মান্না কোথায় ? গ্রেপ্তার না পলাতক ? সরকারকেই খুঁজতে হবে

    0
    233

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৫ফেব্রুয়ারীঃ মঙ্গলবার দিনভর টক অব দ্যা কান্ট্রি ছিল নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক সুশীল নামে অতি পরিচিত নাম মাহমুদুর রহমান মান্না কোথায় ? সোমবার বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা এবং এক অজ্ঞাত ব্যক্তির সাথে তার ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি সারাদেশে ব্যাপকভাবে আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে। এর পর গত গভীর রাত থেকে তার আর কোন হদিস নেই। একদিকে পরিবার বলছে- মান্নাকে তুলে নিয়ে গেছে সাদা পোষাকধারী গোয়েন্দা পুলিশ, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে- এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেনা। তার পর মান্নার পরিবারের জিডির সূত্র ধরে পুলিশ নেমেছে তদন্তে।

    পক্ষান্তরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার এবং দেশের সব চা’য়ের দোকানেও চলছে ব্যাপক তোলপাড়। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, ছাত্রলীগের হুমকির মুখে তিনি আত্মগোপন করেছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, জীবন বাঁচাতে নাটক সাজিয়ে, কৌশলে তিনি পালিয়ে গেছেন।কেহ বলেছেন যেহেতু ৩০ টি জিডি  তার নামে হয়েছে গ্রেপ্তার ও হতে পারে। যদিও আইন প্রয়োগ কারীরা তা অস্বীকার করছে।

    এছাড়া বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর ভাগ্য বরণ করেছেন বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়
    দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় সংলাপের একজন  উদ্যোক্তা মান্নার সাথে বিএনপির নেতা সাদেক হোসেন খোকা ও অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির কথোপকথনের অডিও ক্লিপ সোমবার গণমাধ্যমে  ফাঁস হয়ে পরে। এর ভিত্তিতে বিভিন্ন গণমাধ্যম একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ফোনে এ আলাপচারিতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ইউটিউবে প্রকাশিত এ অডিও টেপ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও চলছে তীব্র  ক্ষোভ ও ঘৃনা ও সামালোচনা।
    মান্নার স্ত্রী মেহের নিগার জানান, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বনানীতে মান্নার ভাতিজির বাসা থেকে তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকধারী পুলিশ। এ সময় তারা কোনো পরোয়ানা দেখায়নি। তবে আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার ও ডিএমপির মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, মান্নাকে আটক বা গ্রেপ্তার করার কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। পরিবারের অভিযোগের বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন। কিন্তু আজ রাত ৮টার পরও এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
    জানা যায়, আজ দুপুরে মান্নার ভাই মোবায়েদুর রহমানের স্ত্রী সুলতানা বনানী থানায় জিডি করেন। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, গতকাল রাত ৩টার দিকে ডিবি পরিচয় দিয়ে ৪ থেকে ৫জন ব্যক্তি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যান। পরিবারের সদস্যরাও এখন পর্যন্ত মান্নার কোনো খোঁজ পাননি বা তার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগও হয়নি। মান্নার স্ত্রী মেহের নিগার সন্ধ্যায় বলেন, থানা থেকে তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। তারা সন্ধ্যায় থানায় খবর নিয়েছেন, কিন্তু পুলিশ কিছু জানাতে পারেনি। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে  পুলিশের  একটি সূত্র বলেন, যেহেতু পরিবারের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে, সেহেতু তাকে খুঁজে বের করা আমাদের দায়িত্ব। সে অনুযায়ী আমাদের কাজ চলছে।
    দীর্ঘ ২০ ঘণ্টায় মান্নার অবস্থান সম্পর্কে কোনো কিছু নিশ্চিত না করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে। এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান বলেন, সরকারের অবশ্যই জানা উচিত মান্না কোথায়। না জানলে সেটিও বলা উচিত। কারণ জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। জানমালের নিরাপত্তা বিধান সরকারের কর্তব্য। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আরেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, মান্না তো বাচ্চা ছেলে না। যদি কেউ নিয়ে গিয়ে থাকে তবে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়েই তিনি তাদের সঙ্গে গেছেন। এখন খুঁজে বের করার দায়িত্ব সরকারের।  এভাবে ডিবি পরিচয়ে মানুষ তুলে নিয়ে যাওয়া বন্ধ করারও আহ্বান জানান তিনি।
    কিন্তু আসলে মাহমুদুর রহমান মান্না কোথায় আছেন, দীর্ঘ প্রায় ২০ ঘণ্টায়ও তা জানা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাকে আটকের কথা অস্বীকার করছে। পুলিশ-র‌্যাবের দাবি, মান্না কোথায় আছেন, তা তাদের জানা নেই। তবে পুলিশ বলছে, মান্নাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। আর র‌্যাব বলছে, নির্দেশনা পেলে তারা এ ব্যাপারে কাজ করবে। পক্ষান্তরে মান্নার অবস্থান না- জানা নিয়ে পুলিশের বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছে বিএনপি। এমতাবস্থায় সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য হচ্ছে, মান্না কোথায় আছেন, তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব সরকারেরই।