমান হোসেন, বড়লেখা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস শহীদ খান, জেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও বড়লেখা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা আক্তার হাসনা, যুবদল নেতা হাজী সেলিম, জেলা যুবদল নেতা ও বড়লেখা পৌরসভার কাউন্সিলর আব্দুল হাফিজ (ললন)।

    তবে শেষ পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তে এসব প্রার্থীরা বসে পড়বেন বলে ধারনা করা যাচ্ছে। অপরদিকে ২০ দলীয় জোটের শরীক জামায়াত তাদের প্রার্থী সাবেক কেন্দ্রীয় শিবির নেতা বর্তমান ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমীর কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য মোঃ আমিনুল ইসলামের পক্ষে এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। জামায়াতের সাফ কথা জোট থেকে যে সিদ্ধান্ত হবে তা মেনে নিবে স্থানীয় জামায়াত। তবে বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে জামায়াতকে সবসময় নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠুর পাশে দেখা গেছে। বিগত সময়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কারামুক্তি ও কেন্দ্র ঘোষিত প্রতিটি কর্মসূচীতে দু’উপজেলায় দলের নেতা কর্মীদের উজ্জীবিত করে রাজপথে সরব রেখেছেন নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু। এজন্য তিনি ও তার অনুসারীরা একাধিক রাজনৈতিক হয়রানীমূলক মামলায় পড়ে জেল খেটেছেন। এসব মামলায় এখনো নিয়মিত হাজিরা দিতে হয় তাদেরকে।

    এ আসনে একাধিক চা-বাগানের মালিক নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠুর সাথে চা-শ্রমিকদেরও গভীর সখ্যতা রয়েছে। তাছাড়া বিগত দিনে বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রান সহায়তার অনুষ্ঠানগুলোতে জুড়ী বড়লেখায় মির্জা আব্বাসের নের্তৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা সফর করেছেন। এ সময় তৃণমূলের মানুষ কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশে আলহাজ নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠুকে দেখতে পেয়েছেন।

    এ জন্য মনোনয়ন প্রাপ্তির দৌড়ে এখন পর্যন্ত আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন তিনি। অপরদিকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট এবাদুর রহমান চৌধুরী কেন্দ্রে লবিং করছেন জামায়াতসহ জোটের শরীক দলগুলোর সাথে। গ্রীন সিগন্যাল পেলে তিনি মনোনয়ন প্রাপ্তিতে জোড় প্রচেষ্টা চালাবেন এবং এ আসনটিতে নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ন হয়ে ইতিপূর্বে যে উন্নয়ন করেছেন সে উন্নয়নকে পুঁজি করে শেষ বয়সে মানুষের সেবা করার উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যেতে চান প্রবীন আইনজীবী এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ।

    এখন প্রশ্ন হচ্ছে মহাজোটের একক হেভিওয়েট প্রার্থী আলহাজ শাহাব উদ্দিনের সাথে লড়ছেন কে ? এবাদুর রহমান চৌধূরী না নাসির উদ্দিন আহমেদ মিঠু। এ নিয়ে এলাকায় জোর গুঞ্জন অব্যাহত রয়েছে। তবে ঐক্যফ্রন্ট থেকে বের হয়ে কেহ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তা তাদের জন্যই কাল হয়ে দাড়াবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।