মাদক-জুয়াসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রনে জৈন্তাপুরে কিছুটা সাফল্য

    0
    204

    পেলেও লাগমহীন চোরাচালান,৫ মাসে গ্রেফতার ২৩৯, মামলা হয়েছে ১৩০ টি।

    রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর সিলেট প্রতিনিধি:  সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা জৈন্তাপুর বিগত অন্তত পাঁচ মাসে উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও লাগমহীন ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে ভারতীয় চোরাচালান।
    আগস্ট মাসে জৈন্তাপুর মডেল থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসাবে শ্যামল বনিক যোগদানের পর জৈন্তাপুরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলার প্রতিটি ছোট বড় হাটবাজারে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদক বিরোধী জনসচেতনা বৃদ্ধিতে প্রচারাভিযান করেন অতীতের চেয়ে ৫মাসে উপজেলায় মাদ, জুয়া ভারতীয় তীর খেলা, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং সহ ইত্যাদি অপরাধ কিছুটা নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসেন।

    সেক্ষেত্রে উপজেলার বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকান্ড কিছুটা হলেও সাফল্য আসে। সম্প্রতি সময়ে সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন সীমান্তে অবস্থান হওয়ার কারনে ব্যাপক হারে ভারতীয় চোরাচালান ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে গরু, মহিষ, বিদেশী মদ, ইয়াবা সহ নানা নিষিদ্ধ পন্য সামগ্রী অবৈধ পথে প্রতিদিন রাতে বাংলাদেশ প্রবেশ করছে। চোরাচালান ব্যবসা দেখে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করেন সীমান্ত সু-রক্ষা বাহিনী বিজিবি এবং স্থানীয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে বাহিরে চলে গেছে।

    তবে অফিসার ইনচার্জ হিসাবে শ্যামল বনিক যোগদান করার পর উপজেলার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে স্বীকার করেন। জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামল বনিক দায়িত্ব গ্রহনের পর সার্বক্ষনিক অপরাধ নিয়ন্ত্রনের জন্য “টিম জৈন্তাপুর” অভিযানিক দল প্রস্তুত রাখেন। মাদক, জুয়া ও ভারতীয় তীর খেলার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখেন। মদ ও জুয়া খেলার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকায় তরুন বয়সী অনেক মাদকসেবী সর্তক হয়ে আড়ালে চলে যান। ইতোমধ্যে মাদক, জুয়া খেলার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে অনেকেই পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন এবং উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমানে মদ, ইয়াবা, ফেন্সীডিল, গাজা সহ নেশা জাতীয় দ্রব্যদি।
    অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট থানা সূত্রে জানাযায়, চলিত বছরের বিগত পাঁচ মাসে থানায় বিভিন্ন ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে ১৩০টি। গ্রেফতার করা হয়েছে ২৩৯ জন ব্যক্তিকে। চলিত বছরের আগস্ট মাসে বিভিন্ন অপরাধে অন্তত ৬৩জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয় ২৬টি এবং উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া তিন লক্ষ, দশ হাজার টাকা।

    সেপ্টেম্বর মাসে জুয়াড়ী, মাদক, চোরাচালান সহ ৭৬জন ব্যক্তি গ্রেফতার করা হয় এবং মামলা রুজু করা হয়েছে ২৮টি। অক্টোবর মাসে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪০জন ব্যক্তিকে এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে ২৩টি, উদ্ধার করা হয়েছে ২টি বিদেশী রিভলভার। নভেম্বর মাসে মাদক মামলা, শিশু নির্যাতন, চোরাচালান কাজে জড়িত থাকায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৬জন ব্যক্তিকে, মামলা দায়ের করা হয় ২৯টি। ডিসেম্বর মাসে গ্রেফতার করা হয়েছে ২৪জন ব্যক্তিকে। মামলা রুজি করা হয়েছে ২৪টি এবং উদ্ধার করা হয়েছে একটি গাড়ি, ৯লক্ষ ৭৫হাজার পিস নাসির বিড়ি, ৪২বোতল বিদেশী মদ।
    জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামল বনিক বলেন, দায়িত্ব গ্রহনের পর টিম জৈন্তাপুর কে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে সামাজিক গণসচেতনা বৃদ্ধি করতে প্রচার-প্রচারণা পাশাপাশি অভিযান করে অসামাজিক কাজে জড়িত ব্যক্তিদের সর্তক করেছিলাম। ইতোমধ্যে মদ, জুয়া ও ভারতীয় তীর খেলা, শিশু নির্যাতন, অপহরণ, ইভটিজিং ছিনতাই ঘটনা সহ অসামাজিক কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ করতে প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ এলাকার গন্যমান নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় কিছুটা হলে টিম জৈন্তাপুর উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করেছে।

    এই পর্যন্ত বিগত পাঁচ মাসে আমাদের কতটুকু সফলতা অর্জন হয়েছে স্থানীয় জনগন তার মূল্যায়ন করবে। ইতোমধ্যে ২৩৯ জন ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে এবং ১৩০টি মামলা রুজু করা হয়। টিম জৈন্তাপুরের সকল সদস্য উপজেলা কে মাদক ও জুয়া খেলা এবং অপরাধ মুক্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি টিম জৈন্তাপুর থানার সকল কর্মকর্তাগণের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মাদক ও অপরাধ মুক্ত উপজেলা গঠনে সচেতন মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।